ডিফেন্স

এক নর রূপী রাক্ষস যে হাজার হাজার বাঙালিদের এক রাতে হত্যা করেছিলেন। কি নাম ছিল এই পাকিস্তানের আর্মি অফিসারের?

নিউজ ডেস্ক – আজও কাশ্মীরকে নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। দুই দেশই নিজেদের করে নিতে চায় কাশ্মীরকে। ‌ তবে ভারত পাকিস্তানকে কাশ্মীর না দেওয়ার জন্য যথেষ্ট কারণ রয়েছে। পাকিস্তানি সরকারের হিংস্রতা প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয় ভূস্বর্গ কাশ্মীর নিয়ে চলে গেলে তার অবশিষ্ট বলে আর কিছুই থাকবে না। পাকিস্তানি সরকারের হিংস্রতার এক অন্যতম উদাহরণ হল জেনারেল টিক্কা খান। যিনি হিটলারি মতধারাকেও ছাড়িয়ে ছিলেন। জেনারেল টিক্কা খান সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করতে গেলে সেই যুগের ইতিহাসে চলে যেতে হবে সকলকে। 

সালটা ছিল ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২১শে মার্চ। প্রায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বা তার প্রাক্কালীন ঘটনা। জেনারেল টিক্কা খান পাকিস্তানের সরকারের হয়ে একটি ভয়ঙ্কর সার্চলাইট অপারেশন করেছিলেন যা দেখে কেঁপে উঠেছিল গোটা বিশ্ব। এবার আসা যাক জেনারেল টিক্কা খানের কথায়। সকলে তাকে এই নামে চিনলেও তার আসল নাম টিক্কা চাক্কা খান। ১৯১৫ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই জুলাই, অবিভক্ত ভারতের রাওয়ালপিণ্ডির নিকটবর্তী জোছা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৪০ খ্রিষ্টব্দের ২২শে ডিসেম্বর ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে ভারতের দেরাদুনে অবস্থিত সামরিক একাডেমি থেকে কমিশন লাভ করেন তিনি। পরবর্তীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ও ভারতের বিভিন্ন ফ্রন্টে ছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় কারারুদ্ধ ছিলেন। কিন্তু পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে এসে পরবর্তীতে দেরাদুন সামরিক অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাজনের সময় তিনি মেজর হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করে।

১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার নিষ্ঠাবান কাজের জন্য  মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন।

১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে পাকভারত যুদ্ধের সময়, তাঁকে শিয়ালকোটে নিযুক্ত করা হয়।

১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের আগষ্ট মাসে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন। এই সময় তিনি লাহোর সেনানিবাসে আইভী ক্রপসের কমান্ডার হিসেবে যোগদান করেন। এই বৎসরের ২৪শে মার্চ আয়ুব খান পদত্যাগ করলে, তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন ইয়াহিয়া খান। এই সময় পশ্চিম পাকিস্তানের সামারিক আইন প্রশাসক হন।

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে নিষ্ঠুরতার সাথে বালুচিস্তানে বিদ্রোহ দমন করেন। এই কারণে তিনি ‘বালুচিস্তানের কসাই’ হিসেবে কুখ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানের সার্চলাইট অপারেশন করার জন্য সেখানকার সরকারের জায়গায় নিজেই মনোনীত হন। সেই বছরই বাংলাদেশের ঢাকায় আসলে তাকে স্বাগত জানায় সেখানকার সরকার। তবে জেনারেল টিক্কা খানের উদ্ধত ও অমানুষিক আচরণের কারণে তাকে পছন্দ করতেন না বহু সেনা কর্মীরা। এছাড়াও সরকারের নজরেও খুব একটা খ্যাতি না পাওয়ায় তাকে শপথবাক্য গ্রহণ করতে অসম্মতি জানায় গভর্নর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *