Uncategorised

অন্ধ হয়ে যাচ্ছে একমাত্র পুরুষরাই। কোন গ্রামে ঘটছে এই ঘটনা?

নিউজ ডেস্ক   – পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিনিয়ত নানা আজব ঘটনা ঘটে। এই কারণেই গোটা পৃথিবীর আশ্চর্যময় ভূখন্ড বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে প্রকাশ্যে এসেছে এক বিরল প্রজাতির আজব ঘটনা। প্যারান পেরুরতে  একটি খুব ছোট্ট গ্রাম রয়েছে। যেখানে মানুষের বসবাস করেন প্রায় ৩০০ জন।  এই গ্রামের সব লোকেরাই খুব মিশুকে। কিন্তু এখানকার মূল সমস্যা হলো পঞ্চাশের উর্ধে পেলেই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধ হয়ে পড়ছে গ্রামের যুবকরা। হ্যাঁ শুধুমাত্র এই গ্রামে অন্ধত্ব দেখা যায় ছেলেদের মধ্যেই। যদিও এ বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। কিন্তু বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে ছেলেটি জিনগত কারণে চোখের রেটিনা শুকিয়ে গিয়ে তারা অন্ধ হয়ে পড়ছেন।

প্রাথমিকভাবে বলা হয় দৃষ্টিশক্তি হচ্ছে  একটি সংবেদনশীল জিনিস। কারণ সকলেই নিজেদের দুটি নেত্র দিয়ে গোটা পৃথিবীকে অনুভব করে থাকে। পৃথিবীর জীবমণ্ডল অনুভব করার পাশাপাশি আলো-আঁধারি কেউ বুঝতে শেখায় এই দুটি চোখ।  তবে চোখের গুরুত্ব এক একেক জনের কাছে একেক রকম।  মানুষের চোখ একই  তলে অবস্থিত। এবং একটি মাত্র ত্রিমাত্রিক দৃষ্টি গঠন করে।  আবার অনেক প্রাণী যেমন খরগোশের দুই চোখ দুটি বিভিন্ন তলে অবস্থিত।  কিন্তু ছোট দেখে দৃষ্টিশক্তি থাকা কিংবা দৃষ্টিহীন হওয়ার ব্যাপারটা আলাদা। কিন্তু যেখানে সকলের ছোট থেকে দেখতে পাচ্ছে অথচ ৫০ বছর হলেই  দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে  সেক্ষেত্রে বিষয়টা আরো জটিল হয়ে ওঠে।  এরকম ঘটনা ঘটছে প্যারান পেরুতে।  

দীর্ঘদিনের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা মনে করেন এটি একটি রাতকানা রোগ। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তরের একটি গবেষণা মাধ্যম বলছে অন্য কথা। তাদের কথা অনুযায়ী গ্রামের বাসিন্দারা তিন হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত করায়   এদের মধ্যে একটি জিনগত রোগ রয়েছে।  কারণ কোন মানুষ রাতকানা রোগে  আক্রান্ত হলে তার চোখে সামান্য পরিমাণ সংবেদনশীলতা থাকে। অর্থাৎ সিভিক তিন দিনে দিতে পারলেও রাতে দৃষ্টিশক্তি হারায়।  কারো ক্ষেত্রে জন্ম থেকেই সমস্যা থাকে।  আবার অনেকের চোখের  অভিযোজন ক্ষমতা হ্রাস পেলে বা নষ্ট হয়ে রাতকানা রোগ হয়। কিন্তু এই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে বিশেষ করে পুরুষদের পঞ্চাশ পার হলেই দেখা যাচ্ছে এই সমস্যা।  

পেরুর বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘ রাতকানা জন্য প্রধানত দায়ী এই রোগটি। এর কারণে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে আলোর প্রতিসরণ দেওয়ার ক্ষমতা হারায়।  এটা এক ধরনের জেনেটিক রোগ যেখানে রাত্রিকালীন দৃষ্টির দিনের বেলা দেখার ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যায়।  রাত্রিকালীন অন্ধত্বের ফলেই জন্ম থেকে তৈরি হওয়া রড কোষ জন্মের পর থেকেই কাজ করে না।  কিন্তু এই ব্যবস্থা আরো খারাপ হতে থাকে মানুষের দৃষ্টিশক্তি হারায়।   এছাড়াও চোখের ভেতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হলো রড ও কোণ। রড আর কোণ ‘ফটো রিসেপ্টর’র কাজ করে। এই রোগের ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে মানুষ অন্ধত্বের শিকার হয়। ঠিক সেরকমই এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ রেটিনাইটিস পিগমেনটোসায়  আক্রান্ত’। 

আন্তর্জাতিক গবেষণার পর কয়েক বছর আগেই গ্রামটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিতসা করেছেন বেশ কয়েকজন চক্র চিকিৎসকরা।  তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী বলা হয়েছে পুরুষদের চোখের এই রোগ আসলে জিনগত। এক্স কোমোজোম সমস্যার কারণে এটি দেখা যায়।  এমনকি এই রোগ বেশিরভাগ দেখা যায় পুরুষদের মধ্যে।  কার্যত  গ্রামে কোন মারদাঙ্গা কিংবা হিংসাত্মক পরিবেশ না থাকলেও যেহেতু ছেলেদের অন্ধত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে সে ক্ষেত্রে বিবাহ জনিত কারণে একাধিক সমস্যা  দেখা দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *