অবলাদের পাশে সংগীতশিল্পী সুপর্ণা ঘোষ
নিউজ ডেস্কঃ বিগত কয়েক মাস যাবৎ আমরা এক অতি আকস্মিক ব্যধি ও তার সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে কি করে মোকাবিলা করতে হয় তা নিয়ে ভেবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছি, তখন, আমাদের এই শহরেই বহু মানুষ, বহু জীব জন্তু অনাহারে একটু খাবারের আশায় হা-পিত্যেশ করে পথে পথে ঘুরেছে। আসলে মানুষেরই যখন মূল্য থাকে না তখন পশুরা বড় সামান্য হয়ে যায়। তাই বেশ কিছু নৃশংসতার ঘটনাও আমাদের চোখে পড়েছে, যেমন খাবার চাইতে বাড়ির আশেপাশে গেলে কুকুরকে পিটিয়ে মারা হচ্ছে, রাস্তায় হঠাৎ উল্টে যাওয়া দুধের টিন থেকে পড়ে যাওয়া দুধ আমুষ আর কুকুর ভাগ করে খেয়েছে। এই মাহামারী কালে এইরকম বহু চিত্র আগামীর পৃথিবীতে এক দুঃসময়ের দলিল হয়ে থেকে যাবে। এখনও সেই দুরারোগ্য ব্যধি আমাদের মধ্যে থেকে চলে যায়নি ঠিকই, তবু আমরা কেমন অকুতোভয় হয়ে রোগ মোকাবিলায় ধীরে ধীরে আবার পুরোনো ছন্দের জীবনে ফিরতে চাইছি, অভ্যস্ত হচ্ছি নতুন স্বাভাবিকত্বে। কিন্তু যারা সেদিন খেতে পাচ্ছিল না, মার খাচ্ছিল অথবা মরে গেছিল তাদের জীবন আজও একই। তারা পর নির্ভরশীল হয়েই এই জীবনটা কাটিয়ে দেবে।
আমাদের মধ্যে যারা একটু বিত্তবান তাদের খুব মানুষই হয়ত দুঃসময়ে এগিয়েছেন এই অবলা প্রাণীগুলোর পাশে। কিন্তু সংগীতশিল্পী সুপর্ণা ঘোষ হয়ত বিখ্যাত বা প্রচুর যশস্বী মানুষ নন, কিন্তু তিনি এগিয়েছিলেন। এবং আজও সেই একই ভাবে দুঃস্থ অসহায় মানুষ থেকে অবলা জীবগুলোকে প্রতিদিনের প্রাত্যহিক চাহিদা মিটিয়ে সামান্য সুস্থ জীবনের আলোর পথে কিঞ্চিৎ এগিয়ে দিচ্ছেন। শিল্পী হিসাবে কুমার শানু বা কুনাল গাঞ্জাওয়ালার মত ব্যক্তিত্বদের সাথে কাজ করেও তিনি মাটির সংস্পর্শে থাকাটা ভোলেননি। বরং এই অসময়ে নিশ্চুপে যে ভাবে অসহায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা অনেক খ্যাতনামা মানুষকেও পেছনে ফেলে দেওয়ার মত। আসলে কথায় বলে শিল্পীর মন আকাশের মত উদার হতে হয়। উনি আসলেই সেই উদারতার মধ্যে দিয়ে প্রমাণ রাখলেন প্রকৃত শিল্পীসত্তার। রাস্তার সমস্ত কুকুর থেকে দুঃস্থ মানুষ যার কাছে নিরাপদ আশ্রয় ও শুশ্রূষা খুঁজে পায়, তিনিই সেই সুপর্ণা ঘোষ।