ইভেন্টপয়লা বৈশাখ

পয়লা বৈশাখের সঙ্গে হালখাতার সম্পর্কটা কী? জানুন ইতিহাস

নিউজ ডেস্ক: বর্তমানদিনে নববর্ষের সাথে হালখাতার বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু ইতিহাস অনুযায়ী,  আসলে যখন হালখাতার প্রচলন শুরু হয়েছিল সেই সময় নববর্ষের চল ছিল না। তাহলে কি করে  নববর্ষের সাথে যুক্ত হল  হালখাতা?  আর  হালখাতা এই নামটি কোথা থেকে এসেছে? 

আদিমযুগের ইতিহাসের পাতায় খুঁজে পাওয়া যায় এর ব্যাখ্যা। যখন মানুষ লাঙলের ব্যবহার শিখল সেই সময় তারা এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করল। এরপর থেকে শুরু হল চাষ করা দ্রব্যের বিনিময় প্রথা। আর এই  হালের দ্রব্য বিনিময়ের হিসেব রাখার জন্য তারা নিজেদের মতো করে একটি খাতায় লিখে রাখতে শুরু করে। আর এই খাতাটির নাম ছিল ‘ হালখাত ‘।  দাবি করা হয় যে এই হাল শব্দটি সংস্কৃত এবং ফারসি, দু’টি থেকেই এসেছে। সংস্কৃত অনুযায়ী এই শব্দের অর্থ হল  লাঙল এবং  ফারসি শব্দের অর্থ হল নতুন। তাই হালখাতার ক্ষেত্রে এই দু’টি শব্দই যথাযোগ্য।

প্রাচীণ হালখাতার অনুকরণে জমিদারদের বকেয়া রাজস্ব আদায় করার জন্য সম্রাট আকবর একটি অনুষ্ঠান চালু করেছিলেন যা ‘পুণ্যাহ’ নামে পরিচিত ছিল। এই জন্যই অনেকে মনে করেন যে  পয়লা বৈশাখ সম্রাট আকবর চালু করেছিলেন। তবে আসলে এটা নয়। ওই দিনে তিনি রাজস্ব আদায় করতেন।

আর  সম্রাট আকবরের এই নিয়মটি বহন করে নিয়ে আসছিলেন বাংলার নবাব মুর্শীদকুলী খান। তিনিও পালন করতেন  ‘পুণ্যাহ’ । ওই সময় বহু জমিদাররা খাজনা দিতে আসতেন। নবাবি আমলে প্রাচীন হালখাতাকে বলা হত ‘পুণ্যাহ’ । তবে পরবর্তীকালে সেই নামের পরিবর্তন করে আবার আদিমযুগের প্রচলিত নামে ফিরে যায় অর্থাৎ  ‘হালখাতা’ নামেই প্রচলিত হয়।  হালখাতা আসলে রাজস্ব আদায়ের নাম ছিল। যা নববর্ষের দিনে পালন করা হত। বর্তমান দিনে ১ লা বৈশাখকে  যে আমরা  নববর্ষ বা বছরের শুরু হিসেবে ধরি সেই রীতি শুরু হয়েছিল ৩১৯ সালে। আর ওই সময় থেকেই শুরু হয়েছিল পাঁজি গণনা। তবে এর আগে  হিম বা শরৎ কাল থেকে বছরের গণনা শুরু হত। দেখা যায় ঋতু হিসেবে বছর গণনা করতেও। তবে পঞ্জিকা গণনার সাথে সাথেই বাঙালির পয়লা বৈশাখের শুরু না হলেও উৎসবের প্রচলন শুরু ছিল। আর  পয়লা বৈশাখের অপর একটি নাম হল হালখাতা।  এই দিন দোকানে দোকানে পুজো হয় এবং নতুন বছরে নতুন খাতা খোলা হয়। তাই পয়লা বৈশাখের সাথে জড়িয়ে রয়েছে হালখাতা। তবে ইতিহাস অনুযায়ী ‘হালখাতা’ র সাথে পয়লা বৈশাখ অনেক পড়ে জড়িয়েছে । এর সাথে সবার প্রথমে বিনিময় প্রথার যুগের মানুষের পরিচয় ঘটেছিল। ওই সময় পয়লা বৈশাখের প্রচলন ছিল না।

মিয়ানমার

মিয়ানমারের নববর্ষকে স্থানীয়ভাবে থিংইয়ান নামে ডাকা হয়। বার্মিজ ভাষায় এর অর্থ ‘পরিবর্তন’ বা ‘এক জায়গা থেকে অন্যত্র স্থানান্তর’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *