অফবিট

বিজ্ঞান ছাড়াও আর কিসের সাথে যুক্ত ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়?

নিউজ ডেস্কঃ দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা যুদ্ধ করছে তাদেরকে আমরা স্বাধীনতা সংগ্রামী বলে থাকি। এই বিপ্লবীরা আমাদের দেশের জন্য শহিদ হয়ে অমর হয়ে আছে আমাদের মনে।তাই তাদের গুরুত্ব আমাদের কাছে অপরিসীম।কিন্তু এমন কিছু মানুষ আছেন যারা স্বাধীনতা সংগ্রামে যুদ্ধ না করেও আমাদের মনে অমর হয়ে আছে।কারন তাদের গুরুত্ব আমাদের কাছে কিছু কম নয়।এইরকমই একটি মানুষ হলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী প্রফুল্লচন্দ্র রায়। যিনি সরাসরি যুদ্ধ না করলেও গোপনে তিনি নিজের দেশের জন্য যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। এই মহান মানুষটি তার কাজ কর্মের দ্বারা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি তার দেশের প্রতি কতটা। এই বিষয়টি তার লেখার মাধ্যমেও উঠে আসেছে আমাদের কাছে।

কারন প্রফুল্লচন্দ্র রায় যখন ইংল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছিলেন তখন তিনি এক প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। এই রচনার বিষয়টি ছিল “সিপাহি বিদ্রোহের আগে ও পরে”।আর তিনি তার এই  প্রবন্ধ রচনা মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থা যেভাবে ভারতীয় জনগণের উপর শোষণ ও নিপীড়ন চালাচ্ছিল। তিনি জানতেন যে  এই লেখাটি লেখার ফলে তাকে নানান ধরনের সমস্যা সম্মুখীন হতে পরে  বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চটাতে পারে, তাঁর বৃত্তি বন্ধ হয়ে যেতে পারে,এমনকি তাঁর লেখা প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ শাসকরা রুষ্ট হবেন।তবুও তিনি এইসবের পরোয়া করেননি। অবশ্য পরে  এর জন্য ইংল্যান্ডের বুদ্ধিজীবী সমাজ তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন এবং এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেই প্রবন্ধ এক পুস্তিকার আকারে প্রকাশিত করেছিলেন। এইভাবেই তিনি তার সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।     

তবে তিনি শুধু তার লেখার মাধ্যমেই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সাহায্য করেননি।তিনি নানাভাবে বিপ্লবীদের সাহায্য করে গেছে যেমন- বিপ্লবীরা যাতে  গোপনে অস্ত্র কিনতে পারে তার ব্যবস্থা করে দিতেন এমনকি তাঁর এবং জগদীশচন্দ্র বসু ল্যাবরেটরিতে ভগিনী নিবেদিতা পাঠানো ছেলেদের বোমা তৈরি করা শেখাতেন।এছাড়াও ভারতের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক সভাসমিতিতে তিনি সভাপতিত্ব করতেন এবং তাঁর বক্তৃতার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন স্বদেশী আন্দোলনের বার্তা ।এইভাবে তিনি তাঁর যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছেন ইংরেজদের বিরুদ্ধ। তাই প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে   ব্রিটিশ গোয়েন্দারা বলতেন “বিজ্ঞানীর বেশে বিপ্লবী”। আর প্রফুল্লচন্দ্র নিজে বলতেন যে, “আমি বৈজ্ঞানিক, গবেষণাগারেই আমার কাজ, কিন্তু এমন সময় আসে যখন বৈজ্ঞানিককেও দেশের আহ্বানে সাড়া দিতে হয়”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *