প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস দেয় মহাভারতের এই স্থান
নিউজ ডেস্কঃ ভীমকুণ্ড হল মহাকাব্যের একটি ঐতিহাসিক স্থানের নাম। নীলকুণ্ড নামেও পরিচিত এই স্থানটি। পৃথিবীর মহাকাব্যগুলির মধ্যে অন্যতম মহাভারত পাওয়া যায় এই জলাশয়ের নাম। নানা রহস্যময় কাহিনী রয়েছে এই ভীমকুণ্ডকে ঘিরে।বলায় হয় যে কোন সাধারণ জলাশয় নয় এই ভীমকুণ্ড।নানা রহস্য কাহিনী রয়েছে এই ভীমকুণ্ডকে ঘিরে।
ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছতরপুর জেলায় অবস্থিত এই ভীমকুণ্ডটি। প্রাকৃতিক জলাশয় হল এই ভীমকুণ্ড। একটা সাধারণ জলাশয়ের মতই ভীমকুণ্ড দেখতে তবে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করেন যে এই ভীমকুণ্ডটি সাধারণ কোন জলাশয় নয়।তারা মনে করেন যে এশিয়া মহাদেশের আসন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সংকেত দেয় এই জলাশয়।এছাড়াও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আঁচ পেলেই নাকি ভীমকুণ্ডের শান্ত জলে একটা আলোড়ন শুরু হয়ে যায়। ২০০৪ এর সুনামির সময় ভীমকুণ্ডের এই অদ্ভুত ক্ষমতা দেখতে পেয়েছিলেন ওখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা।ওই সময়ের নাকি ১৫ ফুট উঁচুতে উঠতে দেখা যায় শান্ত ভীমকুণ্ডের জল।এছাড়াও আরো একটি বিশেষত্ব হল যে এই জলাশয়টির সঠিক গভীরতা এখনো পর্যন্ত কেউ মাপতে সক্ষম হননি। এই রহস্য ভেদ করতে স্থানীয় প্রশাসন তো নয় বিদেশী বৈজ্ঞানিকদের একটি দলও ব্যর্থ হয়েছিলেন। এই জলাশয়ে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হল যে ২৫০ ফুট গভীরে যাবার পরই এই জলাশয়ে তীব্র স্রোতের উপস্থিতি টের পাওয়া যায় তবে এখনও পর্যন্ত ভেদ করা যায়নি এই স্রোতের উৎপত্তির রহস্য। তাই এটি পৃথিবীর একমাত্র জলাশয় যেখানে ২৫০ ফুট নিচেও ভয়ঙ্কর স্রোত দেখতে পাওয়া যায়। ১৯৭৭ সালে জেলা প্রশাসন ভীমকুণ্ডের জল স্তর কমানোর জন্য তিনটে পাম্প লাগিয়ে ছিল তবে পাম দিয়ে জল তোলার পরেও এক ইঞ্চিও জলস্তর কমেনি।এই জেলা কার্যালয় থেকে ৭৭ কিলোমিটার দূরে ঘন জঙ্গলে ভীমকুণ্ডের জলে সূর্যের আলো পড়লে জলের রঙ নীল দেখায় এবং ঝকঝক করে। এই জন্য ভীমকুণ্ডের অপর একটি নাম নীলকুণ্ড।
তবে বলায় হয় যে এই নীলকুণ্ডের সাথে নাকি এর মিলও খুঁজে পাওয়া যায় পুরাণে উল্লিখিত ভীমকুণ্ডের। ভীমকুণ্ড নাম কেন হল? এই কাহিনীটিও একটি রোমাঞ্চকর কাহিনী ।এই জলাশয়ের নাম জড়িয়ে আছে মহাভারতের সময়ের সঙ্গে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে,যখন পাণ্ডবরা ১২ বছর বনবাস এবং এক বছর অজ্ঞাত বাসে কাটাচ্ছিলেন তখন ওই ভীমকুণ্ডের পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন।তখন সেই জায়গায় সেই সময় ভীমকুণ্ড ছিলনা।সেই সময় দ্রৌপদী খুব জলের পিপাসা পায় তবে পিপাসা মেটানোর মতো কোন জলাশয় খুঁজে পাননি গভীর অরণ্যের মধ্যে পাণ্ডবরা।এইজন্য দ্রৌপদী পিপাসা মেটাতে ভীম তার গদা দিয়ে মাটিতে জোরে আঘাত করেন এবং গদার এই শক্তিশালী আঘাতে মাটি ভেদ করে জল বেরিয়ে আসে।এবং সেই থেকেই ভীমকুণ্ড নামের উৎপত্তি হয়। ভীমকুণ্ডের জলকে স্থানীয় বাসিন্দারা খুব পবিত্র বলে মনে করেন।এবং মকর সংক্রান্তির দিন ওই জলাশয়ে স্নান করা অত্যন্ত পবিত্র বলে তাঁরা মনে করেন।