বিশ্ব রাজনীতিতে আমেরিকান ডলারের প্রভাব কী কমে যাচ্ছে? চীনের ইউয়ান কী তবে ডলার কে রিপ্লেস করে দেবে?
রাজেশ রায়:— বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা হচ্ছে আমেরিকান ডলার। বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ডলারে বিনময় হয়। গত আশি বছর ধরে আমেরিকান ডলার বিশ্বের প্রিমিয়াম কারেন্সি হিসাবে পরিচিত কারন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ হিসাবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ডলারই রাখে। ২০২১ এী তথ্য অনুযায়ী বিশ্বের ষাট শতাংশ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তাদের রিজার্ভ হিসাবে ডলার রেখেছে। এই ডলার আমেরিকাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ব্যাপাক জিও পলিটিক্যাল সুবিধা দেয়। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হবার পর থেকে বর্তমানে ডলারের উপর প্রভাব পড়েছে, ডলারকে চ্যালেঞ্জ সামলাতে হচ্ছে। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে ডলারের একছত্র রাজত্ব কমলে তার জায়গা কে নেবে! বিশ্বের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ডলারের বিকল্প কী হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড বা আইএমএফের দি স্টেলথ ইরোসেন অফ ডলার ডমিনেন্স রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে ডলারের বিকল্প হতে পারে চাইনিজ কারেন্সি ইউয়ান। কিন্তু প্রায় স্বৈরাতান্ত্রিক দেশ চীনের মুদ্রা কী সত্যিই ডলারের জায়গা নিতে পারবে?
প্রথমেই মনে হতে পারে বিশ্বকে ডি ডলারাইজড বা ডলারকে অপসারনের কথা কেন বলা হচ্ছে? এটা আমার কথা নয় বরং বিশ্বের প্রথম সারির অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য। আমেরিকার খুবই সফল বিনিয়োগকারী জিম রজার্স বলেছেন আমেরিকান ডলার কয়েক দশক ধরে বিশ্বে রাজত্ব করেছে কিন্তু এখন বিভিন্ন দেশে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে আমেরিকা নিজেই নিজের জন্য খারাপ করছে। যেভাবে চীন, রাশিয়া, ইরান ডলারের বিপীরতে নিজেদের কারেন্সি ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলোকে মজবুত করছে তাতে ভবিষ্যতে ডলারের প্রভাব কমবে। তথ্য অনুযায়ী ২০০০ সালে বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক গুলোতে ডলারের শেয়ার ৭১ শতাংশ ছিল কিন্তু তা এখন কমে ৫৯ শতাংশ হয়েছে। ২০২০ সালের চতুর্থ কোয়ার্টারে বৈদেশিক রিজার্ভের হিসাবে ডলারের মান বিগত ২৫ বছরের তুলনায় কম ছিল, বলা হচ্ছে এর জন্য দায়ী ইউরো ও ইউয়ান। আমেরিকার মাল্টি ন্যাশানাল ব্যাঙ্কিং ও অর্থনৈতিক বিনিয়োগ সংস্থান গোল্ডম্যান স্যাকের তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে ডলারের প্রভাব দ্রুত কমছে। বিংশ শতাব্দীতে ব্রিটেনের মুদ্রা পাউন্ডের যা হাল হয়েছিল ভবিষ্যতে হয়ত ডলারের অবস্থা তেমন হতে পারে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময়ে বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রন করত গ্রেট ব্রিটেন এবং তখন বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মুদ্রা ছিল পাউন্ড। কিন্তু বিংশ শতকে ব্রিটেনকে রিপ্লেস করে আমেরিকা এবং আমেরিকান ডলার বিশ্বের অর্থনীতির স্তম্ভ হয়ে ওঠে। বিগত ৪০ বছরে পাউন্ডের মান ক্রমশ কমছে। ১৯৯৭ সালে যেখানে ১ পাউন্ড = ২.৫ ডলার ছিল তা এখন ১ পাউন্ড = ১.৫ ডলারে এসে দাড়িয়েছে বর্তমানে আরও খারাপ অবস্থা এখন ডলারের নীচে চলে গেছে পাউন্ডের দাম। আজ ডলারের অবস্থাও এমন হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এর সবচেয়ে বড় কারন ডলারকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা।
সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার উপর আমেরিকা সহ পশ্চিমা বিশ্ব প্রচুর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যা প্রমান করে কোন দেশের মুদ্রার একাধিপত্য থাকলে কতটা ক্ষতিকর পরিস্থিতি হতে পারে। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারির ফলে ভারত সহ বিশ্বের বহু দেশই রাশিয়ার সাথে লেনদেনে সমস্যায় পড়েছে যার জন্য বিশ্বে জিও পলিটিক্যাল ও অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এই মহূর্তে আমেরিকা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অন্তত ৬০ টি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যা সর্বাধিক কোন দেশের পক্ষে। আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্ব যত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করবে তত বাকী দেশগুলো ডলারের বিকল্পে জোর দেবে কারন সবারই একটা ভয় আছে যে আমেরিকার কথা না শুনলে এর পরে হয়ত তাদের নাম আসবে। বিশ্বের কোন দেশই আজ ১০০ শতাংশ ডলারের উপর নির্ভরশীল হতে পারছে না কারন বিনিয়োগের একটি নিয়ম হচ্ছে কোন সংস্থায় পুরোপুরি বিনিয়োগ না করে বিভিন্ন সংস্থায় অল্প অল্প বিনিয়োগ করা কারন এতে ঝুঁকি কম থাকে। ডলারকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের আরও একটি বড় উদাহারন রাশিয়াকে সুইফট থেকে বের করে দেওয়া। গ্লোবাল ফাইন্যান্স সিস্টেম থেকে এভাবে রাশিয়াকে বের করে দেবার সবচেয়ে বড় কারন সুইফটের বেশীরভাগ লেনদেন ডলারের উপর নির্ভরশীল এবং আমেরিকার নিউইয়র্কের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক থেকেই সুইফটের মাধ্যমে লেনদেন হয় ফলে সুইফটকে নিয়ন্ত্রন করে আমেরিকাই। এর আগে ২০১২ সালে ইরানের পরমানু চুক্তিকে কেন্দ্র করেও আমেরিকা ইরানকে সুইফট থেকে বের করে দেয় ফলে ইরানের তেল বানিজ্যের অর্ধেক লভ্যাংশ এবং বৈদেশিক বানিজ্যের ৩০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ইরানের অর্থনীতি ভেঙে পড়ে।
সুইফট যখন তৈরি হয় তখন বলা হয়েছিল একে কোনদিন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যবহার করা হবে না কিন্তু সুইফটে ডলারের প্রাধান্য থাকার কারনে আজ সুইফট আমেরিকা নিয়ন্ত্রন করে। এর জন্য এর বিকল্প পদ্ধতির উপর রাশিয়া অনেকদিন ধরেই চীনের সাথে কাজ করা শুরু করেছে। রাশিয়া এর আগে ক্রিমিয়া দখলের পর তখন থেকে সুইফটের বিকল্প হিসাবে এসপিএফএস বা সিস্টেম ফর ট্রান্সফার অফ ফাইন্যান্সিয়াল মেসেজের উপর কাজ করা শুরু করেছে। ২০১৫ সালে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ইউয়ানকে আন্তর্জাতিক স্তরে শক্তিশালী করবার জন্য ক্রস বর্ডার ইন্টারব্যাঙ্ক পেমেন্ট সিস্টেম লঞ্চ করে যাতে আজ ৬৯০ টি ব্যাঙ্ক যুক্ত আছে। আমেরিকা একটি এমনই দেশ যারা বেশীরভাগ জিনিসই বাইরে থেকে কিনে আনে। ২৩ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির আমেরিকার জন্য তার নাগরিকদের জীবনযাপনের মানের উন্নতির জন্য আমেরিকা প্রচুর লোন নিচ্ছে। এই মহূর্তে আমেরিকার লোন প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন ডলার যা বিশ্বে কোনও দেশের পক্ষে সর্বাধিক। করোনা মহামারীর কারনে আমেরিকার অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর থেকে বাঁচার জন্য আমেরিকা মাত্রাতিরিক্ত ডলার ছাপে। আজ বাজারে মজুত থাকা মোট ডলারের অন্তত ৪০ শতাংশই ২০২১ সালে ছাপা। যে দেশ যত বেশী কারেন্সি ছাপায় তার উপর লোনও তত বেশী চাপে যা আজ আমেরিকার হয়েছে। আজ আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি সব সীমা অতিক্রম করে গেছে। মূল্যবৃদ্ধি যত বাড়বে তত সেই দেশের মুদ্রার মান কমবে এবং ব্যাঙ্কের সুদ বাড়বে। আজ আমেরিকা থেকে কোন দেশকে লোন নিতে হলে তাকে অনেক বেশী সুদ দিতে হবে। এর কারনে আমেরিকাতে অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছে।
আজ বিশ্বের অনেক দেশই ডলারের বিকল্প ব্যবহারের চেষ্টা করছে। যেমন ভারতের সবচেয়ে বড় সিমেন্ট কোম্পানি আল্ট্রাটেক আজ রাশিয়া থেকে ইউয়ানে কয়লা কিনছে। আল্ট্রাটেক রাশিয়ান কয়লা সংস্থা থেকে ১,৫৭,০০০ টন কয়লা কিনেছে ১৭২ মিলিয়ন ইউয়ানে। কারন রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় ডলারে লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে না। ভারতের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ সুভাসচন্দ্র গর্গ জানিয়েছেন যদি রুপি- রুবেল বা রুপি- ইউয়ান লেনদেন সফল হয় তাহলে ভবিষ্যতে ডলারের বীপরীতে এভাবেই লেনদেন হবে। প্রসঙ্গত রুবেল হচ্ছে রাশিয়ান কারেন্সি। ইউক্রেন সমস্যা শুরু হবার পর থেকে রুবেল ইউয়ানে লেনদেন ১০৬৭ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিছুদিন আগেই সৌদি আরব চীনের থেকে তেলের দাম ডলারের বদলে ইউয়ানে নিয়েছে, এটাই সেই সৌদি আরব যারা একটা সময় আমেরিকার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। যা প্রমান করে বিশ্ব রাজনীতি কত দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। চীন লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ান দেশ গুলোকোও ইউয়ানে বিনিময়ের কথা বলছে। রাশিয়া ইউরোপের দেশ গুলোকে গ্যাস বিক্রি করছে রুবেলে। রাশিয়া নিজেও ভারত থেকে রুপিতে পেমেন্ট নিচ্ছে। রাশিয়া অনেকদিম ধরেই সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়ে ভারত ও সোভিয়েতের মধ্যে চলা রুপি- রুবেল লেনদেন প্রক্রিয়া চালু করার চেষ্টা করছে। ২০২১ এর তথ্য অনুযায়ী রাশিয়ার বৈদেশিক রিজার্ভের ৫৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশীরভাগই আমেরিকান ডলারের বদলে সোনাতে আছে। ২০২১ এ রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রী জানিয়েছিলেন তারা খুব শীঘ্রই তাদের ১২০ বিলিয়ন ডলারের জাতীয় ফান্ড ইউরোতে অথবা সোনাতে পরিবর্তন করে নেবে। রাশিয়া চীন থেকে কয়লা ও তেলের দাম ইউয়ানে নিচ্ছে। রাশিয়ার মোট রিজার্ভের ১৩ শতাংশই ইউয়ানে আছে। রাশিয়া নিজেই ইউয়ানকে সমর্থন করছে। এছাড়াও বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরো এবং জাপানিজ কারেন্সি ইয়েনও ডলারকে চ্যালেঞ্জ করছে।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমন এক স্ট্রাটেজি প্রস্তত করে যাতে ইউরোর প্রভাব বাড়বে। এর কারন হচ্ছে ২০১৯ সালে আমেরিকা যখন ইরানে নিষেধাজ্ঞা দেয় তখন ইউরোপীয়ান সংস্থা এবং ব্যাঙ্ক গুলোর ক্ষতি হয়। তবে বর্তমানে চীনের মুদ্রা ইউয়ানই হচ্ছে এমন এক মু্দ্রা যা আমেরিকান ডলারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারছে। চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎপাদন কেন্দ্র এবং রপ্তানিও প্রচুর করে চীন। আজ বিশ্বের ১২৫ টি দেশের প্রধান বানিজ্যিক পার্টনার চীন এবং বিশ্বের ৭০ টি দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক রিজার্ভ হিসাবে চাইনিজ ইউয়ান ব্যবহার করে। চীন তার বিআরআই প্রজেক্ট সহ ব্যাপক ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রজেক্টের বিনিময়ে আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, এশিয়ায় নিজের প্রভাব বাড়াতে চাইছে যাতে ইউয়ান ডলারের মতন শক্তিশলী হয়ে ওঠে। ২০০৯ সালে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর বলে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি সিস্টেম কে তুলে দিতে কারন আন্তর্জাতিক বানিজ্যতে শুধু ডলার এবং সোনার বদলে বিভিন্ন কারেন্সি থাকা দরকার। ব্রিকস দেশ গুলো যেমন ভারত, রাশিয়া, ব্রাজিল এবং দক্ষিন আফ্রিকা এই প্রস্তাবকে সমর্থন করে। গত জুন মাসে হওয়া ব্রিকস সম্মেলনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়।
ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর বলেছেন যদি ভবিষ্যতে আমেরিকান ডলারকে কেউ রিপ্লেস করতে পারে তা হচ্ছে ডিজিটাল কারেন্সি। চীন যার জন্য ডিজিটাল ইউয়ান তৈরি করছে। ২০১৯ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিনপিং ব্লকচেন টেকনোলজির মাধ্যমে ডিজিটাল কারেন্সি পোগ্রাম লঞ্চ করে। এবার অনেকেরই মনে হবে ভারতকী এই সেক্টরে চীনের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবে! রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এমন এক পদ্ধতি তৈরি করেছে যাতে ভারত ডলারের বদলে রুপিতে বানিজ্য করতে পারে। কিন্তু ভারতের সামনে কিছু সমস্যা আছে। ভারতের নমিনাল জিডিপি প্রায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলার যেখানে চীনের ১৬.৭ ট্রিলিয়ন ডলার যা ভারতের পাঁচ গুনেরও বেশী। চীনের তুলনায় ভারতে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে উপার্জনের অসামঞ্জস্য ২৪ শতাংশ বেশী। তবে ভারত যদি ভবিষ্যতে নিজের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে পারে তাহলে চীনের সাথে প্রতিযোগীতা সম্ভব। এটা ঠিক যে ইউয়ান আজ ডলারকে কিছুটা চ্যালেঞ্জ করেছে কিন্তু ডলারকে রিপ্লেস করা চীনের পক্ষে অসম্ভব কারন ডলারের উপর পৃথিবীর সব দেশ ভরসা করে কারন আমেরিকার সরকার খুবই স্বচ্ছ এবং আমেরিকার অর্থনৈতিক বাজার শক্তিশালী। দীর্ঘদিন ধরেই ডলারের উপর দেশ গুলো ভরসা করে আসছে। উল্টোদিকে চীনের কমিউনিস্ট দলের অগণতান্ত্রিক সরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডেব্ট ট্রাপ নীতি, প্রতিবেশীদের সাথে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা এবং করোনা মহামারীর উৎস হিসাবে চীনের উপর কোন দেশই তেমন ভরসা করে না। তাছাড়া আমেরিকা বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার দেশ যার ধারে কাছেও নেই কোনও দেশ। ইউয়ান নিয়ন্ত্রন করে চীনের কমিউনিস্ট দল, এমনকী ডিজিটাল ইউয়ানও কমিউনিস্ট দলই নিয়ন্ত্রন করবে। চীনের মানিটারি সিস্টেমের তথ্য পুরো লুকিয়ে রেখেছে কমিউনিস্ট দল। ২০১৫-১৬ এবং ২০১৯ এ হঠাৎই ইউয়ানের মূল্য কমে গেছিল, তাই ইউয়ানের উপর বিনিয়োগকারীরা তেমন ভরসা করতে পারে না। তাই আক্ষরিক অর্থে আমেরিকান ডলারকে রিপ্লেস করা সম্ভব নয় চীনের ইউয়ানের পক্ষে। হয়ত তাৎক্ষনিক ভাবে ইউয়ান ডলারকে একটু চ্যালেঞ্জ করছে কিন্ত লং টার্মে ডলারকে হারানো সম্ভব নয় ইউয়ানের পক্ষে।