অফবিট

একলব্যকের মৃত্যু শ্রী কৃষ্ণের হাতেই কেন হয়েছিল জানেন?

মহাভারত হোক কিংবা রামায়ণ, এই দুটি হিন্দুদের জনপ্রিয় গ্রন্থে জনপ্রিয় বেশ কয়েকজন প্রধান চরিত্র যেমন রাম সীতা হোক কিংবা পঞ্চপান্ডব ও ধৃতরাষ্ট্রের পরিবার সম্পর্কে আমরা অবগত। কিন্তু যারা এই দুটি জায়গায় পার্শ্ব চরিত্রে ছিলেন তাদের পরিণতি কি হয়েছে সে সম্পর্কে অনেকেই অজানা। যার মধ্যে একজন হল একলব্য।  গুরুর প্রতি শিষ্যের একনিষ্ঠ ভক্তির উদাহরণ একলব্য। গুরুদেব দ্রোনের কাছে একলব্য গিয়েছিলেন যুদ্ধবিদ্যা শিখতে। কিন্তু একলব্য ক্ষত্রিয় ছিল না বলে দ্রোন তাকে শিষ্য হিসেবে গ্রহণ করতে রাজী হননি। কিন্তু বালক একলব্য দ্রোনকেই গুরু মেনে গহীন বনে একমনে যুদ্ধবিদ্যা শিখতে থাকে। তবে এই একলব্যের শেষ জীবনে পরিণতি কেমন হয়েছিল সেই বিষয়ে আজকের এই প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে। 

মহাভারতে একলব্যের ভূমিকা সামান্য ছিল। যার কারণে মহাভারত গ্রন্থে একলব্যের বিষয়ে কম আলোচনা দেখতে পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু একলব্যের বিষয়ে বেশ কয়েকটি তথ্য পাওয়া যায় হরিবংশ পুরাণে। কারণ সেই পুরান অনুযায়ী – যাদব শ্রেষ্ঠ বসুদেবের ‘দেবশ্রবা’ নামে এক ভাই ছিলো। এই দেবশ্রবার যখন পুত্র হয় তখন আকাশবাণী হয় “যদু বংশির হাতেই তার মৃত্যু হবে।” এই আকাশবাণীতে ভয় পেয়ে পুত্রের রক্ষা করার জন্য দেবশ্রবা তার পুত্রকে নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ভাসতে ভাসতে সেই শিশু মগধ রাজ্যের বনে পৌঁছালো। সেই বনের নিষাদ রাজ ‘হিরন্যধনু’ তাকে নিজের পুত্র রূপে পালন করেন এবং তার নাম রাখেন ‘একলব্য।’ একলব্য যদু বংশের মতো মহান বংশের বংশোদ্ভূত হওয়ার কারণে সে এত প্রতিভাবান এবং দুর্ধর্ষ ধনুর্ধর ছিলো।

বহুকাল পরে যখন “ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কংস বধ করেন তারপর কংস বধের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কংসের শ্বশুর মগধ সম্রাট জরাসন্ধ ১৭ বার মথুরা আক্রমণ করে এবং প্রত্যেক বারই গুরুতর ভাবে পরাজিত হয়।” জরাসন্ধ যখন জানতে পারে যে তার রাজ্যে এরকম একজন মহান ধনুর্ধর আছে তখন সে একলব্যকে তার সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন। সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় পর যুদ্ধে একলব্য যাদব সেনাবাহিনীর একটি বড়ো অংশ ধ্বংস করে দেয়। “তার এই ভীষণ পরাক্রম দেখে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে তাকে বীরগতি প্রদান করেন। এরপরেই নিত্য ছন্দে জীবন অতিবাহিত হয়েছে একলব্যের, এরকম ভাবে চলতে চলতে একদিন জীবনের সমাপ্তি ঘটে তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *