ইউক্রেন যুদ্ধের পর পুতিনের নির্দেশ মতো মহড়া ঘোষণা করায় জাপানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক কি আরও তিক্ততা হয়ে উঠেছে! এই বিষয়ে কি বলছে দুদেশের সরকার
নিউজ ডেস্ক – সম্প্রতি সমাপ্ত হয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের বিধ্বংসী যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুটি দেশ। তবে যুদ্ধ সমাপ্ত হতেই রাশিয়ায় বিতর্কিত দ্বীপগুলির উপর মহড়া ঘোষণা করেছেন পুতিন। সে কারণেই পুতিনের এই নতুন সিদ্ধান্তে প্রতিবেশী দেশ জাপানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের কি কোন পরিবর্তন হয়েছে নাকি সেটি আরো তিক্ত হয়ে উঠেছে তা জানতে বর্তমানে উৎসুক বহু পাঠক। এই প্রতিবেদনে রাশিয়া ও জাপানের সম্পর্ক বর্তমানে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
সকলেই জানেন যে সদ্য সমাপ্ত হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ। কিন্তু যুদ্ধ সমাপ্ত হলেও তার প্রভাব চলছে এখনো দুটি দেশের মধ্যে। এক প্রকার আংশিকভাবে দুটি দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক ঘর-বাড়ি এবং যুদ্ধের ফলে টান পরেছে অর্থনীতিতে। এমন পরিস্থিতিতে আকস্মিকভাবে মহড়ার ঘোষণা করেছেন পুতিন। এই ঘোষণা শুনতেই রাশিয়ার উপর বেজায় ক্ষেপে উঠেছে জাপান। তার ফলে পাশ্চাত্য দেশগুলির মতোন জাপানও রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে শুধুমাত্র মহড়া নয় পূর্ব থেকে আনুমানিক ৭০ বছর ধরে রাশিয়ার উপর ক্ষিপ্ত জাপান। যদিও এর পেছনে যথেষ্ট যুক্তি দাঁড় করিয়েছে জাপান সরকার।
জাপান সরকারের মতে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের সামরিক বিপর্যয় ঘটলে ১৯৪৫ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন অর্থাৎ বর্তমানের রাশিয়া জাপানের উত্তরাঞ্চলীয় কয়েকটি দ্বীপ দখল করে নেয়া, যা কুড়িল দ্বীপপুঞ্জ নামে পরিচিতি । এই দ্বীপপুঞ্জের মালিকানা নিয়ে রাশিয়া ও জাপানের মধ্যে প্রায় ৭০ বছর যাবৎ বিরোধ চলছে। পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত দ্বীপ দুটি জাপানে উত্তর টেরিটরিস এবং রাশিয়ায় দক্ষিণ কুরিলস নামে পরিচিত। এই দ্বীপ দুটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত সেনারা দখল করে নেয়। দ্বীপগুলোতে থাকা ১৭ হাজার জাপানি অধিবাসীকে সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হয়।
পরবর্তীতে ওই বিতর্কিত চারটি দ্বীপকে কেন্দ্র করে শান্তির চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছিল জাপান। কিন্তু সেই শান্তির চুক্তি বয়কট করে রাশিয়া। বয়কট ঘোষনা করার পর রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে,”জাপানের বিরোধপূর্ণ আচরণের জন্য এই আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এমন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়, যে দেশ প্রকাশ্যে বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে”।
তবে শুধুমাত্র রাশিয়া সরকার নয় গর্জন করে উঠেছে ওই দেশের সেনাবাহিনীরাও। রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে,” ওই দ্বীপ গুলো রক্ষার্থে ৩হাজারেরও বেশি সেনা এবং আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে মহড়া চালানো হবে। এবং আগামী দিনের যাতে দিনগুলো সুরক্ষিত থাকে সে দায়িত্ব নেবে দেশের সেনাবাহিনীগণ “।