অফবিট

কঙ্কালকান্ডে অভিযুক্ত গড়বেতার ত্রাস কুখ্যাত বাম নেতা সুশান্ত ঘোষ

কমিউনিস্ট শাসন একটি দেশ বা জাতির জন্য কত বড় অভিশাপ তার সবচেয়ে বড় উদাহারন পশ্চিমবঙ্গ। সুদীর্ঘ ৩৪ বছর পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের শাসন ছিল। এই ৩৪ বছরে বামেরা পশ্চিমবঙ্গকে কয়েক ধাপ পিছিয়ে দিয়ে ভারতের দ্বিতীয় শ্রেনীর রাজ্যে পরিনত করেছে। বাম আমলে ক্ষমতার দম্ভে মানুষকে ভয় দেখিয়ে, অত্যাচার করে এবং হত্যা করে সীমাহীন দুর্নীতি করেছে কমিউনিস্টরা। ২০১১ সালে বামফ্রন্টের পতন হবার পর থেকেই বাম আমলের একের পর এক দুর্নীতির খবর সামনে আসতে শুরু করে। ইন্টারনেটের দৌলতে বামেদের অত্যাচারের খবর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ ৩৪ বছর ভুরি ভুরি দুর্নীতি ও নৃশংসতার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল করেছিল বামেরা।

বাম শাসনে শিহরন জাগানো একটি নৃশংস ঘটনা হচ্ছে গড়বেতার কঙ্কালকান্ড। সিপিএম সরকারের সময়ে হওয়া এই কঙ্কালকান্ডের ঘটনা আজও ভুলতে পারেনি রাজ্যবাসী। এই কঙ্কালকান্ডে মূল অভিযুক্ত তৎকালীন বামফ্রন্টের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ। ২০১১ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা ১ ব্লকের অধীনস্থ বেনাচাপাড়া গ্রাম থেকে সাতটি কঙ্কাল পাওয়া যায়। এই ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথেই রাজ্যজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়। তদন্তের পর ওই বছরই আগস্ট মাসে গ্রেফতার করা হয় সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষকে। ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা যায় ওই মানুষগুলোকে নয় বছর আগে অর্থাৎ ২০০২ সালে খুন করা হয়েছিল।

১৯৮৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২৯ বছর ধরে গড়বেতা পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক ছিল সুশান্ত ঘোষ, তাছাড়া বামফ্রন্ট সরকারের শ্রম মন্ত্রক, এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। বাম আমলে মেদিনীপুরের মূর্তিমান ত্রাস ছিল এই সুশান্ত ঘোষ। বলা হয় সেসময় গড়বেতায় বিরোধী শূন্য করার জন্য রীতিমতো গনহত্যা চালিয়েছিলো সুশান্ত ঘোষ। সেসময় বহু তৃনমূল কর্মীকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল, তাদেরই কঙ্কাল ২০১১ সালে পাওয়া যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেসময় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল।

বামপন্থীরা সবসময়ই তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমান লোপাট করতে সিদ্ধহস্ত যার জন্য সাঁইবাড়ির হত্যাকাণ্ডের মতোন গড়বেতার কঙ্কালকান্ডেও দোষীদের বিরুদ্ধে পোক্ত প্রমান না পাওয়া যাওয়ায় জামিনে মুক্তি পেয়ে যায় সুশান্ত ঘোষ। কঙ্কালকান্ড ছাড়াও সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে স্বজনপোষনের অভিযোগও সামনে এসেছে। কিছু বছর আগে সুশান্ত ঘোষের পরিবারের ২০ জনের সরকারি চাকরির খবর সামনে এসেছে। বাম জামানায় স্রেফ চিরকুটের মাধ্যমে ও সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগ দূর্নীতির খবর এসেছে বহু আগেই। তেমনই সুশান্ত ঘোষের বাড়ির লোকজনও ওইভাবেই চাকরি পেয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সুশান্ত ঘোষের স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা, এছাড়াও তার বোনদের অনেকে, বোনেদের স্বামী সজ মামারবাড়ির বহু লোকও সরকারি চাকরি করছে। আত্মীয়রা ছাড়াও তার সুপারিশেও বহু ব্যক্তি সরকারি চাকরি পেয়েছে। ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দূর্নীতি করার অভিযোগ রয়েছে সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *