কেন ভারত, রাশিয়া, চীনের মতো এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে একটি শক্তিশালী মিলিটারি জোট দরকার?
রাজেশ রায়:— রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ন্যাটোর নাম আপনারা সবাই হয়ত শুনে থাকবেন। ন্যাটো বা নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন এই মহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মিলিটারি গ্রুপ যাতে ইউরোপ ও আমেরিকার ৩০ টি দেশ রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করার মত বিষয় হচ্ছে ন্যাটোর মধ্যে কোনও এশিয়ান দেশ নেই যার প্রধান কারন হচ্ছে ন্যাটো তৈরি হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলোর স্বার্থে সোভিয়েত ইউনিয়ন কে প্রতিরোধ করতে। এই মহূর্তে বিশ্বে ন্যাটোর মত শক্তিশালী কোন মিলিটারি গ্রুপ নেই। অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক কারনে এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে অনেক জোট রয়েছে যেমন এসসিও, বিমস্টেক, সার্ক, এশিয়ান কিন্ত এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে কোন মিলিটারি জোট নেই এখনও। এশিয়াতে চীন, ভারত ও রাশিয়ার মত শক্তিশালী পরমানু ক্ষমতা সম্পন্ন দেশ থাকতেও কেনো এখনও কোন মিলিটারি জোট নেই? কেনই বা এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে একটি শক্তিশালী মিলিটারি জোট দরকার? বর্তমান বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী এশিয়ান দেশ গুলোর মধ্যে মিলিটারি জোট তৈরির পরিস্থিতি কী তৈরি হচ্ছে??
যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করা হয় দেখতে পাবেন বেশীরভাগ ইউরোপীয়ান দেশগুলিই এশিয়ান দেশগুলিকে শাসন করেছিল। খুব কম সংখ্যক এশিয়ান দেশই ইউরোপীয়ানদের মত নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে পেরেছিল। প্রথম ও দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের পর থেকে ইউরোপীয়ান দেশগুলি ও আমেরিকা অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী হতে থাকে। এরপরই তারা নিজেদের সীমানা ছাড়িয়ে এশিয়া ও আফ্রিকা তে নিজেদের সাম্রাজ্য বিস্তার করতে থাকে। অর্থাৎ এইসময় বিশ্বজুড়ে শক্তিশালী পশ্চিমা দেশগুলি নিজেদের কলোনী তৈরি করতে থাকে। কোন দেশ দখল করে সেই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ নিজেদের কাজে লাগানো এবং সেই দেশের লোকেদের কম বেতনে কাজ করতে বাধ্য করাই ছিল দেশ গুলির লক্ষ্য। পশ্চিমারা নিজেদের দেশের পন্য কম দামে পূর্বের দেশ গুলিতে বিক্রি করতে শুরু করে যার ফলে পূর্বের দেশগুলোর নিজস্ব পন্যের বাজর ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাথে সাথে দেশগুলিতে নিজেদের সংস্কৃতি প্রচার করত পশ্চিমারা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে পর্যন্ত এশিয়ার প্রায় সমস্ত দেশই পশ্চিমের অধীনে ছিল ও কিছু কিছু দেশে অল্প পশ্চিমা শাসন ছিল, তাই মোটের উপর বলতে গেলে ১৮০০ শতক থেকে পূর্বের দেশ গুলির উপর ইউরোপের বড় বড় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, পর্তুগাল, অস্ট্রিয়া, ইটালি, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস সহ আরও অনেক দেশের প্রভাব ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে কলোনাইজড দেশগুলি ধীরে ধীরে স্বাধীন হতে থাকে কিন্তু আজও পূর্বের দেশগুলির উপর আমেরিকা ও ইউরোপের প্রভাব রয়ে গেছে। যেমন সম্প্রতি ইরাক ও সিরিয়া যুদ্ধে ব্রিটেনের অংশ নেওয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেড়িয়ে যাওয়া, যাকে ব্রেক্সিট বলা হয়, অনেকটাই ব্রিটেনে পুরোনো সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতার প্রমানই পাওয়া যায়।
১৯২০ সালে ইরাক তৈরি হওয়ার পেছনেও দায়ী ব্রিটেনই। সেইসময় তুরস্কের অটোম্যান সাম্রাজ্যের তিনটি প্রদেশকে নিয়ে ইরাক দেশ তৈরি করে ব্রিটেন। সেজন্য ইরাক যুদ্ধে অংশ নিয়ে ব্রিটেন ভেবেছিল আরও একবার ইরাকের ভাগ্য রচনা করতে পারবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেড়িয়ে গেছিল কারন ব্রিটেন মনে করে ব্রিটিশ জাত্যাভিমান ইউরোপের থেকেও বড়। ইউরোপ মহাদেশের অংশ হয়েও ব্রিটেন নিজেদের স্বাতন্ত্র্য মনে করে। ব্রিটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনশনের মতে গ্লোবাল ব্রিটেন পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্রিটেন এখন তাদের পূর্বের কলোনী দেশগুলোর সাথে ভাল সম্পর্ক রাখবে। কথাটা ভাল করে পড়ুন গ্লোবাল ব্রিটেন, কলোনী এসব শব্দ গুলো ইঙ্গিত দেয় পুরোনো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কথা। ব্রিটেন সম্পর্কে একটা কথা বলা হত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্যাস্ত হয় না। তাই এত বড় পুরোনো সাম্রাজ্যের কথা ব্রিটেন সহজে ভুলতে পারে নি। যদি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কথাই ধরা হয় তাহলে দেখা যাবে আমেরিকা অতীতেই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরোধী ছিল কিন্তু বর্তমানে তারাই বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশে অসংখ্য সামরিক বেস রয়েছে আমেরিকার এবং বিশ্বের অর্থনীতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে আমেরিকা। অর্থাৎ সরাসরি না হলেও গোটা বিশ্বের উপর একটা প্রভাব রয়েছে আমেরিকার। সাম্রাজ্যেবাদের একটা ছায়া যে বিশ্বে এখনও রয়েছে তা সবাই বুঝতে পারছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারনা ভবিষ্যতে আবারও হয়ত বিশ্বে সাম্রাজ্যবাদের ছায়া পড়তে পারে, প্রত্যক্ষ ভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে তো বটেই। যার অন্যতম বড় উদাহরণ রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ। সেইজন্য এটাই সেইসময় যখন পূর্বের দেশগুলির ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংগঠন তৈরি করা দরকার যাতে ইতিহাস দ্বিতীয়বার একই ভাবে না লেখা হয়।
অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তিশালী জোট গঠন করলে পূর্বের দেশগুলোতে কোন পশ্চিমি দেশ গুলি প্রভাব ফেলতে পারবে না। বরাবরই পূর্বের দেশগুলোর আভ্যন্তরীণ রাজনীতি তে আমেরিকার মত দেশগুলি নিজেদের জড়িয়েছে। লিবিয়া, ইরাক, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান সব দেশগুলোতেই আমেরিকা এসেছে যুদ্ধ করতে এবং ফলাফল কী হয়েছে দেশগুলি অর্থনৈতিক ভাবে অনেক পিছিয়ে গেছে। হ্যাঁ আফগানিস্তানে আক্রমনের যথেষ্ট কারন আছে আমেরিকার। ৯ সেপ্টেম্বর, ২০০১ আমেরিকার ওয়াল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংসের মূলে ছিল আলকায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। তাকে নিরাপদ আশ্রয় দেবার করনে আফগানিস্তান আক্রমণ করে আমেরিকা কিন্তু বাকী দেশগুলোতে যেচে এসেছে আমেরিকা। তাই ন্যাটোর বীপরীতে একটি সামরিক জোট অবশ্যই দরকার এশিয়ান দেশগুলোর জন্য যা শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করবে। এশিয়াতেই ভারত, চীন ও রাশিয়ার মত শক্তিশালী পরমানু ক্ষমতা সম্পন্ন দেশ রয়েছে। রাশিয়া ইউরোপের দেশ বটে কিন্তু রাশিয়ার বেশীরভাগ অংশই এশিয়াতে রয়েছে। এশিয়াতে ইতিমধ্যে কিছু কিছু জোট রয়েছে:—
** এসসিও :— এর পুরো নাম সাংহাই কোঅপারেশন অরগানাইজেশান। অফিসিয়ালি জুন, ২০০১ এ এর উৎপত্তি হলেও ১৯৯৬ সালে চীনের সাংহাই শহরে পাচটি দেশ যৌথভাবে এই গ্রুপ তৈরি করে। ২০১৭ তে ভারত ও পাকিস্তান এই গ্রুপে যোগ দেয়। উজবেকিস্থান, কাজাকিস্তান, কিরগিঘস্তান, চীন, তাজাকিস্তান, ভারত, পাকিস্তান ও রাশিয়া এর সদস্য। জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক দিক দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আঞ্চলিক জোট। পৃথিবীর মোট জিডিপির ২০ শতাংশ এসসিও নিয়ন্ত্রণ করে। সবচেয়ে বড় কথা এই গ্রুপে ভারত, চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান চারটে নিউক্লিয়ার পাওয়ার দেশ রয়েছে।
** বিমস্টেক:– ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, ভূটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ড কে নিয়ে গঠিত এই জোট পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ বা ১.৫ বিলিয়ন লোকের জায়গা। বিশ্বের মোট জিডিপির প্রায় ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের উৎস এই দেশগুলোই।
** সার্ক :—- দক্ষিণ এশিয়ান আঞ্চলিক সহযোগীতা এই সংস্থার সদস্য দেশ গুলি হচ্ছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল,পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। এই দেশ গুলির মিলিত সেনা, আঞ্চলিক জোট গঠনে ব্যাপক কার্যকর।
