অফবিট

ভারতীয় রাজনীতিতে এই মহূর্তে কিং মেকার নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডু, এদের উপরই নির্ভর করছে ভারতবর্ষের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী!

চলতি লোকসভা নির্বাচনে কোনওদলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ২৭২ আসন পায়নি। নির্বাচনের পূর্বে সমস্ত এক্সিট পোলেই বলা হচ্ছিল বিজেপি ৩৫০+ আসন পাবে কিন্তু ভোট গনানার শেষে দেখা যায় বিজেপি ২৪০ আসন পেয়েছে। ম্যাজিক ফিগারের জন্য বিজেপির ৩২টি আসন আরও প্রয়োজন যাতে সরকার গঠন করা যায়৷ তাই বিজেপিকে জোট সরকার গঠন করতে হবে। এনডিএ জোটে বিজেপির সরকার গঠনে সবচেয়ে বড় দুই সাথী বিহারের নীতিশ কুমার ও অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু। কিন্তু এই দুজনেরই ইতিহাস বলছে এরা যেকোনও পক্ষে যেতে পারে। এনডিএর বিপক্ষে ইন্ডি জোট ২৩২ আসন পেয়েছে। যার জন্য ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে ইন্ডিয়া জোট আরও সমর্থন জোগাড় করতে পারবে কীনা। বিশেষ করে নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডুকে ইন্ডিয়া জোটে আনার জন্য চেষ্টাও শুরু হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই। 

এনডিএ ২৯৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আগামী ৮ জুন, সেদিন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে পুনরায় শপথ গ্রহন করবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে ভারতবর্ষের ইতিহাসে জওহরলাল নেহেরু শুধুমাত্র পরপর তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদী জওহরলাল নেহেরুর সেই রেকর্ড স্পর্শ করতে চলেছে আগামী ৮ জুন। তবে এনডিএ জোটের ৯০ শতাংশ সরকার গঠনের সম্ভাবনা থাকলেও ১০ শতাংশ সম্ভবনা এখনও রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের সরকার গঠনের। এই মহূর্তে ভারতবর্ষের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় দুটি নাম চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমার, এদের দুজনের উপরেই নির্ভর করছে কে সরকার গঠন করবে। টিডিপি বা তেলেগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু এবছর তৃতীয় বারের মতোন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। 

১৯৯৬ সালে টিডিপি এনডিএ জোটে যোগ দিয়েছিল, ১৯৯৯ সালে চন্দ্রবাবু নাইডু প্রথমবারের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১৮ সালে চন্দ্রবাবু নাইডু এনডিএ ছেড়ে দেয় কিন্তু তারপর অন্ধ্রপ্রদেশে নির্বাচনে অত্যন্ত খারাপ ফল করে টিডিপি। ২০১৯ সালে চন্দ্রবাবু নাইডু ইউপিএ জোটে যোগ দেয় কিন্তু সেসময় বিজেপি ৩০৩ আসন নিয়ে লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক ফল করে। গত ফেব্রুয়ারী মাসে এন চন্দ্রবাবু নাইডু পুনরায় এনডিএ জোটে যোগ দেয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে অন্ধ্রপ্রদেশে টিডিপি ১৬টি আসন পায়। চন্দ্রবাবু নাইডু বিজেপির সাহায্যেই অন্ধ্রপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছে সেজন্য আপাতত চন্দ্রবাবু নাইডু এনডিএ জোট ছাড়বেনা বলেই মনে করা হচ্ছে। 

জনতা দল ইউনাইটেড বা জেডিইউ এর প্রধান নীতিশ কুমার ২০০৪ সালে অটলবিহারি বাজপেয়ীর নেতৃত্বে এনডিএ জোটে প্রধানমন্ত্রী ছিল। একটা সময় নীতিশ কুমার জানিয়েছিল সে কখনও বিজেপির সাথে জোট করবেনা। কিন্তু নির্বাচন শুরু হওয়ার আগেই শেষ মুহুর্তে এনডিএ জোটে যোগ দেয় নীতিশ কুমার। 

২০১৩ সালে এনডিএ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষনা করায় নীতিশ কুমার এনডিএ ছেড়ে দেয়। ২০১৫ সালে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেস, বাম দলগুলোর সাথে মহাগাঁটবন্ধন করেছিল। ২০১৭ সালে নীতিশকুমার আবারও মহাগাঁটবন্ধন ছেড়ে এনডিএর সাথে যোগ দেয়। ২০২১ সালে আবারও নীতিশ কুমার এনএডি ছেড়ে দিয়ে আরজেডির সাথে জোট করে। এখন আবার আরজেডিকে ছেড়ে দিয়ে পুনরায় এনডিএ জোটে ফিরে আসে নীতিশ কুমার। যার জন্য জোটসঙ্গী হিসাবে নীতিশ কুমার বিশ্বাসযোগ্য নয় কখনওই। এবারের লোকসভা নির্বাচনে জেডিইউ ১২টি আসন জিতেছে। তবে নীতিশ কুমার চলে গেলেও বিজেপির এমন কিছু ক্ষতি হবেনা কারন তারপরেও এনডিএর সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে। তাছাড়া সামনে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনও আছে যার জন্য বিজেপিকে প্রয়োজন নীতিশ কুমারের। যার জন্য আপাতত নীতিশ কুমারও এনডিএ জোট ছাড়বেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *