আমেরিকার শিকাগোর কোন দম্পতির কারনে আজও এই ম্যানশান ভূতুড়ে জানা আছে?
নিউজ ডেস্ক – বলা হয় জীবনের মায়া ত্যাগ করতে পারলেও সংসারের মায়া ত্যাগ করা বড়ই কঠিন। যার কারণেই নানান ঝক্কি ঝামেলা সহ্য করেও সংসার করে যায় সকলে। তবে দেহের মায়া ত্যাগ করে নিজের সংসারের মায়া ত্যাগ না করার এক জ্বলন্ত নিদর্শন হলো আমেরিকার শিকাগো শহরে অবস্থিত সৌন্দর্য্যের পসরা মেফ্লাওয়ার প্লেসস্টি। শোনা যায় এই ম্যানশনের দম্পতি মৃত্যুর পরেও বাস করছে এইখানে।
শিকাগো বাসীদের ভাষ্যমতে ভৌতিক উপরে ওঠা মেফ্লাওয়ার প্লেস্টি ম্যাননশনটির ভূত হয়ে ওঠার পেছনে এক বিশেষ গল্প রয়েছে। শোনা যায় ১৯১৭ সালে ম্যানশনটি তৈরি করেন জন গ্রেভ শেড নামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। তৎকালীন প্রথা অনুযায়ী মিঃ শেড তার কন্যা লরার বিয়েতে এই ম্যানশনটি উপহার দেন।
সাড়ে চব্বিশ হাজার বর্গফুটের এই বাড়িতে ছিল দশটি বেডরুম, তেরটি বাথরুম এবং এগারোটি ফায়ারপ্লেস। মিসেস লরা এবং তার স্বামী মিঃ চার্লস সুয়েপি এখানে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে শুরু করলেন। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে একদিন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় মিসেস লরার। তবে স্ত্রীকে হারিয়ে নিঃসঙ্গতায় দীর্ঘদিন ভুগছিলেন তার স্বামী চার্লস সুয়েপি। যার কারণে অবসন্নতা গ্রাস করায় ১৯৩৭ সালে নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী’ হন তিনি। তবে এখানেই শেষ হয়নি দম্পতির প্রেম কাহিনী।
পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করার পরেও নিজেদের প্রেম অটুট রেখে চলেছেন তারা। জানা যায় তাদের মৃত্যুর পর প্রায় ৪৬ বৎসর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল সৌন্দর্যের নিদর্শন এই ম্যানশনটি। দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকা পরিতক্ত বাড়িতে একাধিকবার ভুতুড়ে কান্ড দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মতে পুরো বাড়িটি নোংরা ধরা পড়লেও দম্পতির বেডরুমের জানালাটি থাকত সর্বদায় পরিষ্কার। এছাড়াও প্রায় ম্যানশন থেকে একাধিক নানা বিকট আওয়াজ আসতো। এমনকি সেই বাড়ির সার্ভেন্টদেরও লরা ও চার্লসকে খাবার সার্ভ করতে দেখেছেন তারা। এইসকল ভুতুড়ে কান্ড শোনার পর ম্যানশনটি কিনতে রাজি হয়নি কোনো মানুষই। তবে পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে ম্যানশনটির ক্রেতা পাওয়া যায়। এরপর ম্যানশনটিকে একদফা সংস্করণ করা হয়। ২০১১ সালে ১৮ মিলিয়ন ডলারের ম্যানশনটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও বর্তমানে ৯ মিলিয়ন ডলারেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। ভারতীয় কারেন্সিতে হিসাব করলেন ৯ মিলিয়ন ডলারের অর্থ ৬৬ লক্ষ টাকা।