** এসিয়ান:— ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এই দেশ গুলো যৌথভাবে এসিয়ান নামক জোট গঠন করেছে। এই এসিয়ান দেশ গুলোর জিডিপি রীতিমতো ইর্ষন্বীয়। প্রায় ৯.৭৩ ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমি এই দেশ গুলোর।
এবার একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখবেন আমেরিকা সহ ন্যাটো কখনওই চায় না তাদের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অন্য কোন দেশ আসুক কিন্তু তারা অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অবশ্যই জড়ায়। ১৯৬২ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে কিউবা গোপন চুক্তি করে পরমানু মিসাইল ঘাঁটি করার কিন্তু আমেরিকা বাধা দেয় যা নিয়ে সেইসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আমেরিকার মধ্যে প্রায় পরমানু যুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিল সেসময়। এখন যেমন আমেরিকা চীনকে আটকাবার জন্য ভারতের সাথে ভাল ব্যবহার করছে কিন্তু আমেরিকার কাজ মিটে গেলেই তারা সরে যাবে যার উদাহারণ পাকিস্তান। সুতরাং এশিয়ান দেশগুলোর জন্য একটি শক্তিশালী মিলিটারি গ্রুপ দরকার।
পূর্ব ও পশ্চিম দেশগুলোর মধ্যে সংস্কৃতি, ভাষা, বিচারধারা সম্পূর্ণ আলাদা। হ্যাঁ শুধু এর ভিত্তিতে জোট গঠন উচিত নয় কিন্তু কোন এলাকার ভাষা, সংস্কৃতি দেশের উপর একটা প্রভাব ফেলে। যেমন ধরুন সম্প্রতি হওয়া রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে, ইউক্রেন থেকে অসংখ্য মানুষ দেশ ছেড়ে সীমান্ত হয়ে অন্য দেশে যাচ্ছিল তখন তাদের সাথে থাকা ভারতীয় ও আফ্রিকান মানুষদের সাথে পোল্যান্ড সীমান্তে অনেক বাজে ব্যবহার করা হয়েছিল কারন পশ্চিমি সংস্কৃতি ও পূর্বের সংস্কৃতি আলাদা, তাই ইউরোপীয়ানদের কাছে ইউক্রেনের মানুষদের প্রধান্য বেশী। ন্যাটো কখনওই পূর্বের সংস্কৃতি বুঝতে পারবে না। সুতরাং এশিয়ার জোট গঠন অবশ্যই দরকার যাতে পশ্চিমা প্রভাব থেকে এশিয়ান দেশ গুলো মুক্ত হতে পারে। এবার ভৌগোলিক দিক দিয়ে যদি বিচার করা হয় দেখবেন এখানে রয়েছে ভারত মহাসাগর যাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যাস্ততম বানিজ্যিক রুট বলা হয়। বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ক্রুড অয়েল ট্রান্সপোর্টের প্রায় ৮০ শতাংশ এবং বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক বানিজ্যের মোট ৬০ শতাংশ এখান দিয়েই হয়। তাছাড়া এশিয়া তে থাকা দক্ষিণ চীন সাগর ও খুব গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক রুট যেখান দিয়ে পৃথিবীর তিনভাগের এক ভাগ বানিজ্য হয়। সুতরাং এই পুরো এলাকার নিরাপত্তার জন্য জোট দরকার। কিন্তু বর্তমানে দক্ষিণ চীন সাগর খুব বিপদজনক জায়গায় পরিনত হয়েছে কারন এখানে চীন নিজেদের অধিকার দাবি করে আসছে। যারজন্য আমেরিকা সহ ন্যাটোর বাকী দেশগুলির নেভি এখানে নিয়মিত উপস্থিত থাকে। দক্ষিণ চীন সাগরের বায়োডাইভারসিটি এত বেশী যে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার কয়েক লাখ মানুষ মাছের জন্য এর উপর নির্ভরশীল। চীনের সাথে ঝামেলার জেড়ে এখানে মানুষদের জীবিকা বিপদে পড়েছে। সুতরাং নিজেদের মধ্যে জোট গঠন করতে হলে প্রথমে এইসব ঝামেলা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো দরকার।
এতক্ষণ তো আলোচনা করলাম কেন এশিয়ান দেশ গুলোর মধ্যে জোট দরকার, এবার বলি কীভাবে এটা সম্ভব হবে। বঙ্গোপসাগরের আশেপাশের বিমস্টেক সংগঠন সামুদ্রিক নিরাপত্তা প্রদানে সক্ষম। অন্যদিকে সার্ক নিজেদের দেশেই একটি শক্তিশালী মিলিটারি সংগঠন তৈরি করতে সক্ষম যা ন্যাটোকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা রাখে কারন সার্ক জাতিসংঘের শান্তি মিশনে প্রায় ৩৫ শতাংশ সেনা একাই পাঠায়। রাশিয়া,ভারত, চীন ও পাকিস্তান এই চারটি পরমাণু শক্তিধর দেশ যদি নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সমস্যা সহ সব ঝামেলার সমাধান করে জোট গঠন করে তা রীতিমতো সমস্যায় ফেলবে ন্যাটোকে। কিন্তু সমস্যা হল এশিয়ার দেশ গুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। ভারত,চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে ঝামেলা সবাই জানে। ধর্ম, সীমান্ত নিয়ে এই ঝামেলার কারনে নিজেদের মধ্যেই পরমাণু হামলার হুমকী দেয়। যা বাইরের দেশগুলোর জন্য সুবিধা করে দেয়।