অন্যান্য পরীক্ষা

দক্ষিন চীন সাগরে দৈত্যাকার জাহাজ মোতায়েন চীনের

চীন দক্ষিন চীন সাগরে তাদের নৌবাহিনীর অত্যন্ত শক্তিশালী দৈত্যাকার যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে যা নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার চলছে। বলা হচ্ছে চীন ধীরে ধীরে একটি বড় যুদ্ধের সূচনা করতে চলেছে। বিগত কয়েকবছর ধরে চীনের বেশীরভাগ ধনী ব্যক্তি বিশেষ করে বিলিওনিয়াররা ক্রমশ চীন ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। বলা হচ্ছে সম্ভাব্য যুদ্ধের কারনেই তারা আগেই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। চীন যেভাবে দক্ষিন চীনসাগরে বিভিন্ন দেশের এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোনের কাছে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করছে তাতে স্পষ্ট মনে হচ্ছে চীন একটি যুদ্ধ চাইছে। কোনও দেশের ধনী ব্যক্তিরা তখনই দেশ ছেড়ে পালায় যখন তারা বুঝতে পারে দেশে যুদ্ধ আসন্ন। কারন যুদ্ধমানেই দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা আসার সম্ভবনা রয়েছে, দেশে করের পরিমান বৃদ্ধি পাবে যার জন্য দেশের ব্যাবসায়িক মডেল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতিমধ্যেই চীন থেকে প্রায় পনেরো হাজার মিলিওয়েনার, বিলিওয়েনার দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছে, ২০২৭-২৮ সালে এই সংখ্যাটা আরও কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে। 

বিশ্বের প্রতিটি শক্তিশালী দেশেরই নৌবাহিনী রয়েছে। নৌবাহিনীতে ডেস্ট্রয়ার, ফ্রিগেট, কর্ভেট, এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, সাবমেরিনের মতোন বিভিন্ন প্রকারের শক্তিশালী যুদ্ধজাহাজ থাকে। প্রত্যেক দেশের নৌবাহিনীতেই উপকূল রক্ষী বাহিনী বলে একটি নির্দিষ্ট বিভাগ থাকে যার কাজ দেশটির উপকূল ভাগ রক্ষা করা। এই উপকূল রক্ষী বাহিনীর কাছে যেসব জাহাজ থাকে সেগুলোর আকার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজের থেকে অনেকটাই কম হয়। সাধারনত সব দেশের উপকূল রক্ষী বাহিনীর কাছে ১৫০০-৪০০০ টন ডিসপ্লেসমেন্ট যুক্ত জাহাজ থাকে। কিন্ত চীন সম্প্রতি তার উপকূল রক্ষী বাহিনীর জন্য দানবাকৃতির যুদ্ধজাহাজ নির্মান করেছে। এই জাহাজটির নাম সিসিজি ৫৯০১, জাহাজটির ডিসপ্লেসমেন্ট ১২,০০০ টন!! কোনও দেশেরই উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজ এত বড় হয়না। সাধারনত সুপার ডেস্ট্রয়ার এত বিশাল আকারের হয়। 

আমেরিকার উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজের তুলনায় সিসিজি ৫৯০১ অন্তত তিনগুন আকারে বড়। এটি আমেরিকান নৌবাহিনীর অনেক যুদ্ধজাহাজের থেকেও আয়তনে বড়। যেমন আমেরিকার নৌবাহিনীর আর্লে বুল শ্রেনীর ডেস্ট্রয়ারগুলি ৯,৭০০ টনের যা সিসিজি ৫৯০১ এর থেকে আয়তনে ৩৫ ফুট কম। চীনের এই জাহাজটিতে দুটি ৭৬.২ মিলিমিটার বন্দুক রয়েছে যেখানে আমেরিকান উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজে একটি করে প্রধান ৫৭ মিলিমিটার বন্দুক রয়েছে। এই জাহজটিকেই আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে মনস্টার জাহাজ বলা হচ্ছে। ভারত এত বিশালাকৃতির জাহাজ তৈরি করেনা কারন আমাদের লক্ষ্য থাকে আন্তজার্তিক আইন অনুসরন করে নিজেদের উপূকল ভাগ রক্ষা করা। ভারতীয় উপকূল রক্ষী বাহিনী পাকিস্তান থেকে অবৈধ ভাবে সন্ত্রাসীদের ভারতীয় উপকূল ভাগে পৌঁছাতে, চোরাকারবারিদের প্রতিরোধে কাজ করে। কিন্তু চীন এই দানবীয় জাহাজ তৈরি করেছে দক্ষিন চীন সাগরে অন্যান্য দেশকে শক্তি প্রদর্শন করতে। 

ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতোন দক্ষিন চীন সাগরীয় দেশগুলোর নৌবাহিনীকে রীতিমতো চাপ সৃষ্টি করে চীন সম্পূর্ন দক্ষিন চীন সাগরে তাদের অধিকার দাবী করে। চীনের জাহাজ প্রায়ই আশেপাশের দেশগুলরো এক্সক্লুসিভ ইকোনোমিক জোনে বা ইইজেডে প্রবেশ করে। কিছু দিন আগেই চীনের উপকূল রক্ষী বাহিনীর জাহাজ ফিলিপিন্সের নৌবাহিনীর জাহাজ লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিলো। এমনকী চীনের উপকূল রক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সাথে ফিলিপিন্সের উপকূল রক্ষী বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষ হয়েছিল যাতে ফিলিপিন্সের উপকূল রক্ষী বাহিনীর অনেকে আহত হয়েছিল এবং একজন মারাও গেছে। ফিলিপিন্সের মতোন ছোট দেশের একার পক্ষে চীনকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়, এজন্য ফিলিপিন্সের ভারত, জাপান ও আমেরিকার সহায়তা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *