শকুনিদের ১০০ ভাইয়ের মধ্যে মাত্র ১ ভাই শকুনিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। কি এমন কারন ছিল এর পেছনে?
নিউজ ডেস্কঃ মহাভারতে প্রধান চরিত্রগুলির মধ্যে একটি ছিল ধৃতরাষ্ট্র। যিনি প্রত্যক্ষভাবে মহাভারতের যুদ্ধ না ঘটালেও পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে ঘটার পিছনে দায় কম ছিল না তাঁর। তবে তিনি যে শুধুমাত্র তাঁর ভাইয়ের পরিবারের সাথে অন্যায় করেছিল তা কিন্তু নয়। তিনি গান্ধারীর পরিবারের সাথেও অন্যায় করেছিল। অন্যায় বলা ভুল হবে তাদেরকে সে হত্যা করেছিল। কি শুনে অবাক হচ্ছেন তো? হওয়াটায় স্বাভাবিক। কিন্তু এটি সত্য যে ধৃতরাষ্ট্র গান্ধারীর পরিবারকে হত্যা করেছিল। কিন্তু কেন এমনটা করেছিল ধৃতরাষ্ট্র? এর পিছনে কি কারন আছে? গান্ধার দেশের রাজকুমারী গান্ধারীর সাথে বিবাহ হয়েছিল রাজা ধৃতরাষ্ট্র। জ্যোতিষীরা গান্ধারীর কুন্ডুলি দেখে বলেছিলেন যে তাঁর কুন্ডুলি দুটি বিবাহের যোগ আছে। এবং তাঁর প্রথম স্বামীর সাথে বিবাহ হওয়ার পরই তার প্রথম স্বামীর মৃত্যু ঘটবে। তবে তাঁর দ্বিতীয় স্বামী জীবিত থাকবে। গান্ধারীর এই দোষটিকে কাটানোর জন্য একজন সাধু পরামর্শ দেন রাজকুমারী গান্ধারীর বিবাহ একটি ছাগলের সাথে করানোর। সেই পরামর্শ অনুযায়ী গান্ধারীর পরিবার গান্ধারীর বিবাহ একটি ছাগলের সাথে করেছিলেন। এবং পরে সেই ছাগলটিকে বলি দিয়ে দেয়। আর এই ঘটনাটি গান্ধারী এবং তার পরিবার লুকিয়ে যান ধৃতরাষ্ট্রের কাছে। যার ফলে ধৃতরাষ্ট্র এই বিষয় অবগত থাকে না। তবে তিনি বিবাহের সময় জানতে না পারলেও বিবাহে পরে জানতে পারেন এই ঘটনাটি। যার ফলে ধৃতরাষ্ট্র খুবই ক্রোধিত হয়ে যান গান্ধারীর পরিবারের ওপর।
ক্রোধের বশে তিনি গান্ধার নরেশ সুবল এবং তাঁর 100 পুত্রকে কারারুদ্ধ করার আদেশ দেন এবং তাদের ওপর খুব অত্যাচার করে। বন্দী গান্ধার নরেশ সুবল এবং তাঁর পুত্রদের খুব কম পরিমাণ খাবার খেতে দেওয়া। যার জন্য সুবলের পুত্রদের একে পর এক মৃত্যু ঘটে। সুবল তাঁর পুত্রেদের মৃত্যু দেখে খুবই প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে। এইজন্য তিনি তার সবথেকে ছোট পুত্র শকুনিকে কৌরবদের বিনাশের জন্য তৈরি করেন। শকুনিকে জীবিত রাখার জন্য সুবল তাঁর বাকি পুত্রদের খাবারও শকুনিকে খাওয়াতেন যেন শকুনি তার পরিবারের উপর হওয়া অত্যাচারের প্রতিশোধ নিতে পারে। সুবল তাঁর মৃত্যুর পূর্বে ধৃতরাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ করেন যেন তার পুত্র শকুনিকে তিনি কারাগার থেকে মুক্ত করে দেন। সুবল তাঁর মৃত্যুর আগে শকুনিকে তাঁর অস্থি দিয়ে পাশা বানাতে বলেছিলেন। আর পরে এই পাশায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল কৌরব বংশের বিনাশের কারণ। সবার আগে শকুনি সবার বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। রাজকুমার দুর্যোধনের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন মামা শকুনি। পান্ডবদের বিরুদ্ধে দুর্যোধনদের লড়াই করার প্ররোচনা দিতেন মামা শকুনি। যার ফলে সূচনা হয়েছিল মহাভারতের ওই ভয়ানক যুদ্ধের।