ডিফেন্স

আমেরিকা সোভিয়েত ইউনিয়নের যে পরিণতি করেছিল, সেই একই পরিণতি কি চীনেরও হবে!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যেকার বিরোধ দিন দিন বেড়েই চলছে। একে অপরকে যেভাবে পারছে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করছে। চীনকে ঠেকাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ হচ্ছে উপর বিভিন্ন দিক থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। চীনের অর্থনৈতিক এবং সামরিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণে চীন বৈশ্বিকভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। 

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কারণে চীনের বড় কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হুয়াওয়ে। শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটা বড় কোম্পানিকে কিভাবে ধসিয়ে দেওয়া যায় সেটা আমেরিকা দেখিয়ে দিয়েছে। কিন্তু আমেরিকার এই নিষেধাজ্ঞা চীনের ওপর রাজনৈতিক অর্থনৈতিক এবং সামরিকভাবে কতটুকু কার্যকর হবে সেটা নিয়ে এবার আলোচনা করা যাক।

সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পিছনে ছিল মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার নীতি এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের ঘুনে ধরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। তৎকালীন সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নে শিল্প বলতে ছিল শুধুমাত্র সামরিক শিল্পই। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পাল্লা দিয়ে সামরিক খাতকে শক্তিশালী করার জন্য সামরিক শিল্পে বেশি জোর দিয়েছিল। অন্যান্য শিল্পে সোভিয়েত ইউনিয়ন ইউরোপের অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিল। তাই সামরিকভাবে শক্তিশালী হলেও সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থনৈতিকভাবে বেশ দুর্বল ছিল যেটা পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের অন্যতম কারণ হয়।

সোভিয়েত পতনের আরেকটি কারণ ছিল জাতিগত বিরোধ। সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়ে উঠেছিল ভিন্ন ভিন্ন জাতি নিয়ে। দেশটি সে সময়ে গৃহযুদ্ধ বয়ে বেড়াচ্ছিল আর এর সাথে মরার উপরই আসে আফগান যুদ্ধ। যা সোভিয়েত অর্থনীতিকে আরো দুর্বল করে ফেলে। ফলশ্রুতিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায়।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে চীনের অর্থনীতি কি সোভিয়েত ইউনিয়নের মত দুর্বল??

এর উত্তর হচ্ছে একেবারেই না। চীনের অর্থনীতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে নিয়েছে। চীন এখন বিশ্বের সবথেকে বড় রপ্তানিকারক দেশ। সে কারণে অর্থনৈতিকভাবে চীনকে ঘায়েল করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ততটা সহজ হবে না। সামরিক খাতেও চীন এখন একটু একটু করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনছে। এখন চীন বিশ্বের শীর্ষ অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশগুলোর একটি।

যদিও চীনের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে অনেক বড় কিন্তু প্রযুক্তিগতভাবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সামরিক অনেক পিছিয়ে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে নিজস্ব উদ্বোধনী ক্ষমতার মাধ্যমে সামরিক খাতকে শক্তিশালী করছে সেখানে চীন অন্যেরটা কপি পেস্ট করে চালিয়ে যাচ্ছে। একমাত্র সামরিক খাতকে নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তি দ্বারা উন্নত করলেই চীন-যুক্তরাষ্ট্রের একজন প্রতিপক্ষ হিসেবে নিজেকে দাঁড় করাতে সক্ষম হবে। নচেৎ যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের মোড়ল হিসেবে টিকে থাকবে। ‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *