ডিফেন্স

চীনের সাবমেরিন গুলিকে পুরো মাছের মত গেথে নেবে ভারতের এই অত্যাধুনিক টেকনোলোজি

নিউজ ডেস্কঃ ভারত এবং চীনের সংঘাত যে মারাত্মক রুপ নিয়েছে তা বলাই বাহুল্য। চীনকে বিশ্বাস করা কোনোরকমেই উচিৎ নয়। আর এবার চীনের বিরুদ্ধে আরও শক্তি বাড়াতে জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার সাথে যোগ বাড়াল ভারতবর্ষ।

জাপান নেভাল সিক্রেট ইনফর্মেশন ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে শেয়ার করছে। এর থেকেও বড় ব্যাপার হল এই যে ভারত আমেরিকা ও জাপানের মধ্যে আন্ডার ওয়াটার একটা গ্রেট ওয়াল তৈরি হচ্ছে চীনের বিরুদ্ধে। যা আমেরিকা ও জাপানের গোপন SOSUS ( সাউন্ড সারভিলেন্স সেন্সর চেন) প্রজেক্টে ভারত এবার নিজেকে যুক্ত করেছে। ভাল করে বললে এই চেন আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে স্পর্শ করবে। অর্থাৎ আন্দামান সাগর থেকে শুরু করে ভারত মহাসাগর হয়ে গভীর দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত এই নেটওয়াক যুক্ত থাকবে যা চীনা সাবমেরিন গুলির গতিবিধি প্রতি মুহূর্তে নজরে রাখবে। এবং সেই সকল খবর ভারত, জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড র সাথে শেয়ার করতে পারবে। ভারত থেকে শুরু করে জাপান এবং তাইওয়ান থেকে শুরু করে ফিলিপিন্স হয়ে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত চীনের সাবমেরিন এর বিরুদ্ধে অ্যন্টিসাবমেরিন ওয়ারফেয়ার (ASW) আরও সহজ হয়ে গেল।

তবে এটি এই মুহূর্তের কোনও সিদ্ধন্ত নয়, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে Sosus প্রজেক্ট বা সিস্টেম টা কি। Sosus সিস্টেম আসলে একটি সোনার সিস্টেম। আমেরিকার নৌবাহিনী ১৯৫১ সালে এটি সার্ভিসে আনে। যা মূলত আনা হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবমেরিন গুলির উপর নজর রাখতে। এই Sosus কে “Fish Hook” ও বলা হয় অর্থাত চাইনিজ সাবমেরিনগুলিএ কে পুরো মাছের মত গেথে নেবে। প্রথমে এই Sosus গুলিতে  হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হত। কিন্তু বর্তমানের sosus আরো উন্নত প্রযুক্তির। হাইড্রোফোনের সাথে চৌম্বকীয় অসংগতিও দেখা হয় এখানে। পুরো সিস্টেম এর সাথে ASW সিস্টেম যুক্ত থাকে। সোজা কোথায় বলতে গেলে এই সিস্টেম এর সাথে ভারতীয় নৌবাহিনীর P8I এবং আপকামিং MH-60R হেলিকপ্টার গুলি যুক্ত থাকবে। এবং পুরো ব্যবস্থাটি অত্যন্ত গোপন যা কন্ট্রোল করে জাপান ও আমেরিকান নেভি। এবার এই জাপান এবং আমেরিকার সাথে যুক্ত হতে চলেছে ভারতবর্ষ।

বেশ কিছু বছর আগে।  ২০১৫ নাগাদ ১০ সদস্য বিশিষ্ট এশিয়ান কমিটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী দের বৈঠকের পর ভারত ঠিক করে শুধু ভারত মহাসাগরই নয় বরং দক্ষিণ চীনসাগরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ভারত। এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিক্কর এই পুরো বিষয়টি নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এবং সেই কারনে প্রথমে মেইনল্যন্ড থেকে আন্দামান পর্যন্ত সমুদ্রের নীচে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি ইন্দিরা পয়েন্ট থেকে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা পর্যন্ত সী বেসড সারভিলেন্স সেন্সর বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চেন্নাই থেকে পোর্ট ব্লেয়ার পর্যন্ত ২৩০০ কিমি দীর্ঘ এই সাবমেরিন কেবল বসানোর কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে, এবং শেষ হয় ২০২০ এর মার্চ মাসে যা 100 GB/S অপটিক্যাল ওয়েভ ক্যারি করতে পারে। এই প্রোজেক্টে জাপান বেশ সাহায্য করে। দীর্ঘকালীন এই প্রোজেক্ট জাপান ও আমেরিকা কে চীনের বিরুদ্ধে ভারতের দিকে টেনে আনার ক্ষেত্রে তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পারিক্কর এর ভুমিকা অনস্বীকার্য। এবং যার সুফল পাচ্ছে ভারতবর্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *