ডিফেন্স

সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে বিশেষভাবে পারদর্শী। ভারতের MARCOS সম্পর্কে ১৫টি অজানা হার হিম করা তথ্য

নিউজ ডেস্কঃ দেশের বাইরের শত্রু থেকে শুরু করে দেশের ভিতরের শত্রুদের নিধন করা জন্য সব প্রতিকূলতার সাথে লড়ার মতো সেনাবাহিনী গড়ে তুলতে হয়েছে ভারতবর্ষকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর এমন কিছু বাহিনী আছে যার নাম শুনলেই শত্রুদের ঘুম উড়ে যায়। ঠিক তেমনই এক সেনাবাহিনী হল মার্কোস বাহিনী। এই বাহিনীর কাছে আছে বিশ্বের আধুনিকতম সব অস্ত্র।

তবে মার্কোস বাহিনীতে যোগ দেওয়া এতো সহজ নয়। প্রচণ্ড মানসিক এবং শারীরিক প্রতিকূলতার মধ্যে নিজের ক্ষমতার প্রমাণ দিয়ে তবেই এই বাহিনতে যোগ দেওয়া যায়। যা সাধারণের পক্ষে বেশ কিছুটা অসম্ভব। ট্রেনিং শেষে মাত্র ৫ শতাংশ যুবককে এই বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার জন্য বাছাই করা হয়। সন্ত্রাস দমন, জলের তলায় যুদ্ধ, পণবন্দীদের উদ্ধার সহ একাধিক কাজে ব্যবহার করা হয় এইসকল সেনাদের। তবে কবে এই বাহিনী গড়ে তোলা হয়? বা কিভাবে গড়ে তোলা হয়?

১. ১৯৮৫ সালে এই বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল। সেইসময় এর  নামকরণ করা হয়েছিল Indian Marine Special Forces (IMSF)। ঠিক দু’বছর পর এর নাম পরিবর্তন করে দেওয়া হয় Marine Commando Force (MCF).

২. এই বাহিনীতে যোগ দেওয়া সহজ নয় কারন এই বাহিনীতে যোগ দিতে গেলে অন্তত পক্ষে দু থেকে তিন বছরের ট্রেনিং করতে হয়।

৩. এই ট্রেনিং এ নেওয়ার যোগ্যতা দেখার জন্য দেওয়া হয় প্রি-ট্রেনিং। তিনদিন ধরে চলে এই বিশেষ শারীরিক পরীক্ষা। আর সেখান থেকেই ৮০ শতাংশ আবেদনকারী ফেরত চলে আসে। এরপর শুরু হয় পাঁচ সপ্তাহের বিশেষ ট্রেনিং। যাকে বলা হয়হেলউইক। শারীরিক ভাবে চাপে রাখার পাশাপাশি মানুষিক ভাবেও চাপে রাখা হয় আর সেই কারনে সেখানে ঘুমোতে পর্যন্ত দেওয়া হয় না। এরপরও যারা হাল ছাড়তে রাজি নয় তাদেরকেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

৪. প্রথমে মুম্বইতে আইএনএস অভিমন্যুতে এই বিশেষ বাহিনীর ট্রেনিং হয়। তারপর আগ্রায় প্যারাট্রুপারের ট্রেনিং দেওয়া হয়। এবং সর্বশেষে কোচির ডাইভিং স্কুলে ট্রেনিং।

৫. প্রাথমিক ট্রেনিং- শেষ হওয়ার পর শুরু হয় অত্যাধুনিক ট্রেনিং। যেমন হাইজ্যাকিং, জঙ্গি হানা, যুদ্ধের মত পরিস্থিতি মোকাবিলার করার জন্য এদেরকে ট্রেনিং দেওয়া হয় এইসময়।

৬. প্যারা জাম্পিং-এর পাশাপাশি এই বাহিনীর অনেক সদস্যই ‘ফ্রিং ফল’-এর জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন। অনেক বেশি উচ্চতা থেকে চওড়া ও সরু জায়গায় ঝাঁপ দেওয়া শেখাতে ট্রেনিং দেওয়া হয় এইসময়। সারা পৃথিবীর কয়েকটি বাহিনীর মধ্যে MARCOS এমন একটি বাহিনী যারা সবধরনের অস্ত্রের ভার পিঠে নিয়ে প্যারা ড্রপিংএর পাশাপাশি সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে পারদর্শী

৭. MARCOS -দের উঁচু স্থানে লড়ার অর্থাৎ হাই অলটিটিউড অর্থাৎ কমান্ডো কোর্সের ট্রেনিং দেওয়া হয় অরুণাচলের প্রভাত ঘটক স্কুলে। পাশাপাশি মরুযুদ্ধ শেখানো হয় রাজস্থানের ডেজার্ট ওয়ারফেয়ার স্কুলে। এবং  জঙ্গি দমন শেখানো হয় মিজোরামের জাংগল ওয়ারফেয়ার স্কুলে।

৮. আমেরিকার নৌবাহিনীর SEAL কোর্সে সবার উপরে স্থান করে নেয় ভারতের এই MARCOS বাহিনী।

৯. একজন জওয়ান থেকে বছর পর্যন্ত এই বাহিনীতে থাকতে পারে।

১০. এই বাহিনীর কাছে বিশ্বের আধুনিকতম সব অস্ত্র থাকে। ইসরায়েলের Tavor TAR-21 যার সঙ্গে যুক্ত থাকে গ্রেনেড লঞ্চার। যা দিয়ে জলের তলা থেকে আচমকা উঠে শত্রুর উপর আঘাত হানতে পারে এই বিশেষ বাহিনী।

১১. ইসরায়েলের এই অস্ত্র ছাড়াও রয়েছে Heckler & Koch MP5 মেশিন গান, SIG Sauer P226 Glock 17 পিস্তল, Druganov Galil স্নাইপার রাইফেল।

১২. জাফনা জেটি দখলের লক্ষ্যে তারা ১২ কিলোমিটার সাঁতরে যায়। বন্দরে বিস্ফোরক নিয়ে ওঠে। আবার সহজেই সাঁতরে ফিরে আসে। কেউ ধরা পড়েনি বা আহতও হয়নি।

১৩. ১৯৮৮ সালে অপারেশান ক্যাকটাস নামে একটি অপারেশনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল এই বিশেষ বাহিনী।

১৪. কার্গিল যুদ্ধে বড়সড় ভূমিকা নিয়েছিল MARCOS।পাশাপাশি ২০০৮এর মুম্বই হামলাতেও তাজ ওবেরয়ে হোটেলে ঢুকে জঙ্গি নিধন চালায় এই MARCOS।

১৫. দাড়ি লাগিয়ে নিজেদের মুখ ঢেকে রাখে ভারতের এই বিশেষ বাহিনী। তাই MARCOS-এর জওয়ানদেরকেদাড়িওয়ালা ফৌজ বলেও ডাকা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *