অফবিট

প্রথম ডি এন এ টেস্ট করা হয়েছিল কোন অপরাধীকে ধরতে?

গোটা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ হয়ে থাকে। সেই সকল অপরাধের শাস্তিও হয় ভিন্ন ধরনের। বিভিন্ন তদন্ত ও এভিডেন্সের উপর ভিত্তি করে একজন তদন্তকারী অপরাধীকে শনাক্ত করে। তবে Colin Pitchfork’ছিল প্রথম ব্রিটিশ আসামী যাকে শনাক্ত করা হয়েছিল সর্বপ্রথম ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে। এই দাগী আসামিকে টেস্ট করার পর থেকেই ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে আসামিদের ধরার বিষয়টা প্রচলিত হয়েছিল। তাহলে একটু খোলসা করে বলা যাক এই দাগি আসামীর বিষয়ে। কে ছিল এই Colin Pitchfork’ এবং কি ছিল তার অপরাধ?

জানা চায় ১৯৮৩ সালের এক নভেম্বর মাসে ১৫ বছরের নাবালিকা Lynda Mann-র মৃত অবস্থায় জঙ্গলের ভেতর থেকে উদ্ধার করে এলাকাবাসী। এরপরই পুলিশ গোটা ঘটনা তদন্ত করেও এর অপরাধীকে ধরতে সক্ষম হয়নি। মূলত নাবালিকাকে ধর্ষণ করেই খুন করা হয়েছিল। এরপরই ধর্ষণকারীর সিমেন স্যাম্পেল সংগ্রহ করলেও আসল অপরাধীকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

পরবর্তীতে একইভাবে জঙ্গলের মধ্যে থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল আরো এক ১৫ বছরের নাবালিকা Dawn Ashworth-র মৃতদেহ। সেই নাবালিকার ময়না তদন্ত করেও প্রকাশ্যে এসেছিল তাকেও ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনাটা আগের ঘটনার থেকে তিন বছর পর অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের জুলাই মাসে ঘটেছিল। একইভাবে দুজন কিশোরীর ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছিল ব্রিটিশ পুলিশ।

পরবর্তীতে পুলিশ তদন্ত নেমে মৃতদেহ উদ্ধারে ঘটনা সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং করে প্রচার করেছিল যে সকল পুরুষ তাদের লালা রস এবং রক্তের স্যাম্পেল থানায় জমা করুক। তবে আশ্চর্যের বিষয় ছিল যে শহরের প্রত্যেকটা মানুষ সেই স্যাম্পেল থানায় জমা করলেও মূল অপরাধের সঙ্গে কোনোভাবেই ম্যাচ খাচ্ছিল না। রীতিমত ধোঁয়াশায় পরে গিয়েছিল গোটা শহরের পুলিশ।

এরপর আনুমানিক প্রায় ১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ Ian Kelly’ নামের এক ব্যক্তি থানায় এসে রিপোর্ট করেছিল যে একটি বারে একজন মধ্যম যুবককে তিনি বলতে শুনেছিলেন তার এক বন্ধু তাকে ২০০ পাউন্ড দিয়েছিল তার লালারস এবং রক্ত স্যাম্পেল থানায় জমা করার জন্য। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তির তথ্যের উপর ভিত্তি করেই আসল অপরাধীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

অভিযুক্তকে জেরা করেও যখন সে সত্য স্বীকার করছিল না তার রক্তের স্যাম্পেল নিয়ে টেস্ট করতেই মিলে গেছিল। এরপরই ১৯৮৮ সালের ২২শে জানুয়ারি দুই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা অপরাধে অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। তবে দীর্ঘ ৩০ বছর সাজা ভোগ করার পর Colin Pitchfork, কোর্টের অনুমতি নিয়ে  ২০১৭ সাল নাগাদ ৬ ঘন্টা জন্য বাইরে বেরোনোর সুযোগ পেয়েছিলেন। যদিও এরপরে তিনি বাইরের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পেয়েছিলেন কিনা সেই নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট ধোঁয়াশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *