অফবিট

২০৩৫ সালের মধ্যে ১০০০ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির টার্গেট চীনের। চিন্তা বাড়ছে ভারতবর্ষের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের

যুদ্ধবিমান নির্মানে আত্মনির্ভরশীল হতে ভারত নিজস্ব যুদ্ধবিমান প্রযুক্তিতে কাজ করছে বহুবছর ধরেই। হিন্দুস্তান এরোনটিকস লিমিটেড বা হ্যাল তেজস সিরিজের মার্ক ১, মার্ক ১এ যুদ্ধবিমান তৈরি ফেলেছে ইতিমধ্যেই। এছাড়া হ্যাল তেজস মার্ক ২ এর উপরেও কাজ করছে। তাছাড়া পঞ্চম প্রজন্মের আধুনিক যুদ্ধবিমান আমকা তৈরির কাজও করছে ভারত। কিন্ত সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে চীন যে দ্রুত গতিতে সমরাস্ত্র নির্মান করছে তাতে কিন্তু ভারতের তৈরি আমকা যখন তৈরি হবে তত দিনে চীন তার বায়ুসেনাতে অন্তত ১০০০ জে ২০ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে ফেলবে! চীনের তৈরি পঞ্চম প্রজন্মের সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান জে ২০কে চীনে মাইটি ড্রাগনও বলা হয়। পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রযুক্তি খুবই জটিল। আমেরিকার পর চীনই দ্বিতীয় দেশ যাদের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রযুক্তি রয়েছে। রাশিয়া এসইউ-৫৭ নামে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করলেও সেটির এখনও পর্যন্ত কার্যকারিতার কোনও প্রমান দিতে পারেনি রাশিয়া। ভারত, জাপান, তুরস্ক সহ বিভিন্ন দেশ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরির প্রজেক্টে কাজ করলেও একমাত্র আমেরিকা ও চীনের বায়ুসেনাতেই সক্রিয় পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান রয়েছে এই মূহুর্তে। চীন ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান প্রজেক্টেও কাজ শুরু দিয়েছে ইতিমধ্যেই। 

চীনের চেংদু এরোস্পেস কর্পোরেশনের তৈরি জে ২০ একটি পঞ্চম প্রজন্মের, সব আবহওয়ায় উড়ান যোগ্য স্টিলথ যুদ্ধবিমান। ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি জে ২০ এর প্রথম পরীক্ষা করে চীন। ২০১৬ সালে চীন সরকারি ভাবে জে ২০ এর কথা প্রকাশ করে। ২০১৭ সালে চীনের বায়ুসেনাতে জে ২০ যুদ্ধবিমান যুক্ত হয়। 

বর্তমানে চীনের বায়ুসেনাতে ২০০ এর অধিক যুদ্ধবিমান রয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে ৪০০টি এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে ১০০০টি জে ২০ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। সিকিমের কাছে ইন্দোচীন সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে চীন ছয়টি জে ২০ মোতায়েন রেখেছে। যদিও তিব্বতের সিগাটসে ঘাঁটিতে যেখানে চীন জে ২০ মোতায়েন রেখেছে সেখান থেকে ২৯০ কিলোমিটার দূরে পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারাতে ভারতীয় বায়ুসেনা ১৮টি রাফায়েল যুদ্ধবিমান মোতায়েন রেখেছে চীনকে প্রতিরোধের জন্য। চীন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করে ফেললেও যুদ্ধবিমানের প্রধান অংশ তার ইঞ্জিন। চীনের ইঞ্জিন সমস্যা বহু দিনের রয়েছে। চীন জে ২০কে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান দাবী করলেও জে ২০ এর জন্য পঞ্চম প্রজন্মের ইঞ্জিন নেই চীনের কাছে। কিন্তু চীন সম্প্রতি ডব্লুউএস ১৫ নামে একটি ইঞ্জিন তৈরি করেছে যেটি ১৪৭ কিলোনিউটন থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে সক্ষম। আমেরিকার তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এফ ২২ রেপ্টর এর ইঞ্জিন ১৫৬ কিলোনিউটন থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এবার আক্ষরিক অর্থেই জে ২০কে পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান বলা যাবে। আধুনিক যুদ্ধবিমান ইঞ্জিন তৈরির জন্য চীন এখনও পর্যন্ত গবেষনা খাতে প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার ব্যায় করেছে। জে ২০ এর পাশাপাশি জে ৩১ নামেও আরও একটি পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। 

ভারত নিজেও পঞ্চম প্রজন্মের আমকা যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। গত মার্চ মাসেই আমকা তৈরির জন্য ক্যাবিনেট কমিটি অন সিকিউরিটি বা সিসিএস ১৫,০০০ কোটি বা ১.৯ বিলিয়ন ডলারের বাজেট দিয়েছে। ডিআরডিওর অধীনে অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বা এডিএ এবং হ্যাল এই আমকা তৈরির দায়িত্বে রয়েছে। তবে ২৫ টন ওজনের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট আমকা বিশ্বের অন্যান্য পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের থেকে অনেক বেশী আধুনিক হবে। কারন পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হলেও আমকাতে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের মতো সেলেফ হিলিং ক্যাপেবিলিটির মতো বৈশিষ্ট্য থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *