যুদ্ধবিমানের সমাধিক্ষেত্র আমেরিকায়। কত যুদ্ধবিমান সমাধি দেওয়া হয়েছে জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ সারা পৃথিবীর কাছে যা যুদ্ধবিমান রয়েছে তার তুলনায় আমেরিকার একার কাছে অনেক বেশি বিমান রয়েছে। আমেরিকার হাতে পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় অনেক বেশি যুদ্ধবিমান আছে। শুধু যুদ্ধবিমান বললে ভুল বলা হবে, হেলিকপ্টার, যুদ্ধজাহাজ, বম্বার এর প্রচুর অস্ত্র রয়েছে তাদের হাতে। তবে কখনও কি ভেবে দেখেছেন? যে এদের অবসরের পরে কোথায় রাখা হয়? মানে এতো পরিমাণে যুদ্ধবিমান তো আর যেখানে সেখানে রাখা সম্ভব নয়, তাই কোথায় রাখা হতে পারে?
পৃথিবীর সবথেকে বড় যুদ্ধবিমানের সমাধিক্ষেত্র হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ্যারিজোনা। আমেরিকার বিমান বাহিনীর ডেভিস-মন্থান সামরিক ঘাঁটিতে গড়ে তোলা হয়েছে বিশ্বের সবথেকে বড় পুরনো এবং অচল বিমানের সংগ্রহশালা বা সমাধি ক্ষেত্র।
আমেরিকার বিমান এবং নৌ বাহিনীর অবসরে যাওয়া সব পুরনো বিমান গুলিকে পরিকল্পনা করে এই স্থানে সাজিয়ে রেখেছে। সমুদ্রতল থেকে প্রায় ২৫৫০ফুট উচ্চতায় অবস্থিত আমেরিকার এ্যারিজোনা মরুভূমির উপর ২,৬০০ একর বা ১০.৫ বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে এই বিশাল বিমানের সমাধিক্ষেত্রে কমবেশি ৫,০০০ এর কাছাকাছি যুদ্ধবিমান, বোম্বার, হেলিকপ্টার এবং সামরিক পরিবহন বিমানের এক বিরাট সংগ্রহশালা কিংবা এভিয়েশন মিউজিয়াম হিসেবে পরিনত হয়েছে।
বি-২৯, বি-৫২ নিউক বোম্বার থেকে শুরু করে সিএইচ-১৩০ হারকিউলিকস, এফ-১৫, এফ-১৬, এফ/এ-১৮, এফ-১৪ টমক্যাট, এ-১০ থাণ্ডারবোল্ডের মতো ভুমিতে হামলা করা যুদ্ধবিমানের পাশাপাশি বেল, এ্যাপাচী ও চিনুক হেলিকপ্টারসহ মার্কিন এয়ারফোর্সে ব্যবহৃত প্রায় সকল এভিয়েশন সিস্টেম ও এই স্থানে রাখা আছে।
অন্যদিকে একটি অংশকে যাতে ভবিষ্যতে আপদকালীন মুহূর্তে ব্যবহার করা যেতে পারে সেই কথা মাথায় রেখে অক্ষত অবস্থায় সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে বেশ কিছু বিমান। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যে কোন যুদ্ধ বা আপদকালীন মুহুর্তে সমাধিক্ষেত্রে থাকা বিমানের কিছু অংশকে সংক্ষিপ্তভাবে ঠিক করে সরাসরি যুদ্ধে পাঠানো যাবে।
আমেরিকার বিমান বাহিনীর অবসরে যাওয়া সকল বিমানকে এই সমাধিক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেয় তারা। আর এই স্থান থেকে বিমানের প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা তাদের অব্যবহৃত বিমান থেকে পেয়ে যায়।
তবে আমেরিকার বিমান বাহিনীর বহরে থাকা কোন স্টিলথ ক্ষমতা সম্পন্ন যুদ্ধবিমান, বোম্বার অথবা হেলিকপ্টার এই বোনইয়ার্ডে বা সমাধিক্ষেত্রে রাখে না। বিশেষ করে এফ-১১৭ নাইটহক যুদ্ধবিমান ২০০৭ সালে অবসরে পাঠানো হলেও সেগুলিকে হয় ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে অথবা গোপন স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছে তারা।