আমেরিকাকে হটিয়ে রাশিয়া কেন পৃথিবীর শাসক হয়ে উঠতে পারছে না?
নিউজ ডেস্ক – সব দেশই চায় নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে। কিন্তু বেশ কিছু কারণ ও প্রতিবন্ধকতার জন্য সেটি পেরে ওঠে না। এক্ষেত্রে ঠিক একই কারণে দেখা দিয়েছে। আমেরিকার তুলনায় রাশিয়ার কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারণে ও সঠিক মতো দিক নির্দেশনার অভাবে রাশিয়া প্রথম হতে পারেনি যদিও এখনও দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে আমেরিকার তুলনায় রাশিয়ার শত্রু বেশি। চারিদিক থেকে রাশিয়াকে ঘিরে ধরেছে প্রতিবেশী দেশ গুলি। যেমন পশ্চিমে রয়েছে শক্তিশালী ইউরোপ, পূর্বে রয়েছে ইতিহাসে অন্যতম প্রতিযোগী চীন এবং জাপান। তবে জাপানের সঙ্গে ছিল রাশিয়ার নৌ শত্রুতা। আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে পার্থক্য করলে দেখা যাবে আমেরিকার কাছে বিশ্বসেরা নেভি থাকলেও রাশিয়ার কাছে ছিল ল্যান্ড ফোর্স। সেই কারণেই বরাবরই ভূমির দিকে নজর রাখত রাশিয়া, যেটা আমেরিকাকে করতে হয়নি।
ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে বরাবরই শক্তি প্রদর্শনের ক্ষেত্রে পরাজিত হয়েছে রাশিয়া। যেমন – ১৯১৭ সালে নিকোলাস জাপানের সাথে হেরে যাওয়ার রুশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। সেই কারণেই ব্যাপক হারে ঋণ হয়ে যাওয়ায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল রাশিয়া। এরপর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ভঙের কারণে ভৌগোলিক রাজনীতির ব্যর্থ হয়। এরপর আফগানিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল।
আবার অন্য কারণ হিসেবে বলা যায় কিছুটা দুর্নীতির জন্য রাশিয়ার প্রথম হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে পারেনি। কারণ কমিউনিজমের ভূমিতে ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে স্ট্যালিন তার বিরুদ্ধে ওঠা সফল আওয়াজ আস্তে আস্তে গুপ্ত হত্যার মাধ্যমে দমন করে দিয়েছিলেন। সে কারণেই বহু দক্ষ কর্মকর্তার মৃত্যু হওয়ায় জার্মানের অগ্রশন ঠেকানোর ক্ষমতা ছিল না। আর এইসব ব্যাপারে হিটলার জানতো বলেই সে সোভিয়েতের উপর আক্রমণ শুরু করেছিল।
আবার আফগানিস্তানে হামলার পর গর্ভাচেভের সংস্কার কাজ ছিল যথেষ্ট সন্দেহজনক। ঘনঘন আমেরিকা সফর ও সোভিয়েতে ইচ্ছা করে বিপ্লব ও রোষানোল ডেকে এনেছিলেন তিনি। মূলত ক্রেমলিনই চায়নি সোভিয়েত থাকুক।কারণ অধিভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর ভার নিতে পারছিল না কেন্দ্রীয় সরকার। সেই কারণে সামরিক ক্যু সাজিয়ে গর্ভাচেভ জনগনকে সন্তুষ্ট করার জন্য ইয়েলিতসিনকে ক্ষমতায় বসান।
যদিও নতুন রাশিয়াকে দখল করার জন্য একাধিক দেশ থেকে হুমকি আসতে শুরু করেছিল। আর সেই হুমকি বন্ধ করতে চেচানদের বিরুদ্ধে দেশের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন ইয়েলিতসিন। কার্যত সেই নৃশংস যুদ্ধেও মৃত্যু হয় একাধিক সেনাবাহিনীর।
কার্যত এই যুদ্ধের পর দেশের উপরই ক্ষুব্দ হয়ে উঠেছিল সেনা জওয়ানদের একাংশ। কারণ সেনাবাহিনীর মত অনেকেই বলেছিলেন যে “যুদ্ধের সময় কেন্দ্রীয় সরকার কথা দিয়েছিলেন স্ট্রাইক দিয়ে সাপোর্ট দেবেন। কিন্তু তারা সে কথা না রাখায় অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। এমন কি ব্যাপার টা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখলে মনে হবে পুরো বিষয়টাই সাজানো ছিল এবং এই বিষয়ে জানতো চেচানরা।” সেই কারণেই সেনাবাহিনীকে শান্ত করতে অবশেষে ক্ষমতায় নিয়ে আসলো পুতিনকে। এরপরেই ক্রেমলিনকে শক্ত হতেই সামলেছেন পুতিন। তবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ধর্মীয় আগ্রাসনের জন্য ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল রাশিয়াকে।