২৬শে জানুয়ারিই কেন পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস
নিউজ ডেস্ক – প্রতি বছর ২৬শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে ভারতের জনগণ অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহের সাথে উদযাপন করে। এটি একটি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হওয়ার গুরুত্বকে সম্মান করার জন্য উদযাপিত হয়, যা ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০ সালে ভারতের সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর থেকে পালিত হয়ে আসছে। এই দিনটিকে ভারত সরকার সারাদেশে সরকারি তথা রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই দিন গোটা দেশে স্কুল, কলেজ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা উদযাপন করে। বিশেষ করে এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি একাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণে মাল্যদান করা হয়।
২৬শে জানুয়ারিই কেন পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস ! – ১৯৫০ সালে বাবাসাহেব আম্বেদকরের হাত ধরে দেশের সংবিধান তৈরি হওয়ার হয়। এরপর থেকেই সেটি কার্যকর করার জন্য একটি দিনের প্রয়োজন ছিল। সেই সময় বেছে নেওয়া হয় ২৬শে জানুয়ারিকে। এই কারণেই ২৬শে জানুয়ারি দেশের প্রজাতন্ত্র দিবস নামে পরিচিত। স্বাধীনতা দিবস ও প্রজাতন্ত্র দিবস দুই দিনেই ভারতে জাতীয় ছুটি থাকে।
প্রজাতন্ত্র দিবসের বিশেষ কেন্দ্রবিন্দু দিল্লীর কুচকাওয়াজ – ভারত সরকার প্রতি বছর জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লিতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে, যেখানে ইন্ডিয়া গেটে একটি বিশেষ কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়। খুব ভোরে রাজপথে এই মহৎ কর্মসূচী দেখতে ভিড় জমায় শয়ে শয়ে মানুষ। এতে তিন জন ভারতীয় সেনা বাহিনী বিজয় চক থেকে তাদের কুচকাওয়াজ শুরু করে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র শাস্ত্রের প্রদর্শন করে। আর্মি ব্যান্ড, এনসিসি ক্যাডেট এবং পুলিশ বাহিনীও বিভিন্ন সুরের মাধ্যমে তাদের শিল্প প্রদর্শন করে। রাজ্য সরকার, কেন্দ্র সরকার ও রাজ্যপালের উপস্থিতিতে এই উৎসবটি জনো মুখরিত হিসেবে পালিত হয়। অর্থাৎ এক কথায় বলতে গেলে নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের স্বাধীনতা ও বীর শহীদদের অমরত্তের কাহিনী চির জীবিত রাখতে পালিত হয় প্রজাতন্ত্র দিবস।
জাতীয় উৎসব – ভারতে প্রজাতন্ত্র দিবস জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। মানুষ এই মহান দিনটি তাদের নিজস্ব মতো করে উদযাপন করে। যেমন – সংবাদ দেখে, স্কুলে বক্তৃতা দিয়ে বা ভারতের স্বাধীনতা সম্পর্কিত যেকোন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এই দিনে নয়াদিল্লির রাজপথে ভারত সরকার একটি বিশাল কর্মসূচির আয়োজন করে, যেখানে পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংঙ্গীতের পর ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ইন্ডিয়া গেটে ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে প্যারেড করা হয়।
ভারতে স্বাধীনতার পর “বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক”-য়ের অস্তিত্ব দেখানোর জন্য, দেশের বিভিন্ন রাজ্য বিশেষ সংস্কৃতির মাধ্যমে তাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং অগ্রগতি প্রদর্শন করে। লোক নৃত্য তাদের পক্ষের লোকেরা গান, নাচ এবং বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মাধ্যমে উপস্থাপন করে। অনুষ্ঠানের শেষে বিমান বাহিনী জাতীয় পতাকার তিনটি রঙের (জাফরান, সাদা এবং সবুজ) ফুল বর্ষণ করে যা আকাশে জাতীয় পতাকার প্রতীক প্রদর্শন করে। শান্তি দেখানোর জন্য কিছু রঙিন বেলুন আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়। কার্যত পূর্বে দেশ স্বাধীনতার কঠোর বাস্তবকে প্রকাশিত করার পাশাপাশি দেশের শান্তি বজায় রাখারও বার্তা দেওয়া হয় প্রজাতন্ত্র দিবসের মধ্য দিয়ে।