অফবিট

বিষ্ণুর অবতারকে মহাদেব বধ করার পেছনে কি কারন ছিল?

নিউজ ডেস্ক: নৃসিংহদেব যাকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার বলে মানা হয়। বলা হয়ে থাকে যে যখনই এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে অধর্ম বেড়ে যায় তখন অধর্মের বিনাশ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করার জন্য যুগে যুগে ভগবান নানান রূপে অবতীর্ণ হয়েছেন। আর এই  নৃসিংহ অবতার  অধর্মের বিনাশ করতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। হিরণ্যকশিপুরকে বধ করে অধর্মের বিনাশ করেন নৃসিংহদেব। অধর্ম বিনাশকারী নৃসিংহদেবকেই নাকি বধ করেছিলেন মহাদেব। শুনে অবাক হচ্ছেন তো। হওয়াটাই স্বাভাবিক।কারন বিষ্ণু এবং মহাদেব বলা হয় হরিহর আত্মা। তাহলে বিষ্ণুর অবতার নৃসিংহদেব কে কেন মহাদেব বধ করেছিলেন? কি বলছে এই নিয়ে পুরান জেনে নিন।

হিরণ্যকশিপুর নামে এক অত্যাচারী রাজা ছিলেন। তিনি খুব অহংকারী ছিলেন।অহংকারের বশে তিনি নিজেকে ভগবানের সমকক্ষ ভাবতে শুরু করেন। তাঁর প্রজারা তার অত্যাচারের ভয় তাকে ভগবান মানতেও শুরু করেন।কিন্তু তার পুত্র প্রহ্লাদ ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর ভক্ত।প্রহ্লাদ তার বাবা রাজা হিরণ্যকশিপু কে ভগবান বলে মানতেন না।তাই হিরণ্যকশিপুর তার রাক্ষসী বোন হোলিকাকে  দায়িত্ব দিলেন প্রহ্লাদ কে হত্যা করার জন্য। এদিকে রাক্ষসী হোলিকা বর প্রাপ্ত ছিল যে আগুনে পুড়ে তার কখনো মৃত্যু হবে না। তাই হিরণ্যকশিপুর নির্দেশে হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসে পড়ে কারণ সে জানে আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হবেনা।প্রহ্লাদ ছিলেন ভগবান বিষ্ণুর চরম ভক্ত। তাই ভক্ত প্রহ্লাদ কিন্তু অগ্নিদগ্ধ হননি। প্রহ্লাদের সত্তিকারের ভক্তিতেই ভগবান বিষ্ণু তাকে রক্ষা করেন।কিন্তু হোলিকা তার প্রাপ্ত বরের অন্যায় প্রয়োগ করায় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।এরপর যখন হিরণ্যকশিপু প্রহ্লাদকে প্রতারিত করছিলেন তখন একটি স্তম্ভ থেকে ভগবান বিষ্ণু নৃসিংহ অবতার ধারন করে অবতীর্ণ হন।তারপর নৃসিংহদেব সন্ধ্যার সময় হিরণ্যকশিপুকে তার কোলে বসিয়ে তার নখ দিয়ে  হিরণ্যকশিপুর বক্ষ চিরে তাঁকে হত্যা করে।আর এইভাবে অধর্মের বিনাশ করেন  নৃসিংহদেব। কিন্তু এই ঘটনার পরও ভগবান নৃসিংহদেবের ক্রোধ শান্ত হলো না। তার এই ক্রোধ দেখে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবাই ভয় পেতে লাগে।এরকম পরিস্থিতি দেখে সব দেবতারা ভগবান শিবের কাছে যান এবং অনুরোধ করেন যাতে নৃসিংহদেবের ক্রোধ তিনি শান্ত করেন। ত

খন মহাদেব নরসিংহ দেবকে শান্ত করার জন্য বীরভদ্রকে পাঠালেন তবে বীরভদ্র তার ক্রোধ শান্ত করতে পারল না।তাই তখন মহাদেবকে সর্বেশ্বর অবতার ধারণ করতে হয়। মহাদেবের এই অবতারকে আবার সরব অবতারও বলা হয়। এই অবতারটিতে ছিল মানুষ পাখি এবং বাঘের সমাবেশ।মহাদেব সর্বেশ্বর অবতার ধারণ করে নৃসিংহদেবের ক্রোধ শান্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু তাতেও নৃসিংহদেবের ক্রোধ শান্ত করতে পারলেন না। এরপরে শুরু হল তাদের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি একটানা 18 দিন চলার পর নৃসিংহদেবের ক্রোধ সময়ের সাথে সাথে শান্ত  হতে থাকে এবং  তিনি বুঝতে পারেন যে মহাদেবে এই অবতারটি ধারণ করেছিলেন তার ক্রোধ শান্ত করার জন্য। তাই নৃসিংহদেব তার ক্রোধ শান্ত করে বিষ্ণুর রূপ নিয়ে সেখানে বিলীন হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *