অফবিট

আইল্যান্ডবাসীরা শিবলিঙ্গকে কি নামে ডাকে জানা আছে?

নিউজ ডেস্ক – হিন্দু ধর্মে বেশি হতে দেখা যায় মহাদেবের মূর্তি অর্থাৎ শিবলিঙ্গকে‌। কম দেশি অধিকাংশ মানুষেরই জানা যে শিবলিঙ্গ ও সৃষ্টির আদি শক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িত একে অপরের সঙ্গে। কারণ বাবা মহাদেব ওমা সুতি পার্বতী বাকালি শিল্পী হোক না কেন দু’জনেই কখনো আলাদা হয় না একে অপরের থেকে। এই কারণেই সুদূর আয়ারল্যান্ডে এক রহস্যময়ী শিবলিঙ্গ রয়েছে যার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ সংযোগ পাওয়া যায় তারা মায়ের। একটু সহজ ভাষায় বলতে গেলে ছোট করে একটা গল্প বলা খুবই প্রয়োজন। 

আয়ারল্যান্ডে কাউন্টি মিথেতে পাহাড় রয়েছে যার নাম তারা হিল। আর এখানেই স্থাপিত করা রয়েছে রহস্যময় শিবলিঙ্গ। বাংলা নিমাতী পাথরকে শিবলিঙ্গ বললেও আইল্যান্ডবাসীদের মতে তার নাম দেওয়া হয়েছে লিয়া ফেইল অর্থাৎ স্টোন অব ডেস্টিনি। তখনকার দিনের ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দের  মধ্যবর্তী সময়ে ফ্রান্সিসক্যান সন্নাসীদের দ্বারা রচিত এক প্রাচীন পুঁথি ‘দ্য অ্যানালস অব ফোর মাস্টর্স’ অনুসারে, কিছু বিশেষ মায়াবী ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি টুথান দে ডানান এই অদ্ভুত দর্শন পাথরটি নিয়ে এসে এখানে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে প্রশ্ন হল টুথান দে কি? 

টুথান দে হচ্ছে দানু দেবীর সন্তান। মনে করা হয় ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৭০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ডে এইসকল দানু দেবীর রাজত্ব চলছে। তাহলে আবার প্রশ্ন হল টুথান দে যদি দানু দেবী হয় তাহলে দানু দেবী কথাটির  অর্থ কি! 

তাহলে বলতে হয় যে ইউরোপের ঐতিহ্য অনুসারে দানু দেবী ছিলেন নদীর দেবী। দানুবে, ডন, ডনিপার এবং ডনিস্ট্র মতো নদীর নামে তাঁর নাম খুঁজে পাওয়া যায়। বিভিন্ন আইরিশ গ্রন্থে পাওয়া যায় এই দানু দেবীর পিতা হলেন দাগদা যিনি ছিলেন একজন ভাল দেবতা। অন্যদিকে এমনকী বৈদিক শাস্ত্র মতে তানভীর আক্ষরিক অর্থ প্রবাহিত জল। এছাড়াও হিন্দুশাস্ত্র ঘাটলে দানু দেবীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যিনি হলেন দক্ষের কন্যা এবং কাশ্যপ মুনির স্ত্রী। অর্থাৎ দক্ষ রাজার কন্যা হিসাবে, তাঁর বোন হলেন সতী, যিনি ভগবান শিবের সঙ্গে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। অন্যদিকে ‘তারা’ যে পাহাড়ের ওপর লিঙ্গটি অবস্থিত সেই তারার অর্থে আকাশের তারা। আবার ভগবান শিবের স্ত্রীর আরেক  নামও তারা। আর তাই বৈদিক শাস্ত্রবিদদের কাছে লিয়া ফেইলয়ের সঙ্গে শিব লিঙ্গের খুব ঘনিষ্ঠ সংযোগ রয়েছে। 

তবে শুধু কথাতেই যে এই লিঙ্গের ঐশ্বরি কথা পাওয়া যায় তাই নয়। বহুবার তা প্রমাণ হয়েছে। যার একান্ত দ্রষ্টব্যমূলক উদাহরণ রয়েছে। জানা গিয়েছে ২০১২ সালে এক ব্যক্তি লিঙ্গ বা পাথরটিকে সম্পূর্ণ রূপে নষ্ট করতে তার উপর শতাধিকবার অন্য পাথরকে আঘাত করেছিল, কিন্তু তাতেও কোনো চির পর্যন্ত ধরেনি ওই লিঙ্গে। আবার ২০১৪ সালে এক নাস্তিক মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তি এই পাথরের উপর রং ছেলেটা নষ্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতেও তিনি সফল হননি। পাথরের  কোন জায়গাতে  এক ফোঁটা রঙের চিহ্ন পরবর্তীতে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, পৃথিবীতে অশুভ শক্তি বিরাজমান সেরকমই শুভশক্তির কিছু অস্তিত্ব রয়েছে। এই সকল ঐশ্বরিক শক্তি কোন বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত করা সম্ভব হয়নি, আর ভবিষ্যতে এমন কোন বিজ্ঞানী জন্ম নেবেন না যিনি  ঐশ্বরিক বিষয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *