বিধ্বংসী যুদ্ধ চলছে মুসলিম দেশ আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার মধ্যে। সামরিক দিক থেকে কোন দেশ এগিয়ে? কি বলছে সমীক্ষা?
নিউজ ডেস্কঃ আজারাইজান এবং আর্মেনিয়ার যুদ্ধ ইতিমধ্যেই যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে তা বলাই বাহুল্য। দুই দেশের যুদ্ধে একাধিক দেশ থেকে সাহায্য আসলেও আজারবাইজানকে ইতিমধ্যে পাকিস্তান এবং তুরস্ক সাপোর্ট করেছে, তবে আর্মেনিয়াকে সেভাবে কারও সাহায্য পায়নি, অপরদিক থেক সামরিক ক্ষমতার দিক থেকে আর্মেনিয়া বেশ কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে আজারবাইজানের থেকে।
আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের সামরিক শক্তির তুলনা :-
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২০ সাল অনুযায়ী :- সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৩৮টি দেশের মধ্যে আজারবাইজানের অবস্থান ৬৪, অন্যদিকে আর্মেনিয়ার অবস্থান ১১১-এ।
জনসংখ্যা :- আজারবাইজানের জনসংখ্যা ১ কোটি ৪৬ হাজার এবং আর্মেনিয়ার জনসংখ্যা মাত্র ৩০ লাখ ৩৮ হাজার।
আয়তনের :- আর্মেনিয়া মাত্র ২৯,৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং আজারবাইজানের আয়তন প্রায় তিনগুণ ৮৬, ৬০০ বর্গকিলোমিটার।
সৈন্য সংখ্যা :- গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ইনডেক্স অনুযায়ী, আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর মোট সদস্য ১ লাখ ২৬ হাজার। তাদের সংরক্ষিত বাহিনীতে রয়েছে ৩ লাখ কর্মী এবং সেই তুলনায়
আর্মেনিয়ার সৈন্য সংখ্যা অর্ধেকের কম। দেশটিতে কর্মরত সৈন্য রয়েছে মাত্র ৪৫ হাজার। সংরক্ষিত সেনা সদস্য হিসাবে রয়েছে ২ লাখ সদস্য।
প্রতিরক্ষা বাজেট :- আজারবাইজানের ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার, আর্মেনিয়ার ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার।
এয়ারক্রাফট :- আজারবাইজানের মোট এয়ারক্রাফটের সংখ্যা ১৪৮টি। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার এয়ারক্রাফট রয়েছে ৬৪টি।
এর মধ্যে আর্মেনিয়ার কোন যুদ্ধবিমান নেই, তবে হামলায় ব্যবহার উপযোগী অ্যাটাক এয়ারক্রাফট রয়েছে ৯টি।আজারবাইজানের যুদ্ধবিমান রয়েছে ১৭টি এবং তাদের অ্যাটাক এয়ারক্রাফট আছে ১২টি।
হেলিকপ্টার :- আজারবাইজানের হেলিকপ্টার রয়েছে ৮৮টি, যার মধ্যে ১৭টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। আর আর্মেনিয়ার হেলিকপ্টার রয়েছে ৩৭টি। তার মধ্যে ২০টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার।
সামরিক যান :- আজারবাইজানের ট্যাংক রয়েছে ৫৭০টি আর আর্মাড যানবাহন রয়েছে ১, ৪৫১টি এবং আর্মেনিয়ার ট্যাংকের সংখ্যা অনেক কম। তাদের মাত্র ১১০টি ট্যাংক রয়েছে। অন্যদিকে তাদের আর্মাড যানবাহনের সংখ্যা ৭৪৮টি।
আর্টিলারি :- আর্টিলারির দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে আজারবাইজান। দেশটির স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান রয়েছে ১৮৭টি আর ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে ২২৭টি।
আর্মেনিয়ার স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান রয়েছে ৩৮টি আর ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে ১৫০টি।
আজারবাইজানের যেখানে রকেট প্রজেক্টর রয়েছে ১৬২টি সেখানে আর্মেনিয়ার আছে অর্ধেকের কম, ৬৮টি।
নৌযান :- গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ইনডেক্স অনুযায়ী, আর্মেনিয়ার কোন রণতরী নেই। তবে আজারবাইজানের নৌ বাহিনীর মোট ৩১টি রণতরী রয়েছে। এর মধ্যে আজারবাইজানের একটি ফ্রিগেট, চারটি সাবমেরিন রয়েছে। আর্মেনিয়ার কোনটিই নেই।এছাড়া আজারবাইজানের মাইন অপসারণে সক্ষম সাতটি যুদ্ধজাহাজ আর উপকূলে টহল দিতে সক্ষম ১৩টি পেট্রল বোট আছে।
দুই দেশের কারোই বিমানবাহী রণতরী কিংবা ডেস্ট্রয়ার নেই।
অন্যান্য :- আর্মেনিয়ায় মোট ১১টি বিমানবন্দর রয়েছে, আজারবাইজানে রয়েছে ৩৭টি। আর্মেনিয়ার কোন বাণিজ্যিক জাহাজ নেই, তবে আজারবাইজানের বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে ৩১৩টি।
সড়কপথ, রেলপথ, বন্দরের দিক থেকেও আর্মেনিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে আজারবাইজান। আজারবাইজান তেল সম্পদে সমৃদ্ধ। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বড় একটি অংশ তারা রপ্তানি করে। তবে আর্মেনিয়ার তেল নেই। চাহিদার পুরোটাই তাদের আমদানি করতে হয়।