অফবিট

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডকে ডাউন আন্ডার বলার পেছনে কি কারন রয়েছে জানেন?

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ঠিক কবে সৃষ্টি হয়েছে তার সঠিক কোন তথ্য আজও পাওয়া যায়নি।  কিন্তু দেশীয় মানচিত্র অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড ম্যাপের সবচেয়ে নীচুতে অবস্থানের কারণে ডাউন আন্ডার বলা হয়। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের দেশকে ডাউন আন্ডার হলে মানতে রাজি নয়। তবে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড কি কারণে এত দক্ষিণে সরে গিয়েছে সে সম্পর্কে কিছু আলোকপাত করা যাক।  

ইতিহাস ঘেটলে  দেখা যাবে প্রায় ২৫ কোটি বছর আগে সমস্ত মহাদেশগুলো একটিই ভূখণ্ড ছিল। বিজ্ঞানীরা তখন তার নাম রেখেছিল প্যাজিয়ো। সে সময় থেকেই মহাদেশগুলো আস্তে আস্তে পরস্পরের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। সে পর্যায় নাম হয় গন্ডোয়ানাল্যান্ড। ভূ-বিজ্ঞানীরা দূরে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে নাম দিয়েছেন আন্তঃমহাদেশীয় প্রবাহ। অর্থাৎ প্রত্যেকটি মহাদেশ এবং কিছু কিছু ভূখণ্ড আলাদা ভাবে এক একটা প্লেটের উপর ভাসছে। পৃথিবী নামক গ্রহটি সৃষ্টির প্রথম পর্যায়ে প্লেটগুলো মিলেমিশে একসঙ্গে থাকলেও বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির ২৫ কোটি বছর আগে ধীরে ধীরে আলাদা হতে থাকে। 

তবে বিজ্ঞানিরা জানিয়েছেন আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূলের সাথে দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব উপকূল জোড়া দিলে একেবারে ভাঁজে ভাঁজে মিলে যায়। এবং উপমহাদেশ আফ্রিকার মাদাগাস্কার এলাকা থেকে আলাদা হয়ে এশিয়া ভূখণ্ডের সাথে মুখোমুখি হয়। এই দুই ভূখণ্ডের ঠেলাঠেলিতে জেগে ওঠে হিমালয় পর্বতমালা। এখনো হিমালয় আস্তে আস্তে উঁচু হয়ে চলেছে। উর্দ্ধ গতির ফলে হিমালয়ের পাদদেশের অনেক জনপদে ঘনঘন ভূমিকম্প হতে থাকে। আন্তঃমহাদেশীয় প্রবাহের প্রক্রিয়ায় অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ দিকে সরে যায় এবং দক্ষিণ মেরুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। 

যুগে যুগে বিশ্ব ম্যাপ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন পদ্ধতিতে। কখনো উত্তরমুখী, কখনো পশ্চিমমুখী, মধ্যযুগে ইউরোপিয়ান ম্যাপ বানানে ওয়ালাদের কারসাজিতে ইউরোপ উপরে উঠে গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার নীচে। বিক্ষুব্ধ অস্ট্রেলিয়ানরা একসময় তাদের দেশ উপরে রেখে ম্যাপ তৈরি করেছিল। তবে বাস্তবে পৃথিবীর উপর নিচ বলে কোন কথা নেই। আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতার কারণে অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ডকে ডাউন আন্ডার নামে আখ্যা দিয়ে রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *