পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে এই বন্দর ধ্বংস করে দিয়েছিল ভারতের নৌবাহিনী। কতসালে এবং কেন যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করা হয়েছিল জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ পাকিস্তানকে ১৯৭১ এর যুদ্ধে যেভাবে নাকানি চোবানি খাইয়েছিল ভারত তা হয়ত পাকিস্তানের পক্ষে ভোলা সম্ভব নয়। ১৯৭১ এর যুদ্ধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনেক গোপন অপারেশানেও নামা হয়।
5 Missile Boat Squadron। পাকিস্তানের বুকে কাঁপন ধরানোর জন্য যথেষ্ট এই নাম। এই কিলার মিসাইল বোট স্কোয়াড্রনটি ভারতের নৌবাহিনীর একটি দারুণ শক্তি। ১৯৭১-এর ভারত পাক যুদ্ধে এই কিলার স্কোয়াড্রনের মাত্র 245 টনের তিনটি বিদ্যুৎ ক্লাস মিসাইল বোট পাকিস্তানের নৌসেনাকে নাকানি চোবানি খাইয়েছিল।
১৯৭১ এর ভারত পাক-যুদ্ধ চলছে তখন মধ্য গগনে। ভারতীয় নৌবাহিনী সেইসময়য় পুরো করাচী বন্দর কে বিচ্ছিন্ন করার প্ল্যান করেছিল। সেইমত ৪ ডিসেম্বর, তিনটি বিদ্যুৎ ক্লাস মিসাইল বোট নিয়ে পাকিস্তানের দিকে এগোতে থাকে সেনাবাহিনী বোট গুলি ছিল নিপাত, নির্ঘাত এবং বীর। পাশাপাশি এদের এসকর্ট করার জন্য ছিল দুটি আর্নালা ক্লাস অ্যান্টিসাবমেরিন ওয়ারফেয়ার করভেট এবং একটি অয়েল ট্যাংকার। পাকিস্থানের দিকে ভারতের নৌবাহিনী আসতে আসতে অগ্রসর হতে শুরু করে। সন্ধ্যের আগে করাচী বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল, আর সেই মতো করাচি বন্দর থেকে ৪৬০ কিলোমিটার দূরে এই ফ্লিট পৌঁছে যায়।
এত দূরে এই যুদ্ধজাহাজ গুলি নোঙর করার বিশেষ একটি কারণ ছিল। তার কারন হল পাকিস্তান এয়ার ফোর্সের নাগালের বাইরে থাকা যায় কারন সেই সময় পাকিস্তানের বায়ুসেনার কাছে এমন কোনও নিমান ছিলনা যে রাতে তারা আক্রমণ করতে পারে। আর সেই কারন বশত তারা রাতের অপেক্ষা করছিল। আর সেই জন্য ভারতীয় ফ্লিটকে লক্ষ্য করে এয়ার অ্যাটাকের কোনও ভয় ছিল না।
এরপর রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে, নিপাত,নির্ঘাত আর বীর পাকিস্তানের করাচী বন্দরে আক্রমণ করা উদ্দেশ্যে এগোতে থাকে। তবে তিনটি যুদ্ধজাহাজ আলাদা আলাদা পথে প্ল্যান মাফিক এগোতে শুরু করে। তিনটি বোটেই চারটি করে অ্যান্টিশিপ মিসাইল SS-N-2 ছিল। প্রথম আক্রমণ করে নির্ঘাত, করাচী হতে ১৩০ কিলোমিটার দূরে সে পেয়ে যায় তার প্রথম শিকার পাকিস্তান নেভির ডেসট্রয়ার খাইবারকে। SS-N-2 দ্বারা খাইবারকে আক্রমণ করে নির্ঘাত। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে খাইবার কোনও প্রতিরোধই ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে নি। জাহাজের র্যাডার মিসাইলকে ভুল করে বিমান বলে ধরে নেয়। আর সেই কারন বশত অফিসাররা, অ্যান্টি এয়ার ক্রাফট গান বোফোর্স দিয়ে হামলা চালাতে থাকে এবং মিসাইল নামাতে যায়।
SS-N-2 এসে খাইবারেরকে ধ্বংস করে এবং তলিয়ে যায় পাক ডেসট্রয়ার। এরপরের আক্রমণটি টি করা হয় নিপাত থেকে। করাচী বন্দর থেকে প্রায় ৪৮ কিমি দূরে নিপাতের টার্গেট থাকার ছিল সেই মত নিপাত তার টার্গেট বেসামরিক জাহাজ ভেনাস এবং ডেসট্রয়ার শাহজাহান কে হামলা করতে এগিয়ে যায়। ভারতীয় গোয়েন্দা সুত্রে খবর ছিল যে ভেনাসে করে প্রচুর পরিমাণ যুদ্ধাস্ত্র পাকিস্তানে যাচ্ছে। আর এটিকে গার্ড করছে ডেস্ট্রয়ার শাহজাহান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। নিপাত এই দুই জাহাজকে আক্রমণ করে SS-N-2 দিয়ে। ভেনাসে অ্যান্টি-শিপ মিসাইল লাগার সঙ্গে সঙ্গে সেটি ডুবতে শুরু করে। এবং অন্য মিসাইলটি শাহজাহানের গাঁয়ে। তবে সেটি ধ্বংস না হলেও মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হয় এবং সেই অঞ্চল ছেড়ে চলে যায়। এর পরের টার্গেটে আঘাত হানে বীর। পাকিস্তানি মাইন-সুইপার মুহাফিজের উপর। SS-N-2 দ্বারা আক্রমণ করে ধ্বংস করে এই জাহাজটিকেও।