মা কালী কেন নগ্নিকা রুপে পুজিত হন? কি এমন অর্থ রয়েছে এর পেছনে?
নিউজ ডেস্কঃআমরা সবাই মাকে নগ্নিকা রূপে চারটি হাতে অস্ত্র ধারন করে ছিন্নমুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা; গলায় নরমুণ্ডের মালা, বিরাট জিভ, কালো গায়ের রং এবং ভগবান শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি।আর এই রুপেই মা পূজিত হন।কিন্তু আপনাদের কি কখন মনে হয়েছে যে কেন মাকে আমরা নগ্নিকা রূপে দেখি? না জানলে জেনে নিন মায়ের এই নগ্নিকা রূপে থাকার পিছনের কারন।
মা কালী হলেন দশমহাবিদ্যা নামে পরিচিত তন্ত্রমতে পূজিত প্রধান দশ জন দেবীর মধ্যে প্রথম দেবী।আমরা মূলত মা কালীর আটটি রূপের উপাসনা করে থাকি। মা কালীর এই আটটি রূপ হল- দক্ষিণাকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, মহাকালী, ভদ্রকালী, চামুণ্ডাকালী, শ্মশানকালী এবং শ্রীকালী।আর এই আটটি রূপের মধ্যে বাংলায় যেই রূপটি সবচেয়ে বেশি পূজিত হয় সেটি হল দক্ষিণাকালী রূপটি।মা কালীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা আমরা পুরাণ থেকে পায়।
আর আবার আমরা মায়ের বিভিন্ন রূপের বদলে মায়ের মূর্তির বর্ণনা করি তাহলে সবার আগে যেই প্রশ্নটা মনে আসে সেটি হল সব দেবদেবীর মূর্তি পোশাক পরিধান অবস্থায় দেখি কিন্তু মা কালির মূর্তি নগ্ন অবস্থায় দেখি।মা কালীর মূর্তি নগ্নিকা রূপে কেন?
কালী শব্দের উৎপত্তি হয়েছে ‘কাল’ থেকেই। ‘কাল’ শব্দটির স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ হল ‘কালী’ ।এই কাল শব্দের অর্থ হল সময়। প্রকৃত অর্থে কাল-কে কলন করেন যিনি তিনিই কালী।মা কালী ত্রিনয়ন সম্পন্না। তার এই ত্রিনয়ন বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের পাপ বিনাশকারী।দেবী এই ত্রিনয়নের মাধ্যমে যেমন অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ দর্শন করেন, তেমনই সত্য, শিব ও সুন্দরকে প্রত্যক্ষ করেন। দেবীর ডানদিকের উপরের হাতে বরাভয় মুদ্রা ও নীচের হাতে আশীর্বাদ মুদ্রা রয়েছে। এর অর্থ, মা তাঁর ভক্তদের যেমন রক্ষা করেন, তেমনই মনোবাঞ্ছাও পূর্ণ করেন। দুষ্টের দমনে মা যেমন রণমূর্তি ধারণ করেন, তেমন আবার তাঁর সন্তানের রক্ষার্থে তিনি মমতাময়ী মা। কালী অনন্তের প্রতীক। একদিকে যেমন বিনাশাকারী, অন্যদিকে তেমন সৃষ্টিকারী। দেবী কালী শক্তির প্রতীক। আর এই চিরশক্তিকে কোনও বসন বা জাগতিক বস্ত্রের আবরণে আবৃত করা যায় না। তাই দেবী নগ্নিকা রূপে থাকে।
