ভগবান শিবের পিতার নাম জানেন?
নিউজ ডেস্কঃ ভগবান শিবকে যাকে আমরা ধ্বংসের দেবতা বলে জানি।যার কোন অন্ত নেই।সেই দেবতার কিভাবে জন্ম হয়েছিল ? এই প্রশ্নটা আমাদের সবার মনেই উঠে।যার উত্তর আমাদের কাছে অজানা না।তাই এবার আর দেরি না করে জেনে নিন এই অজানা প্রশ্নে উত্তরটি যে ভগবান শিবের জন্ম কিভাবে হয়েছিল বা ভগবান শিবের পিতা কে?
আপনাদের বলে রাখি যে শিবের জন্ম সংক্রান্ত কোন বিষয় কোন পূরণ বা কোন প্রাচীন বইতে নেই কিন্তু পুরানে এমন দুটি কাহিনী পাওয়া যায় তার থেকে আমরা শিবের জন্ম সম্পর্কে কিছু অনুমান করতে পারি শিবের জন্ম সম্পর্কে দুটি ধারণা প্রচলিত আছে
প্রথমটি হলো বহুকাল আগে একবার ভগবান শঙ্করের যখন সৃষ্টি তৈরি করার প্রয়োজন হল তখন তিনি শ্রীবিষ্ণুর আবির্ভাব ঘটালেন তিনি বিষ্ণুকে ধ্যান করতে বললেন নারায়ন যখন ধ্যানে মগ্ন তখন তার চারিদিকে সাগরের সৃষ্টি হল সেই সাগরে যেহেতু বিষ্ণু একাই কঠিন বস্তু তাই বিষ্ণুর নাভি থেকে পদ্ম ও পিতামহ ব্রহ্মার আবির্ভাব হল। পিতামহ ব্রহ্মাও গভীর ধ্যানে মগ্ন হয়ে থাকলেন এইভাবে কোটি কোটি বছর কেটে গেল তারপর যখন তাদের ধ্যানমগ্ন হলো তারা নিজেদের মধ্যে বিবাদ শুরু করে দিল এই নিয়ে যে কে আগে জন্মেছিলেন বা কে সর্বশ্রেষ্ঠ শেষে তাদের বিবাদ যুদ্ধ পর্যন্ত গড়িয়ে গেল যেহেতু বিষ্ণু এবং ব্রহ্মা সমান শক্তিশালী তাই এই যুদ্ধ হাজার হাজার বছর ধরে চলতে থাকল ভগবান-শিব যখন দেখলেন যে তাদের যুদ্ধ থামার কোনো সম্ভাবনা নেই তিনি তখন একটি অনন্ত স্তম্ভরূপে বিষ্ণু ও ব্রহ্মার মাঝখানে আবির্ভূত হলেন আর তখনই আকাশবাণী হল যে তোমরা দুজনের মধ্যে যে এই স্তম্ভের আরম্ভ বা অন্ত খুঁজে পাবে সেই সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হবে এই বাণী শুনে ভগবান বিষ্ণু স্তম্ভের নিচে চলে গেলেন আর পিতামহ ব্রহ্মা ওপরে চলে গেলেন তারপর অনেক খুজেও বিষ্ণুদেব এই স্তম্ভের অন্ত খুঁজে পেলেন না তখন বিষ্ণুদেব আবার সস্থানে ফিরে এলেন আর ভগবান শিবকে বললেন যে হে ভগবান আপনি অনাদি-অনন্ত আপনার স্বরূপ খোঁজা আমার মূল কথা ছিল আপনি আমাকে ক্ষমা করুন অপরদিকে ব্রহ্মা নিরন্তর উপরের দিকে যেতে থাকলেন এবং অনেক খুঁজেও যখন স্তম্ভের মাথা দেখতে পেলেন না তখন তিনি একটি ধুতুরা ফুল দেখতে পেলেন তিনি ফুলটিকে বললেন যে তুমি ভগবান শিবের কাছে গিয়ে বলবে যে আমি স্তম্ভের আরম্ভ খুঁজে পেয়েছি এবং তুমি তার সাক্ষী তারপর ব্রহ্মা সেই ফুল নিয়ে শিবের কাছে এলেন এবং বললেন যে আমি স্তম্ভিত উৎস খুঁজে পেয়েছি এবং এই ফুলটি তার সাক্ষী মহাদেব এই কথা শুনে ভয়ানক ক্রধিত হয়ে পড়লেন এবং তিনি বললেন এ স্তম্ভের কোন উৎস বা অন্ত নেই আমি অনন্ত পরিপূর্ণ আমি চরাচর আমি সম্পূর্ণ আমি অপূর্ণ ভগবান ব্রহ্মার তখন তার ভুল স্বীকার করলেন এবং ব্রহ্মা আর বিষ্ণু মিলে শিব কে বললেন যে উনি যেন তাদের মতোই নির্দিষ্ট সাকার রূপ ধারণ করে বিরাজ করেন মহাদেব সেই কথা মেনে সেই স্তম্ভ থেকে সাকার রূপের প্রকট হলেন যেই রূপকে আমরা এখন পুজো করি।
দ্বিতীয় প্রচলিত কাহিনী হল একবার এক ঋষি মহাদেবের কাছে জানতে চাইলেন যে তার পিতা কে? তখন শিব বললেন যে ব্রহ্মাই তার পিতা। ঋষি আবার জানতে চাইলেন তাহলে ব্রহ্মার পিতা কে? শিব বললেন বিষ্ণুদেব ব্রহ্মা দেবের পিতা। ঋষি আরো কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন যে তাহলে বিষ্ণুদেবের পিতা কে? শিব বললেন আমি বিষ্ণু দেবের পিতা। মহাদেবের এই কথা শুনে ঋষি আশ্চর্য হয়ে গেলেন এবং বুঝতে পারলেন শিবের জন্ম রহস্য জানা সত্যিই অসম্ভব।