অফবিট

উত্তর প্রদেশ ও বিহারে প্রবাহিত নদীকে অভিশপ্ত কেন বলা হয়?

ভারতের মতো দেশে নদীকে মাতৃরূপেই পুজো করা হয়। এখানে নদীকে মায়ের মর্যাদা দেওয়া হয়ে থাকে। গঙ্গা, যমুনার মতো নদীগুলিকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয় তবে এদেশে এমন একটি নদীও আছে যেখান থেকে মানুষ সবসময় দূরে থাকতে চায়। কোনও প্রাণীও এই জলে বাস করে না। 

এই নদীর নাম কর্মনাশা। এটি উত্তর প্রদেশ ও বিহারে প্রবাহিত হয়। এর নাম অনুসারে, এই নদী আপনার কর্মকে ধ্বংস করে। উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র, চন্দৌলি, বারাণসী এবং গাজিপুরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটি বক্সারের পৌঁছে গঙ্গায় মিলিত হয়েছে। কিন্তু দুই রাজ্যের মানুষ এই নদীর জল ব্যবহার করতে ভয় পায়। শুভ কাজ করতে গেলে এই নদীর পাড় দিয়েও কেউ যায় না।  

কিন্তু কেন এই নদী অভিশপ্ত? আসুন জেনে নেওয়া যাক-

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে কথিত আছে যে একবার রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা সত্যব্রত তাঁর গুরু বশিষ্ঠের কাছে দেহ নিয়ে স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। গুরু তার ইচ্ছা পূরণ করতে অস্বীকার করেন এবং তারপর রাজা সত্যব্রত গুরু বিশ্বামিত্রকে অনুরোধ করেন।

বশিষ্ঠের সঙ্গে বিশ্বামিত্রের শত্রুতা ছিল, এই কারণে তিনি সত্যব্রতকে তাঁর তপস্যার জোরে তাঁকে স্বর্গে পাঠিয়েছিলেন। এই দেখে ইন্দ্রদেব রেগে গেলেন এবং রাজার মস্তক মাটিতে ভূলুন্ঠিত করলেন। এর পর বিশ্বামিত্র তাঁর তপস্যায় রাজাকে স্বর্গ ও পৃথিবীর মাঝখানে থামিয়ে দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। 

এই সময় রাজা সত্যব্রত আকাশে উল্টো ছিলেন। যে কারণে তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরতে থাকে। মনে করা হয় সেই মুখ নিঃসৃত লালার কারণে নদীটি তৈরি হয়েছিল। তখন গুরু বশিষ্ঠ রাজা সত্যব্রতকে চন্ডাল হওয়ার অভিশাপ দেন। রাজার লালা নদীতে পরিণত হওয়ায় এবং অভিশাপ পাওয়ায় এই নদীও অভিশপ্ত হয়েছে বলে এখন মানুষ বিশ্বাস করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *