ডিফেন্স

ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য কি ধরনের ড্রোন ও কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম ক্রয় করা হতে চলেছে?

রাজেশ রায়:— আধুনিক যুদ্ধে ড্রোন ও তার কাউন্টার সিস্টেমের গুরুত্ব অপরিসীম। ভবিষ্যতের যুদ্ধ আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স সিস্টেমের উপরই হবে। ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হতে চলেছে পাইলট ছাড়া অর্থাৎ ড্রোন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ হেলিকপ্টার, যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক এমনকী সাবমেরিন প্রযুক্তিতে পর্যন্ত ড্রোন সিস্টেম আনার জন্য কাজ করছে।  কয়েকবছর আগেই আর্মেনিয়া আজারবাইজান যুদ্ধে তুরস্কের বায়রাখতার টিবি-২ ড্রোনের সাহায্যে আজারবাইজান আর্মেনিয়াকে হারিয়ে দেয়। সাম্প্রতিক কালে বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী দেশ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ খানিকটা সমস্যায় আছে কারন পর্যাপ্ত কমব্যাট ড্রোনের অভাব। সমরাস্ত্র তৈরি করতে রাশিয়া সিদ্ধহস্ত কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া ড্রোন সেক্টরটা অবহেলা করেছিল যার জন্য এখন যুদ্ধে রাশিয়া গোপনে ইরান থেকে ড্রোন কিনছে, অন্যদিকে ইউক্রেনের কাছে তুরস্কের বায়রাখতার টিবি-২ ড্রোন আছে। তবে রাশিয়া আধুনিক ড্রোন প্রজেক্টে কাজ করছে।

রাশিয়ার মতন ভারতেরও আধুনিক কমব্যাট ড্রোনের খুব অভাব। ড্রোন দুই প্রকার একধরনের ড্রোন আছে যেগুলো শুধু সারভিলেন্স বা গোয়েন্দা নজরদারি করে এবং আরেক ধরনের ড্রোন শত্রুর উপর আক্রমন করে এদের কমব্যাট ড্রোন বলে। কমব্যাট ড্রোন প্রযুক্তি খুবই জটিল। ভারত তার এই দুর্বলতা দূর করতে একাধিক প্রজেক্টে কাজ শুরু কেরছে। ইসরায়েলের অনেক সংস্থা ভারতীয় সংস্থা গুলির সাথে যৌথভাবে ভারতেই ড্রোন তৈরি করছে। এছাড়া ভারতের নিজস্ব কীছু প্রজেক্টও রয়েছে। বহুদিন ধরেই রুস্তম কমব্যাট ড্রোন প্রজেক্টে কাজ করছে ভারত, এছাড়া পঞ্চম প্রজন্মের ঘাতক ড্রোন প্রজেক্ট রয়েছে ভারতের। এসব প্রজেক্ট সম্পূর্ণ হয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যুক্ত হতে অন্তত ২০৩০ সাল হয়ে যাবে। এজন্য এতদিন নিজেদের প্রস্তত রাখতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জরুরী ভিত্তিতে কমব্যাট ড্রোন ও কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম কেনার সম্মতি দিয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ড্রোন কেনার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রাথমিকভাবে ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। শুধু ড্রোন নয় কাউন্টার ড্রোন সিস্টেমও কেনা হবে যাতে শত্রুর ড্রোন আক্রমন মোকাবিলা করা যায়। তিন ধরনের ড্রোন কেনা হবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য। 

** এমন ধরনের ড্রোন যেগুলো ১৪-১৫০০০ ফুট উচতায় উড়তে পারে যাতে লাদাখের মত এলাকায় চীনের উপর নজরদারি রাখা যায়।

** অন্তত ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে সক্ষম বিশেষ ড্রোন।

** লয়টারিং মিউনেশন বা সুইসাইড ড্রোন। এগুলো শত্রুর বিশেষ কোন টার্গেটে গিয়ে বিস্ফোরন ঘটায়।

এছাড়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রক আমেরিকা থেকে তিন বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে ৩০ টি প্রিডেটর ড্রোন কেনার ছাড়পত্র দেবে খুব তাড়াতাড়িই। প্রিডেটর ড্রোন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কমব্যাট ড্রোন, এর সমতুল্য ড্রোন আমেরিকা ছাড়া অন্য কোনও দেশের নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *