অফবিট

পৃথিবীর কোন শহরে টাকার জন্য মেয়েদের কুমারিত্ব বিক্রি করা সাধারন ব্যাপার?

নিউজ ডেস্ক   বর্তমানে গোটা বিশ্বে শরীরের ব্যবসা হল একটি কৌতুহলী ও আকর্ষণীয় ব্যবসা। বহু মহিলারা স্বেচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে যুক্ত হয় এই ব্যবসার সঙ্গে। কিন্তু এমন একটি দেশ রয়েছে যেখানে মেয়েদেরকে বাধ্য করে যৌন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এমনকি সেখানে সক্রিয় ভূমিকা থাকে মেয়েদের পরিবারের সদস্যদের। এমন একটি জায়গা হল কম্বোডিয়ার দরিদ্র গ্রাম স্ভে পাকে।‌ সেখানে এমন একটি মেয়ে রয়েছে যার জীবনীকার শুনলেই চোখের জল আসতে বাধ্য সকলের। 

লোকো ভাষ্যমতে যৌনতার জন্য খ্যাত স্ভেয়ের বাসিন্দা সেফাককে অর্থের জন্য তার সতীত্ব বিক্রি করে দেয় তার মা। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩। সেই সময়ে হাসপাতালে গিয়ে তার কুমারিত্বের সনদ সংগ্রহ করা হয় পরবর্তীতে তাকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে টানা তিনদিন ধরে তাকে ধর্ষণ করা হয়। যদিও এই সকল নিকৃষ্ট কর্মগুলিকে সমর্থন করেছিল তার মা। পরে জানা যায় হতদরিদ্র পরিবারের জন্মগ্রহণ করেছিল সেফাক। এমনকি তার মা কয়েকজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিল। সুদে আসলে যা দাঁড়িয়েছিল নগদ ৬ হাজার ডলারে।  যার কারণে অর্থ উপার্জনের জন্য নিজের মেয়ের কুমারিত্ব বিক্রি করে এক মহিলার কাছ থেকে ৮০০ ডলার পেয়েছিল তার মা অ্যান। 

যদিও পরবর্তীতে অ্যানের কথামতে, “তখন দিনার গায়ের মেয়ের কুমারিত্ব বিক্রি করা ভুল হয়েছে। তার জন্য তিনি আজীবন দুঃখিত থাকবেন। তবে পরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আগে থেকে জানা থাকলে এই কাজ কখনই করতেন না।” যদিও বর্তমানে সুরক্ষিত ও নিরাপদে রয়েছে সেফা। 

যৌন কাজের জন্য বিখ্যাত কম্বোডিয়ার  রাজধানীতে ছোট থেকে শুরু করে বড় সব ধরনের মহিলারাই শরীর ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তবে সেফার এমন নরকীয় জীবন থেকে ২০১৩ সালে তাকে বের করে আনে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনয়ের অ-লাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাজেপ ইন্টারন্যাশনাল মিশন(এআইএম)। তবে শুধু সেফাকে নয় তার মতো এমন বহু শিশু রয়েছে যাদের উদ্ধার করেছে এই সংস্থাটি। বর্তমানে এই সংস্থার দ্বারা উদ্ধার হয়ে একটি কারখানায় কর্মে নিযুক্ত হয়েছেন সেফা। সেখানে জামাকাপড় ব্রেসলেট সহ এমন বহু জিনিস তৈরি করে উপার্জন করেন। সম্প্রতি সেফার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, “আগের জীবনের তুলনায় এখন নিজের কর্মজীবন নিয়ে খুব ভালো আছি। আগের নরকীয় পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে এসে একটি স্বাভাবিক জীবন যাপন করায় সত্যিই আর পাঁচজন সাধারণ মেয়ের মতো আমিও বাঁচতে শিখেছি।” 

তবে প্রস্টিটিউট থেকে একটি সাধারণ জীবনে আসার পথে দুর্গম ছিল সেফার কাছে। তবে তাকে সর্বদাই অনুপ্রাণিত করে তার মনোবল বাড়িয়ে সমাজের নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লড়তে শিখিয়েছে মার্কিন নাগরিক ডন ব্রিউস্টার। তখন সালটা ছিল ২০০৫। সেফার কর্মজীবনের সঙ্গে জড়িত এই ধর্মযাজক বলেন,”এই পর্যন্ত  সংস্থাটি ৭০০র শিশুকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে। তবে অধিকাংশ শিশু উদ্ধার করা হয়েছে স্ভে পাক থেকে। এই গ্রামে দারিদ্রতা অকল্পনীয়ভাবে সীমাহীন। যার কারণে এমন পরিবার রয়েছে গ্রামে যাদের দৈনন্দিন উপার্জন এক ডলারেরও কম। বাসিন্দাদের একটি বড় অংশই ভিয়েতনাম থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী। যাদের মধ্যে অনেকেই নদীর ওপর বসবাস করে। এবং মাছ ধরে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। তবে স্ভে পাক গ্ৰামে ১০০ ভাগ মেয়েরা যৌন কর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বর্তমানে সংস্থাটির অভিযান চালানোর পর সেখানে ৫০ শতাংশ হ্রাস হয়েছে। তবে সম্পূর্ণ নির্মূল হয়নি এই যৌন ব্যবসাটি।  তবে যৌনপল্লীতে মেয়েদেরকে বিক্রি না করা হলেও হোটেল রুমে রমরমিয়ে চলছে দেহ ব্যবসা। 

পরবর্তীতে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতিবেদন মতে ২০১৭ সালে 54 ঠেকাতে ন্যূনতম শর্তগুলো পূরণ করতে পারেনি কম্বোডিয়া। তবে ব্যবসাটি নির্মমভাবে বন্ধ না হলেও পাচারের দায়ে মামলার সংখ্যা বেড়েছে। চার কারণে কম্বোডিয়ায় পুলিশের সহায়তায় এআইএমের পরিচালক এরিক মেলড্রাম অপরাধীদের ধরতে কম্বোডিয়ার পুলিশের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি জানান,” গত তিন বছরে ১৩০টি মেয়েকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সংস্থাটি। তবে সেখানকার দারিদ্রতার কারণে বহু মেয়েরা এই ব্যবসায় নামতে বাধ্য হয়। কিন্তু এই অভিযান ঢুকতে সেখানকার পুলিশ খুব ভালো হবে সহায়তা করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *