অফবিট

অঘোরিরা মারা গেলে তাদের দেহ অন্য অঘোরিরা খায় না। তাদেরকে কবর দেওয়া হয়। অঘোরীদের অবাক করা তথ্য

নিউজ ডেস্ক – অঘোরী নাম শুনলেই এক আধ্যাত্মিক মনোভাবের জন্ম নেয় সকলের মনে। হিন্দু ধর্ম মতে অঘোরীরা ভগবানের সংস্পর্শে আসার কারণে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের এক আলাদাই জগৎ গড়ে তোলেন তারা। বর্তমানে শিক্ষিত সমাজ অঘোরী বাবাদের ভিন্ন চোখে দেখলেও বাস্তবে তারা খুবই সহজ-সরল মনোভাবের হয়। 

এই সকল অঘোরী সাধুদের উপর রিসার্চ   করেছেন লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান এন্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক জেমস ম্যালিনসন। তিনি গবেষণা করে জানিয়েছেন, অঘোরী কথার আক্ষরিক অর্থ ভীতি নয় এমন কিছু। সেই কারণেই সমাজের যে সকল বস্তুকে সাধারণ মানুষেরা ভয় পান সেই ভয় দূর করতে একাধিক নিয়ম বিধি লংঘন করে চলেছেন এই অঘোরী সাধুরা। 

অধ্যাপক আরো জানান, সারা ভারতবর্ষে অঘোরী সাধুরা পুরুষ হলেও পশ্চিমবঙ্গেই একমাত্র মেয়েদেরকেও অঘোরী সাধু হিসেবে দেখা যায়। এই অঘোরীদের জীবনযাপনের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় শ্মশানে  মূলত সাধারণ মানুষের জীবনের অধ্যায় শেষ হলেও সেখানে থেকেই নতুন অধ্যায় শুরু হয় অঘোরী বাবাদের। এসকল সাধু-সন্ন্যাসীরা উলঙ্গ অবস্থায় থাকেন এবং  পশু সহ নরম মাংস খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেন। এরা শিক্ষিত সমাজ থেকে সম্পূর্ণই দূরে শ্মশানে বসবাস করে। তবে লোকচক্ষুর আড়ালে থাকা অঘোরীদের একমাত্র দেখা যায় কুম্ভ মেলায়। যদিও অনেকের মতেই কুম্ভ মেলায় উপস্থিত সকল অঘোরীরা বাস্তবে অঘোরী নয়। কারণ কুম্ভ মেলায় যে সকল অঘোরী বাবারা আসেন তারা হয় দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জনের জন্য নয়তোবা কিছু আর্থিক উপার্জনের জন্য। কিন্তু নিষ্ঠাবান অঘোরীরা কোনদিনই অর্থের প্রতি আকৃষ্ট হন না। তারা জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষকে আশীর্বাদ দেন তাদের মনোকামনা পূর্তির লাভে। তবে সমাজে অঘোরীদের কৌতূহল ও ঘৃণ্য চোখে দেখলেও বর্তমানে সমাজে সাধারণ মানুষের হিতে অনেক কাজ করে চলেছেন তারা। যেমন-সমাজে অস্পৃশ্য কুষ্ঠ রোগীদের জন্য বেনারসে অঘোরীরা ক্লিনিক চালায়। সেখানে তারা আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা প্রদান করে। অঘোরিদের অনেকে এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। বাসে-ট্রেনেও চড়ে। আর জনসমক্ষে আসার সময় তারা অন্তত কিছু কাপড় পরে। অঘোরী সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় হিসাব করলে দেখা যায় কয়েক হাজার মতো অবশিষ্ট রয়েছে গোটা ভারতে।  

এই গবেষণায় জানা যায় অঘোরী বাবারা যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হন পতিতাদের সঙ্গে। তবে সেখানে কিছু নিয়মাবলী বা বিধি নিষেধ করা রয়েছে তাদের জন্য। এরা পতিতাদের সঙ্গে তাদের রীতি অনুযায়ী যৌনসঙ্গম করে। কিন্তু সমকামিতায় বিশ্বাসী নয় তারা, এটি অনুমোদনও করে না। যখন অঘোরিরা মারা যায়, তাদের দেহ অন্য অঘোরিরা খায় না। তাদেরকে কবর দেওয়া হয় কিংবা হিন্দু মতানুযায়ী পুড়িয়ে দেওয়া  হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *