অফবিট

মেয়ের অমঙ্গলের জন্য ছায়া গোটা বাড়িতে আয়না দিয়ে কেন সাজিয়েছিলেন এই দম্পতি? কারন জানলে অবাক হবেন

ছোটবেলায় রূপকথার গল্প আমরা কত অদ্ভুত অদ্ভুত ঘটনার কথাই না পড়েছি।বিশাল কেকের তৈরি বাড়ি, চকোলেটের নদী এইসব ও ছিল সেই সব গল্পের ই অংশ। কিন্তু এখন যদি বলা হয় রূপকথার সেই বাড়ি রয়েছে বাস্তব দুনিয়ায়। না কেকের তৈরি নয়।তবে, এই বাড়ি তৈরি শুধু আয়না দিয়ে ।অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? ভাবছেন তা আবার হয় নাকি? আজ্ঞে হ্যাঁ। কুয়েতে সত্যিই রয়েছে এই হাউস অফ মিরর যার পুরোটাই মোড়া আয়না দিয়ে। এমনকি শিল্প সম্পদের অপূর্ব এই নিদর্শন সর্বসাধারণের দেখার জন্য ও উন্মুক্ত।

অপরূপ সুন্দর শিল্পের বিশেষ নিদর্শন  কুয়েতের এই আয়নাঘর কে বাইরে থেকে দেখে কিন্তু একেবারে সাধারণ আর পাঁচটা বাড়ির মতই লাগে ।কিন্তু খলিফা আল কাতান  এবং তার স্ত্রি লিডিয়া আল কাতান এর তৈরি এই বাড়ির আসল চমক অপেক্ষা করছে বাড়ির ভেতরে ।জানলে অবাক হবেন প্রায় 100 টন সাদা সিমেন্ট ও 75 আয়না দিয়ে এই বাড়ির ভেতরের গোটাটা সাজানো ড়য়েছে। আর এই বাড়ি সাজাতে কিন্তু কিনে আনা হয়নি বিশেষ কোনো আয়না বা কাচ বরং ভাঙ্গা আয়না, গ্লাস প্রভৃতি ব্যবহার করে সাজানো হয়েছে এটি ।

তবে এত ঘর সাজানোর জিনিস থাকতে হঠাৎ আয়না দিয়ে গোটা ঘর আয়না দিয়ে কেন সাজাতে গেলেন আর্টিস্টের দম্পতি?লিডিয়ার কাছ থেকে জানা যায় এক অদ্ভুত ইতিহাস। জানা যায় 1966 সালে তাদের মেয়ে জালিয়া ঘরের একটি আয়না ভেঙে ফেলে ভুল করে। আর সেই সময় কুয়েতে একটি বিশ্বাস খুব প্রচলিত ছিল যে বাড়িতে ভাঙ্গা আয়না রাখলে তা থেকে অমঙ্গল হয় সকলের।এই কুসংস্কারকে ভুল প্রমাণিত করার জন্যই লিবিয়ার মাথায় আসে এক বুদ্ধি। তিনি এই ভাঙ্গা আয়না ঠিক  ফেলে না দিয়ে সমস্ত বাড়ি আয়না দিয়ে সাজানোর কথা ভাবেন ।নিজের চেষ্টায় তিনি বাড়ি আয়না দিয়ে সাজাতে শুরু করেন এবং পরবর্তীকালে তার স্বামী তা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে গোটা বাড়ি আয়না দিয়ে সাজিয়ে তুলতে তাকে সাহায্য শুরু করেন ।

তবে লিডিয়া যত সহজে গোটা ঘটনাটিকে বর্ণনা করছেন বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এই ঘটনাটি অত সহজে মানতে রাজি নন ।বিশেষজ্ঞদের মতে এত বড় দুতলা একটি বাড়ি আয়না দিয়ে সাজাতে গেলে দুজন ব্যক্তির অনেক বছর সময় লেগে যাওয়ার কথা ।সে ক্ষেত্রে মাত্র দুজন মিলে এত তাড়াতাড়ি কিভাবে গোটা কাজ শেষ করলেন তা নিয়ে জেগেছে প্রশ্ন ।আর তাছাড়া এত আয়না দিয়ে গোটা ঘর সাজানো নেহাত মুখের কথা নয়! আয়নায় কালচে ছোপ পড়তে পারতো অথবা আয়না ভেঙে পড়ে যেতে পারত নিচে ।এছাড়া আয়নায় ফাটল ধরা তো খুবই সাধারণ এক জিনিস ।সে ক্ষেত্রে এত সহজে কিভাবে গোটা ঘরের কাজ শেষ করলেন তারা তা নিয়ে পাওয়া যায়নি কোনো উত্তর ।যদিও লিডিয়া জানিয়েছেন যে তাদের কঠোর পরিশ্রম ও বুদ্ধির জেরেই এই কাজ এত সহজে করা সম্ভব হয়েছে তবুও বিশেষজ্ঞদের মন থেকে প্রশ্ন যায়নি ।কারণ এই বাড়ির যে শুধুমাত্র দেওয়াল ই বাহারি আয়না দিয়ে ঘেরা তাই নয় জানলা, দরজা, বিছানার চারপাশ সমস্ত ই আয়না দিয়ে মোজাইক করা ।

এই বাড়িকে নিয়ে এখনও তাই বেশ কিছু রহস্য থেকে গেছে ঠিকই তবে জনসাধারণের পর্যটনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে এটিকে ।তাহলে কুয়েত যদি কখনো ঘুরতে যান তবে আয়নাঘর দেখে আসতে ভুলবেন না যেন ।কিন্তু এই বাড়ি ঘুরতে যেতে চাইলে এক সপ্তাহ আগে থেকে নোটিশ দিয়ে দিতে হয় তাই তা যেন জানাতে ভুলবেন না ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *