ডিফেন্স

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে সৃষ্টির শুরু এবং সৃষ্টির শেষ কোথায় জানা আছে?

অর্পণ সাঁতরাঃ “নেবিউলা” বিগ ব্যঙের পর মহা ব্রহ্মান্ডে ছড়িয়ে থাকা গ্যসের ভান্ডারের ছোট ছোট অংশ যা কয়েক হাজার আলোকবর্ষে ছড়িয়ে থাকতে পারে। ধুলো, হাইড্রোজেন গ্যস দিয়ে মূলত তৈরি এই নেবিউলাথেই শুরু হয় একটি নক্ষত্র ও তার চারদিকে আবর্তনকারী গ্রুহ উপগ্রহের। আজ সেই সম্পর্কে জানবো।

নোভাঃ নোভাকে সৃষ্টির রচনায় প্রক্রিয়া বলতে পারেন। নেবুলার মধ্যে যখন কোন অংশে গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যায় তা একটি পিন্ডের আকার সৃষ্টি করতে থাকে। এর মধ্যে আপনাদের একটি জিনিস বুঝে নেওয়া দরকার যে জিনিসের পর যত বেশি হয় সে জিনিসের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি বৃদ্ধি পায়। নেবুলার কোন অংশে তৈরি হওয়া গ্যাসের পিণ্ড ক্রমশ ঘন হতে থাকে এবং তা আস্তে আস্তে নিজের মধ্যাকর্ষণ শক্তিকে বৃদ্ধি করে অভ্যন্তরে অর্থাৎ ঐ পিন্ডের কেন্দ্রে চাপ বৃদ্ধি করতে থাকে। এরই মধ্যে তার চার পাশে বাকি গ্যস গুলি দ্রুত বেগে কেন্দ্রের চারপাশে ঘুরতে থাকে যাকে বলা হয় এক্রেশান ডিস্ক (accretion disc)। যত কেন্দ্রের চাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে ততই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে উষ্ণতা। এই প্রক্রিয়ার ততক্ষণ চলতে থাকে যথা সময়ে না তাপমাত্রা 10 মিলিয়ন কেলভিন পর্যন্ত পৌছোয়। ব্যাপক পরিমাণে গ্যাস কেন্দ্রে জমা হওয়ার পর তার অভ্যন্তরে চাপের প্রক্রিয়া এত বৃদ্ধি পেতে থাকে যে হাইড্রোজেনের পরমাণু গুলি একে অপরের সাথে ফিউজ হয়ে হিলিয়াম হতে শুরু করে। নিউক্লিয়ার ফিউশন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একটি ব্যাপক সোলার উইন্ড তৈরি হয় যা আশেপাশের জমে থাকা অ্যাক্রেশন ডিস্কের গ্যাস কে দূরে সরিয়ে দেয়। এবং ব্যাপক আলোর মধ্যে দিয়ে ঠিক মধ্যবর্তী অংশে জন্ম হয় একটি নক্ষত্রের। নক্ষত্রের জন্মের পরের থেকেই শুরু হয় গ্রহ উপগ্রহ নির্মাণের প্রক্রিয়া। চার পাশে আবর্তনকারী ধুলোবলিকনা ও গ্যস একে অপরের কাছে এসে আলাদা আলাদা পিন্ড তৈরি হতে থাকে। যা এক সময় গ্রহ ও উপগ্রহ হিসাবে অস্তিত্বে আসে।

নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াঃ– নক্ষত্র একটি বিশাল ফিউশান পারমানবিক চুল্লি। যার মধ্যে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চলতে থাকে। আর এই যুদ্ধ হলো পরমাণু সংযোজনের বহির্মুখী চাপ ও মধ্যাকর্ষণ শক্তির অন্তর্মুখী চাপের। সোজাসুজি ভাবে বলতে গেলে যেহেতু নক্ষত্র একটি বিরাট অবজেক্ট স্পেস-টাইম ফেব্রিককে ব্যান্ড করে তাই এর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে প্রতিনিয়ত চায় নক্ষত্রের আরও সংকুচিত করার। একই সময় তাকে বাধা দেয়  পরমাণু সংযোজনের তৈরি হওয়া শক্তি যা প্রতিনিয়ত বাইরের দিকে বেরোতে থাকে। অর্থাৎ এই সময় মাধ্যাকর্ষণ এবং সংযোজন শক্তিকে একে অপরকে বাতিল করে। যার ফলে একটি নক্ষত্র যেমন ফিউশান এনার্জির জন্য চারিদিকে বিষ্ফরিত হয়ে ছড়িয়ে যায় না তেমন মাধ্যাকর্ষণের জন্য নিজের মধ্যে সংকুচিত হয়ে পড়ে না।

ফিউশান প্রক্রিয়ায় নক্ষত্র ক্রমশ ভারী থেকে আরও ভারী উপাদান তৈরি করতে থাকে। যত উপাদান প্রক্রিয়া বৃদ্ধি পায় তত দ্রুত ফিউশান হতে থাকে।

হাইড্রোজেন কে হিলিয়িম (৯০শতাংশ জীবন)

হিলিয়াম কে কার্বন

কার্বন কে নিয়ন

নিয়নকে অক্সিজেন

অক্সিজেনকে সিলিকন

আর সিলিকনকে আয়রনে ফিউজ করে।

আয়রন হল নিউক্লীয়ার ওয়েস্টেজ। একে আর ফিউজ করা যায় না। এন্ড গেম শুরু

সুপার নোভাঃ এবার নক্ষত্রের ভর আগের চেয়ে অনেকগুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে যেহুতু কেন্দ্রে আরো ভারী পদার্থ তৈরি হয়ে গেছে। এখন যেহুতু নক্ষত্রের কোর অর্থাৎ কেন্দ্রে পদার্থের দ্রব্যমান ও ভার ব্যপক বৃদ্ধি পেয়েছে একই সময় ফিউশানের জন্য ফুয়েল শেষ হয়ে গেছে এখানে গ্র্যভিটি জিতে যায়। হেরে যায় ফিউশান।

ভারী কোরকে ফেলে রেখে নক্ষত্রের বাইরের অংশ এক ব্যপক বিষ্ফরনে পুরো গ্যলেক্সিকে কাঁপিয়ে দেয়। যার নাম সুপারনোভা। এই সময় এর উজ্জলতা পুরো গ্যলেক্সির উজ্জলতাকে ফিকে করে দেয়। এর উজ্জলতা ১০বিলিয়ন সূর্যের মত হয়। আর এই সুপারনোভার সময় ১ সেকেন্ডে যে এনার্জি তৈরি হয় তা আমাদের সূর্য নিজের দশ বিলিয়ন বছরের জীবনকালে নির্গত করে।

সুপারনোভার সময় অনেক ভায়োলেন্ট জিনিস হয়। যেমন “গামা রে বার্স্ট”। এই সময় নক্ষত্রের দুই দিক থেকে গামারের জেট নির্গত হয় যা ব্রহ্মান্ঠে সব থেকে ভায়োলেন্ট ইভেন্ট। এই গামা-রে এর পথে যে আসে যা নিমেশে ধ্বংস হয়ে যায়।

সুপারনোভার পর নক্ষত্রের বাইরের অংশ হাজার হাজার আলোকবর্ষে ছড়িয়ে পরে যা আবার সৃষ্টি করে নেবিউলার। আর এই নেবিউলার মাঝখানে থাকতে পারে চারটি জিনিস।

হোয়াইট ডোয়ার্ফ

নিউট্রন-স্টার

ম্যগ্নেটার

ব্ল্যকহোল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *