শ্রীকৃষ্ণের রক্ষা করলেও অর্জুনের বংশধর পরীক্ষিৎ কেন প্রান হারিয়েছিলেন?
নিউজ ডেস্কঃ পরীক্ষিৎ যার প্রানের রক্ষা করেছিলেন স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ।এই কাহিনীর বর্ণনা উল্লেখ করা রয়েছে মহাভারতে।তিনিই ছিলেন পান্ডব তথা কুরু বংশের একমাত্র প্রদীপ। কিন্তু সেই প্রদীপও গিয়েছিল নিভে অর্থাৎ মৃত্যু ঘটেছিল অভিমন্যুর পুত্র পরীক্ষিৎ এর। স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের রক্ষা করা পরীক্ষিৎ এর প্রান কে কেড়ে নিয়েছিলেন? কিভাবে হয়েছিল পরীক্ষিৎ এর মৃত্যু?
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, বৃদ্ধ বয়সে পরীক্ষিৎ একদিন মৃগয়া করতে গিয়ে বাণবিদ্ধ করে এক মৃগকে এবং তাঁকে অনুসরণ করতে করতে ক্ষুধিত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। ওই গভীর বনে থাকা শমীক নামে এক মুনিকে দেখে তাঁকে প্রশ্ন করে ওই মৃগ সম্পর্কে।কিন্তু মুনি তখন মৌনব্রত পালন করছিলেন।যার কারনে তাঁকে কোনো উত্তর দেন না। এর ফলে পরীক্ষিৎ ওই মুনির ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে গিয়ে ধনু দিয়ে একটি মৃত সাপ তুলে তার স্কন্ধে পরিয়ে দেন।এরপর সে ফিরে আগে তার নিজের রাজ্যে।ওই সময় শমীক মুনির পুত্র শৃঙ্গী সেখানে উপস্থিত ছিল না।তবে গৃহ থেকে ফেরার সময় কৃশ নামে তার এক বন্ধুর কাছে জানতে পারেন যে তার পিতাকে কীভাবে পরীক্ষিৎ অপমান করেছেন।এটি জানার পর সে খুব ক্রোধিত হয়ে যায় পরীক্ষিৎ এবং তাঁকে অভিশাপ দেন যে তার পিতা নিরপরাধ হওয়া সর্তে অপমান করার কারনে সাতদিনের মধ্যে তার তক্ষক নাগের দংশনে মৃত্যু ঘটবে।শমীক মুনির এক শিষ্যের কাছ থেকে ঋষিপুত্রের শাপ কথা জানতে পেরে অত্যন্ত দুঃখিত এবং চিন্তিত হয়ে পরেন পরীক্ষিৎ।এই শাপকে প্রতিহত করার জন্য তিনি মন্ত্রীদের সাথে পরিকল্পনা করে একটি স্তম্ভের ওপর সুরক্ষিত এক প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং সেখানে নিয়োগ করেন বিষচিকিৎসক ও মন্ত্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণদের।একমাত্র মন্ত্রীগণই তার কাছে রাজকার্য উপলক্ষে যেতে পারতেন। সপ্তম দিনে কাশ্যপ নামক বিষচিকিৎসক জন্য রাজার কাছে যাচ্ছিলেন।সে সময় ব্রাহ্মণের বেশে তক্ষক নাগ তার কাছে এসে উপস্থিত হন এবং তাকে অর্থের পরিবর্তে ফিরে যেতে বলেন। কাশ্যপ তখন ধ্যান করে দেখেন যে ব্রাহ্মণের অভিশাপে রাজা রাজার আয়ু শেষ হয়ে গেছে। তাই তিনি তক্ষকের কাছ থেকে ধন নিয়েই ফিরে চলে যান।এরপর তক্ষক তার কয়েকজন নাগকে ব্রাহ্মণের বেশে নানা ফলমূল নিয়ে রাজাকে উপহার দেন।ওই ফল খেতে গিয়ে পরীক্ষিৎ এর গলায় ভিতর প্রবেশ করে ক্ষুদ্র কৃষ্ণনয়ন তাম্রবর্ণ কীট।তখন তক্ষক নাগ নিজ রূপ ধারণ করে সগর্জনে দংশন করে তাকে। মৃত্যু হয় মহারাজ পরীক্ষিৎএর ।এইভাবেই ঋষিপুত্রের অভিশাপ পূরণ হয়।