ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একাধিক দেশ বিজেপি বিরোধী প্রচারে যুক্ত ছিল! যার মধ্যে বেশ কয়েকটি বন্ধু দেশও রয়েছে!!
২০২৪ সালের ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি বড় ধরনের অভিযোগ সামনে এল যাতে ভারতেরই কিছু বন্ধু দেশের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ভারতের আঠারোতম লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ এর জন্য আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের বিরুদ্ধে সুনিপুনভাবে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে এসব দেশের কিছু সংস্থা ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপিকে পরাজিত করার জন্য ও ভারতীয় রাজনীতিতে তাদের মোনোনীত প্রার্থীকে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভারতে একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কাছে কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল। ২০১৯ সালেই অর্থাৎ চলতি লোকসভা নির্বাচনের পাঁচবছর আগেই এই ধরনের কার্যকলাপ শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিপুল সংখ্যক বিজেপি বিরোধী মিডিয়া মোটা অঙ্কের নগদ অর্থের বিনিময়ে এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়।
ফরাসি মিডিয়াতে ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপপ্রচার ভিত্তিক প্রতিবেদন অতিরিক্ত পরিমানে প্রকাশ করা হয়েছিল। ফ্রান্সের লে মন্ডে, লে সোয়ের, লা ক্রোয়িক্স (আন্তর্জাতিক), লে টেম্পস, রিপোর্টারে এবং রেডিও ফ্রান্স ইন্টারন্যাশনালের মতো প্রথম সারির মিডিয়াগুলিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপিকে অসম্মান করে এবং রাহুল গান্ধী ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসকে গনতন্ত্রের রক্ষাকর্তা হিসাবে উপস্থাপন করে প্রচুর প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল এইসব মিডিয়াগুলোতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মাননীয় নরেন্দ্র মোদীকে স্বৈরাশাসক এবং ভারত স্বৈরশাসনে রয়েছে বলে প্রচার করা হয়েছিল। দি ডিসইনফরমেশন ল্যাব নামে একটি গবেষক সংস্থা কিছু বিশিষ্ট সংবাদপত্র ও মিডিয়ার কথা প্রকাশ করেছে যারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশপাশি ভারতীয় ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য তাদের নিজস্ব মিথ্যে খবর পরিবেশন করে অপপ্রচার চালাচ্ছিলো। অবাক করার মতোন ব্যাপার এটাই যে ফ্রান্সের প্রাচীনতম, প্রভাবশালী, এবং ব্যাপকভাবে প্রচারিত সংবাদপত্র লে মন্ডে সহ ফরাসি মিডিয়াগুলোও এই বিজেপি বিরোধী এবং মোদী বিরোধী প্রচার প্রকল্পে যোগ দিয়েছিল। দি ডিসইনফরমেশন ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী লে মন্ডে একাই ভারতের ইসলামোফোবিয়া, অগনতান্ত্রিক অবস্থার মতো মিথ্যে থিমগুলো নিয়ে বিপুল পরিমানে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। বলা হচ্ছে আমেরিকার ইনটেলিজেন্স সংস্থা এসব মিথ্যে অপপ্রচার তৈরি করেছে অথচ এই আমেরিকাই নিজেকে গনতন্ত্রের স্বর্গ বলে দাবী করে।
আমেরিকার মতো ব্রিটেনের গোয়েন্দা সংস্থাও মোদী বিরোধী ও বিজেপি বিরোধী অপপ্রচারে যুক্ত ছিল। ফ্রান্সে মোদী বিরোধী ও বিজেপি বিরোধী অপপ্রচারের নেতৃত্বে ছিল ফ্রান্সের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ক্রিস্টোফ জাফরেলট যিনি সিজে নামেও পরিচিত। বলা হচ্ছে ক্রিস্টোফ জাফরেলটের এই বিজেপি বিরোধী অপপ্রচারের জন্য আমেরিকা, ইউকে ও কিছু ইউরোপীয় দেশ অর্থ প্রদান করেছিল। তাছাড়া চীনও ক্রিস্টোফ জাফরেলটকে অর্থ প্রদান করেছিল মোদী বিরোধী প্রচারের জন্য। বেশ কীছু ভারতীয় মিডিয়াও এসব কর্মকান্ডে যুক্ত ছিল।
ওপেন এআই নামক সংস্থাও জানিয়য়েছে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী ও কংগ্রেসের সমর্থনে প্রচারাভিযান করেছে ইসরায়েলের স্টোইক নামে সংস্থা। স্টোইক নামক সংস্থাটি বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক প্রচারের কাজ করে। স্টোইক ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এই অপারেশনের নাম দিয়েছে অপারেশন জিরো জিনো। চ্যাট জিপটি নির্মাতা সংস্থা ওপেন এআই জানিয়েছে স্টোইক সংস্থাটি গত মে মাস থেকেই ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপি বিরোধী এবং কংগ্রেসের সমর্থনে কমেন্ট করা শুরু করে। অপারেশন জিরো জিনোর আওতায় স্টোইক ভারতের লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচুর প্রতিবেদন, কমেন্ট করে বিভিন্ন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, এক্স সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল। এই অপারেশনে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে ভারতীয় মানুষদের এবং আন্তর্জাতিক স্তরে ইংরেজি ও হিব্রু ভাষার মাধ্যমে কানাডা, আমেরিকা ও ইসরায়েলের মানুষদের নিশানা করা হয়েছিল।