আগেকার দিনে কিভাবে শুলে চড়ানো হত জানা আছে?
নিউজ ডেস্ক – প্রাচীন যুগে আইন-কানুন আদালত কোর্ট কাচারি কিছু না থাকায় সকলেই স্বাধীনভাবে নিজেদের মনের ইচ্ছা পূরণ করে যেকোনো ভাবে শাস্তি দিত অপরাধীদের। সেই শাস্তি নরকীয় যন্ত্রণা থেকে কোন অংশে কম ছিলনা। ঠিক সেইভাবে প্রচলিত ছিল শূলে চড়ানোর শাস্তি। তবে কিভাবে ছড়ানো হতো এই শূলে। তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে অনেকেরই মনে। তাহলে একটু বিস্তারিতভাবে বলা যাক।
শূলে চড়ানোর নরকের শাস্তি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় ১৭৭২ খ্রিষ্টপূর্বে ব্যাবিলনের রাজা হাম্বুরাবির সময়কাল থেকে। সেই সময় প্রথম শূলে চড়ানো হয়েছিল একজন নারীকে। তার অপরাধ ছিল যে সে তার পুরুষ সঙ্গীকে অন্য নারীর সঙ্গে সঙ্গমে বাধা দিয়েছিল। সেই শাস্তি স্বরূপ তাকে শূলে চড়ানোর নিদান দেয় ব্যাবিলন রাজা। যথারীতি এরপর থেকেই চলে আসছে এই রীতি । যদিও এই শূলে চড়ানোর বিষয়টি বেশি পরিলক্ষিত হয় মিশর ,আফ্রিকান উপজাতি জুলু, জাপান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, পাক-ভারত উপমহাদেশের মধ্যে ভারতের তামিলনাড়ু ও কেরালা প্রদেশে। তবে এই সকল দৃশ্য প্রাচীন যুগের দেখা যেতো বর্তমানে এর কোন অস্তিত্ব নেই।
বিশেষ করে মিশরের খ্রিস্টপূর্ব ৭৫০-৬৮১ সময়কালে তখনকার মিশরীয় রাজা দ্বিতীয় সার্জনের আমলে শূলে চড়ানো দৃশ্য দেখা যায়। তিনি মিশরীয় রাজধানীতে আক্রমণ ও বিদ্রোহ করার জন্য ১৪ জন দেশ দ্রোহীকে জনসমক্ষে শূলে চড়িয়ে ছিলেন। তবে এই রাজাকের টেক্কা দিয়ে পারস্যের রাজা প্রথম দারিউস ব্যাবিলন জয় করার পর শূলে চড়িয়ে ছিলেন ৩ হাজার ব্যাবিলনবাসিকে।
তবে ঠিক কীভাবে চড়ানো হত এই শূলে! কথিত রয়েছে একটি সূচালো দন্ডটিকে দেহের বিভিন্ন ছিদ্রপথে বিশেষ করে পায়ুপথে প্রবেশ করানো হতো। এরপরে ঘুড়িটি কি মাটিতে গেঁথে দেওয়া হতো। যথারীতি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধারালো অংশ শরীরের এফোড় ওফোড় হয়ে একসময় মৃত্যু হত অপরাধীদের। তবে অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অনেক রাজা নিজে শত্রুদের অধীক যন্ত্রণা দেওয়ার জন্য অনেক সময়ে ধারালো অংশের মাথা ভোতা রাখতো। সেই ক্ষেত্রে মৃত্যু হতে দেরি হতো অপরাধীদের।
যদিও বেশি কুখ্যাত ছিল প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের ওয়ালেশিয়া রাজ্যের যুবরাজ তৃতীয় ভ্লাদ যাকে বলা হয় ড্রাকুলা। তৎকালীন তুরস্কে এই পদ্ধতির প্রচলন ছিল যে তুর্কিদের হাতে এক বার আটক হওয়ার পর অপরাধীদের মৃত্যুদন্ড দিতেন শূলে বিধ্য করে। তারা এই জিনিসটি গোটা দেশবাসীর সামনে করত। যার কারণে ড্রাকুলা রাজার প্রতি সাধারণ জনগণের সঙ্গে শত্রুদেরও মনে এক আতঙ্ক প্রবেশ করত। তবে ড্রাকুলার শূলে চড়ানোর পদ্ধতি ছিল ভিন্নতর। এখানে নিয়ম ছিল পেট অথবা পিঠের মধ্যে দিয়ে সূচালো কোন দন্ড ঢুকিয়ে দিয়ে তা মাটিতে গেঁথে দেওয়া। বিষয়টি এতটাই নির্মম ও অমানবিক ছিল যার জন্য ড্রাকুলার উপর অধিকাংশ চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। যদিও এগুলোর পৌরাণিক গ্রন্থ কথা এবং লিপিবদ্ধ হওয়াত চিহ্ন এখনো প্রদর্শন করে তবে বর্তমানে এই সকল শাস্তি আর পরিলক্ষিত হয় না ।