ডিফেন্স

পাকিস্তানকে কুপোকাত করতে কাজে লাগনো হতে পারে ব্রহ্মস মিসাইল

নিউজ ডেস্কঃ শত্রুদের অভ্যন্তরে নিখুঁত আঘাতের জন্য গত কয়েক দশকে বিশ্বের বিভিন্ন বিমান বাহিনীর হাতে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের অস্ত্র এসেছে। তার মধ্যে রয়েছে প্রেসিশিয়ান গাইডেড মিউনেশন, গ্লাইডেড স্ট্যন্ড অফ ওয়েপেন, লেজার গাইডেড ওয়েপেন এবং ক্রুজ মিসাইল।

পাহাড়ি অঞ্চলে যেখানে ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং সেখানে আন গাইডেড অস্ত্র কোনো কাজে আসে না বললেই চলে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্ডারের একটা বড় অংশ এই ধরনের পাহাড়ি অঞ্চল। অন্যদিকে ভারত ও চীনের মধ্যে পুরো অঞ্চলটি পার্বত্য। ভারত বরাবরই চীনের বিরুদ্ধে ভূ-প্রকৃতির একটি অ্যাডভান্টেজ পেয়ে থাকে। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্মুখ সমরে দুই দেশের অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং দক্ষতার ওপর সেই যুদ্ধের ফলাফল নির্ভর করে থাকে। এক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে একটি ফারাক আছে তা হল দুই দেশের বিমানবাহিনীর লজিস্টিক সাপোর্ট এয়ারক্রাফট। ভারতের বিমানবাহিনীর একটি সুবিধা হল ভারতের সেনা বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য বিমান বাহিনী একটা বড় ট্রান্সপোর্ট বিমানের ফ্লিট রেখেছে। হেভি ট্রান্সপোর্ট মিডিয়াম ট্রান্সপোর্ট ও লাইট ট্রান্সপোর্ট বিমান ও হেলির কম্বিনেশান দূর্গম থেকে দূর্গম এলাকাতে রসদ পৌছে দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর ফাইটার ফ্লিট একটি ভালো ডিফেন্সিভ ফোর্স হলেও তাদের ট্রান্সপোর্টের ফ্লিট খুবই নগন্য। ট্রান্সপোর্ট ফ্লিটের জন্য পাকিস্তানের রয়েছে ৬টি Saab 2000, ৩টি চাইনিজ Y-12, ৩টি C-295 আর ১৬টি পুরোনো মডেলের C-130। হেলিকপটার ট্রান্সপোর্টে আছে ১টি Bel-412, ৪টি বেল UH-1, ৬টি Mi-17, Aérospatiale SA330 ১টি, Aérospatiale Alouette III ১০টি, AgustaWestland AW139 ১২টি

অন্যদিকে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফ্লিটে রয়েছে ৩টি Boeing 737, ১১টি C-17 বিমান, ১৪টি IL-76, ১১টি C-130J Super Hercules, ১০৪টি An-32 (বেশ কিছু ক্র্যশ করেছে), চারটি Emb-600, ৫০টি Do-228 ও ৫৭টি Hs-748। হেলিকপটার ফ্লিট রয়েছে ২২৮টি Mi-17, ১০-৫টি Chinook, ৩টি Mi-26, ১১০টি Dhruv, ৭৭টি Chetak, ১৭টি Cheetah।

পাকিস্তানের বিমানবাহিনীর বিমানবাহিনী থেকে ভারতবর্ষ এবিষয়ে কতটা এগিয়ে বুঝতেই পারছেন। পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর চেয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী এইদিকে এতটা এগিয়ে থাকার কারণ হলো পাকিস্তান আকৃতির দিকে অনেকটা ছোট। অর্থাৎ পাকিস্তান একটি অঞ্চল থেকে অপর একটি অঞ্চলে খুব দ্রুত নিজের জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে পারে। সেই কাজটা ভারতকে দ্রুত করতে হলে বিমানবাহিনী ট্রান্সপোর্ট ফ্লিটের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল হতে হয়। আর সেই কারণেই ভারতীয় বিমানবাহিনী ট্রান্সপোর্ট ফ্লিট এত বড়।

এরমধ্যে একটি বড় ব্যাপার ভারতবর্ষ সাধারণত ভুল করে। পাকিস্তান আকৃতির দিক থেকে যতটাই ছোট হোক না কেন সেনা বাহিনীর জন্য ট্রান্সপোর্ট করতেই হবে রসদ ও অম্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট। বিমান বাহিনীর ট্রান্সপোর্ট ফিল্ড অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় পাকিস্তানকে ট্রান্সপোর্টের জন্য নির্ভর করতে হয় সড়ক এবং তাদের দুর্বল পরিকাঠামোর উপর। যেমন ব্রিজ ও কিছু ক্ষেত্রে রেল। আর এইসব যদি একবার ধ্বংস করা যায় তাহলে ভারতের পক্ষে যুদ্ধক্ষেত্রে সুবিধাটা অনেকটাই বেশি।

ভারত এই জন্যই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ব্রাহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ডেপ্লয় করে রেখেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এই প্রতিটি মিসাইলের টার্গেট তাদের আর্মি, নেভি ও এয়ার বেস, তার সাথে তাদের এ্যমুনেশান ডিপো, ফুয়েল স্টোরেজ আর তাদের পরিকাঠামো!

যুদ্ধক্ষেত্রে ভারত নিজের ব্রাহ্মোস মিসাইল গুলিকে সব থেকে বেশি ব্যবহার করবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে আক্রমন করার জন্য। আর এর বড় সুবিধা পাকিস্তানের আকৃতি। পাকিস্তান পূর্ব থেকে পশ্চিম দিক প্রর্যন্ত গড়ে মাত্র ৫০০-৬০০কিমি ডেপ্থ। তার মানে পাকিস্তানের অর্ধেক ইতিমধ্যে ব্রাহ্মোসের রেঞ্জে। আগামী দিনে ভারতে ব্রাহ্মোসের রেঞ্জকে ৬০০ এবং শেষে হাজারে পৌছাবে। তার ৫৬০কিমি রেঞ্জের স্ট্রোম শ্যডো আর সাথে ১,৫০০কিমির নির্ভয়।

অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রে যেভাবে তাদের পরিকাঠামো বিদ্ধস্ত হবে তা ভারতকে সহজে একটা সুবিধার জায়গায় আনবে। ভারতীয় আঘাতে একবার পরিকাঠামো ধ্বংস হলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এক কথায় গুলি ছাড়া সিভিলিয়ান মানুষে পরিনত হতে অল্প কিছু সময় নেবে। একই ভাবে ভারতের পরিকাঠামো যদি পাকিস্তান আঘাত করে তখনও নিজের ট্রান্সপোর্ট ফ্লিটকে ভারতবর্ষ সহজে কাজে লাগাতে পারবে। এটাই বড় ট্রান্সপোর্ট ফ্লিট থাকার সুবিধা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *