ডিফেন্স

আমেরিকার প্রচুর যুদ্ধবিমানকে ধ্বংস করেছে রাশিয়ার এই বিমানটি। এক ঝলকে দেখেনিন এর ক্ষমতা

নিউজ ডেস্কঃ মিগ। এই যুদ্ধবিমান গুলির উপর ভর করে একাধিক দেশ বহু যুদ্ধে জয় পেয়েছে। শুধু তাই নয় শত্রুপক্ষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছিল এই মিগ যুদ্ধবিমান গুলি।

বিমানযুদ্ধ বা বিমানের ব্যাপারে যারা জানতে উৎসাহী, তাদের সবার কাছেই মিগ খুব পরিচিত এবং জনপ্রিয় নাম। আর হবেই বা না কেন বলুন তো? একটি পরাশক্তির বিক্রমের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে গত প্রায় ৬০ বছর ধরে এই বিমান পরিচিত সারা বিশ্বে। মিগ ঘরানার বিমানকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বিশ্বের দেশ গুলিতে প্রচুর গবেষণা চালানো হয়েছে। লেখা হয়েছে গল্প, বানানো হয়েছে সিনেমা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কিছুদিন পর, অর্থাৎ ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে মিগ ডিজাইন ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর প্রধান ছিলেন আরটেম মিকোয়ান আর মিকাহিল গুরোভিচ নামের দুই ইঞ্জিনিয়ার। সোভিয়েত বিমান শিল্পের বৈশিষ্ট্য ছিল অনেকটা এরকম- কেন্দ্র থেকে সেনাবাহিনীর পরামর্শমতো নানান চাহিদা জানিয়ে ডিজাইন ব্যুরোগুলোতে পাঠানো হতো। পরে ব্যুরো থেকে ডিজাইন পাঠানো হলে বিমানটি কারখানা থেকে তৈরি করা হতো।

১৯৪০ সালে মিগের প্রথম যুদ্ধবিমান অর্থাৎ মিগ-১ কে প্রথমবার আকাশে দেখা যায়। এরপর দেখা যায়  মিগ-৩ কে। এই বিমানগুলো আকাশের অনেক উঁচুতে ওড়ার পাশাপাশি একাধিক ক্ষমতাও ছিল। পরে ১৯৪৬ সালের দিকে মিগ সিরিজের প্রথম জেট বিমান হিসেবে তৈরি করা হয় মিগ-৯। যা আজও জনপ্রিয় যুদ্ধবিমান গুলির তালিকায় রয়েছে।

মিগ-১৫ (ন্যাটো নাম: ফ্যাগট)
১৯৫০ সালের ৩০ নভেম্বর। আমেরিকার একটি বি-২৯ বোমারু বিমান কোরিয়ার উত্তরাংশে উড়ছে। আচমকা ছোট্ট একটি যুদ্ধবিমান এসে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করেই পালিয়ে যায়। বি-২৯ এর গানম্যান বুঝতেই পারলেন না জে ব্যাপার টা কি হল? তবে গতিবেগ দেখে পশ্চিম বিশ্বের পাইলটরা বুঝে গিয়েছিলেন, জে খুব শক্ত কোনো যুদ্ধবিমানের হাতে পড়তে চলেছেন তারা। এভাবেই যুদ্ধে প্রবেশ করে বিখ্যাত মিগ-১৫ যুদ্ধবিমান।

ঘণ্টায় প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার গতিবেগে উড়তে পারা মিগ-১৫ প্রথমবার আকাশে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে এরপর ১৯৪৯ সালে এটি সার্ভিসে আসে। পরের বছরই বেঁধে যায় কোরিয়া যুদ্ধ। সেখানে মিগ-১৫ তার সেই সময়কার সর্বাধুনিক ডিজাইন, সুইপ্ট উইং, আড়াই হাজার কিলোমিটার রেঞ্জ নিয়ে খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি দেশের বিমানবাহিনীতে যোগ দিয়েছে এই ভয়ংকর যুদ্ধবিমানটি। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজারের বেশি মিগ-১৫ বানানো হয়েছে। দুটি রকেট বা বোমা ছাড়াও দুটি কামান সংযুক্ত রয়েছে এই বিমানে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে অনেক জার্মান বিজ্ঞানীকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পাঠানো হয়েছিল,  আর তারপরেই সোভিয়েতরা মিগ-১৫ এর প্রাথমিক কাজ শুরু করে। পরে ব্রিটিশদের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। প্রথম যখন চীনা বাহিনীর ছদ্মবেশে সোভিয়েত পাইলটরা মিগ-১৫ নিয়ে কোরিয়ার আকাশে হানা দিয়েছিল, সেইসময় পশ্চিম বিশ্বের বিমানবাহিনী এর গতিবেগ আর নিয়ন্ত্রণ দেখে অবাক হয়ে যায়। বিশালকায় মার্কিন বি-২৯ বোমারু বিমান গুলিকে প্রায়শয় নাজেহাল করে ছাড়ত এই যুদ্ধবিমান গুলি। পাশাপাশি মার্কিন স্যাবর জেট (এফ-৮৬) এর বিরুদ্ধে এর যুদ্ধগুলোও খুব বিখ্যাত।

মিগ-১৫ এর একটু উন্নত সংস্করণ হল মিগ-১৭। ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সুপারসনিক যুদ্ধবিমানগুলোর ওপরে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে। মিগ-১৭ কে পরবর্তীকালে মিগ-১৯ এ পরিবর্তন করা হয়। যুদ্ধবিমান হিসেবে মিগ ১৯ ও বেশ সফলতা লাভ করেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *