ডিফেন্স

রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারনেই আমেরিকা থেকে যুদ্ধাস্ত্র ক্রয়ের দিকে ঝুঁকছে ভারত?

নিউজ ডেস্কঃ রাশিয়া ভারতবর্ষের পরমবন্ধু। কারন একটা সময় এমন ছিল যে রাশিয়া সারা বিশ্বের সাথে লড়তে রাজি হয়েগিয়েছিল ভারতবর্ষের কারনে। ঠিক তেমনই রাশিয়ার থেকে সবথেকে বেশি যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করে ভারতবর্ষ। একটা সময় ভারতবর্ষের ৯০ শতাংশের উপর যুদ্ধাস্ত্র আসত রাশিয়া থেকে, তবে আসতে আসতে ইউরোপ এবং আমেরিকা থেকেও যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করা শুরু করে ভারতবর্ষ। তবে রাশিয়ার থেকে আসতে আসতে সরে গিয়ে এখন ইউরোপ এবং আমেরিকার থেকে বেশি পরিমাণে যুদ্ধাস্ত্র ক্রয় করা হচ্ছে।

পারফর্মেন্সের দিক থেকে অনেকাংশে রাশিয়া এগিয়ে থাকবে। তবে অসুবিধা হল রাশিয়ান স্পেয়ারপার্টসের ঠিক সময় না পাওয়া এবং দেখভালের সমস্যা। আর সেই কারনে প্রচুর সময় ভুগতে হয়েছে সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীকে।

১৯৮৮সালের মার্চ মাসের দিকে আসতে শুরু করে ৮টি সোভিয়েত টিউপোলেভ-১৪২ লং রেঞ্জ এ্যন্টি সাবমেরিন বিমান যা ২০১৭সালের মার্চে ফেজ আউট হয়। এই ৩ দশকে অর্থাৎ ৩০ বছরে ৮টি বিমান মোট ৩০,০০০ঘন্টার ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে।

অন্যদিকে ২০১৩সালে নৌবাহিনীতে আসত শুরু করে আমেরিকার ৮টি পি-০৮আই নেপচুন। যা ইতিমধ্যে ২৯,০০০ঘন্টা ফ্লাইট ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে। যেখানে রাশিয়ার বিমান টুউপোলেভের গড়ে বছরে ১০০০ঘন্টা ফ্লাইট করা সম্ভব হয়েছে সেখানে দাঁড়িয়ে আমেরিকার পি-০৮নেপচুন ৩,৮০০ঘন্টার বেশি ফ্লাই করেছে প্রতি বছরে। অর্থাৎ আমেরিকা এবং রাশিয়ার বিমানের পার্থক্যটা চোখে পরার মতো।

নৌবাহিনীতে এর বিরাট ক্ষমতা বৃদ্ধি ছাড়া আর কি কিছু বলা যেতে পারে? শুধু এক্ষেত্রে নয় বিমানবাহিনীর সুখোই এর স্পেয়ারপার্টসের জন্য একসময় ৬০ শতাংশ রাশিয়ার সুখোই যুদ্ধবিমান গুলি ব্যবহার করা যেতে পারতো। অর্থাৎ এক সময়ে মোট ফ্লিটের মাত্র ৬০শতাংশের কিছু বেশি সুখোই যুদ্ধবিমান ফ্লাই করার মত অবস্থায় ছিল। যদিও লোকাল স্পেয়ারপার্টস বানিয়ে এখন সেই স্থান পূরণ করে প্রায় ৮৫-৯০শতাংশে পৌছিয়েছে। তার প্রমান পাওয়া যায় কিছু বছর আগে ভারতের “গগনশক্তি” এক্সার্সাইজে। সেই সময় বিমানবাহিনীর দেখাভাল এবং টু ফ্রন্ট লড়াই এর জন্য ১১০০বিমান অংশ নেয়। সেই সময় যুদ্ধবিমানের মধ্যে ৯০শতাংশ ব্যবহার যোগ্য অবস্থায় ছিল। যা এখনও সর্বাধিক।

ভারতের নৌবাহিনীর কাছে আমেরিকার পি-০৮আই এর যে গুরূত্ব বিরাটভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। আর এই বিমানের স্ক্যনিং ক্ষমতা প্রথম প্রমান পাওয়া যায় মালয়শিয়ার এমএইচ-৩৭০ বিমান হারিয়ে যাওয়ার পর। সেইসময় ভারতের পি-০৮আই নেপচুনের পারফর্মেন্স দেখে নৌবাহিনী বেশ অবাক হয়েগেছিল। ভারতীয় নৌবাহিনী কখণও ভাবতে পারেনি পি-০৮ এর পারফর্মেন্স এত ভালো হতে পারে। আর সেই কারনে এত দ্রত এই বিমানের অর্ডার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী কিছু মাসের মধ্যেই আমেরিকার পি-০৮আই নেপচুনের সাথে শিঘ্রই সি গার্ডিয়ান লং রেঞ্জ ড্রোন ও এমএইচ-৬০আর রমেও যুক্ত হতে চলেছে। আর তখন যে মহাসাগরে ভারতের অবস্থান এবং ক্ষমতা দুই আরও বৃদ্ধি পাবে তা বলাই বাহুল্য। আগামীদিনে ভারতে রুশ আধিপত্য ব্যপক ভাবে হ্রাস পেতে চলেছে। সেই স্থানে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় সমরাস্ত্রের আধিক্য ব্যপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *