আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানে প্রচুর হিন্দুরা থাকতো, ছিল বৌদ্ধ মূর্তি। আফগানিস্থানের কোন প্রদেশে ছিল এই মন্দির?

নিউজ ডেস্ক –হিন্দু সংস্কৃতি সময়কাল ঠিক কখন থেকে শুরু হয়েছে তা অনুমান করতে পারলেও কতদূর পর্যন্ত সেই সংস্কৃতি বিস্মৃত এখনো সন্ধান করতে পারেননি প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। তবে সম্প্রতি নানা পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা জানতে পেরেছেন হিন্দু সংস্কৃতির উৎপত্তিস্থল মথুরা ও গান্ধার। বর্তমানে যে গান্ধার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী স্থলে অবস্থিত। সেই দিক থেকে বিবেচনা করতে গেলে বর্তমানে হিন্দু সংস্কৃতি রয়েছে পাকিস্তানের অন্তর্গত। 

প্রত্নতত্ত্ববিদেরা  জানিয়েছেন  

গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ করে জানা গিয়েছে মথুরা ও গান্ধারে  বিগত ১০০-২০০ খ্রিষ্ট পূর্বের  আগে বৌদ্ধ মূর্তির প্রচলন ছিল। এমনকি সেখান থেকে বৌদ্ধ মূর্তি সহ তার কিছু আঁকা চিত্র পাওয়া গিয়েছে। কমবেশি সকলেরই জানা মথুরা হল কৃষ্ণের জন্ম ভূমি। তবে সেখান থেকে বা সেই সময়কার যুগে কোঁকড়া চুল, আলখাল্লার মতো পোশাক পরা লাল পাথরের তৈরি ধ্যানমগ্ন বুদ্ধমূর্তি পাওয়া গিয়েছে। তবে শুধু মথুরা  নয় ঠিক একই সময়ে এই নিদর্শন উদ্ধার হয়েছে গান্ধার থেকেও। যে সময় মথুরায় শিল্পীরা বুদ্ধমূর্তির শৈল্পিক দিক নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন, সেই একই সময়েই গান্ধারের সোয়াট উপত্যকার শিল্পীরাও সেই চিন্তাভাবনা করছেন। এই বুদ্ধমূর্তি  গুলোতেও দুই কাঁধ ঢাকা ও পোশাকে প্রতিটি ভাঁজে স্পষ্ট। তবে জেনে রাখা ভালো গ্রিক ও রোম প্রভাবিত করে এই গান্ধার সংস্কৃতিকে। বর্তমানে এসকল ভগ্নপ্রায় মুর্তির অংশবিশেষ অক্সফোর্ডের অ্যাসমোলিয়ান মিউজিয়ামে রাখা আছে।মনে করা হয় বৌদ্ধ ধর্মীয় সদস্যরা তাদের ধর্ম সমপ্রসারণের জন্য একাধিক জায়গায় যেমন চীন, ভারত, পাকিস্তান, কাশ্মীর সহ বিভিন্ন দেশে বৌদ্ধ মূর্তি সম্প্রচার করে বেড়াতেন।

গান্ধার ও মথুরার সঙ্গে সেরকম কোনো সম্পর্ক না থাকলেও এক ব্যবসায়ী সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল এই দুই অঞ্চল। তবে ৩০-৮০ খ্রিস্টাব্দের সময় কালে প্রথম কুষাণ সম্রাট কুজুলা কাডফিসেসের উৎসাহে গান্ধার শিল্পের অনুকরণে বুদ্ধমূর্তি তৈরির রমরমা শুরু হয়। প্রথম দিকে পাওয়া দু’টি বুদ্ধমূর্তি কুষাণ সম্রাট কনিষ্কের সময়ের। তবে সম্রাটের পরবর্তীতে তার ছেলে কনিষ্ক মথুরা পর্যন্ত এই শিল্প বিস্তার করে। যার কারণে গান্ধার ও মথুরার মধ্যে এক ব্যবসায়ীর যোগসুত্র তৈরি হয়। পরবর্তীতে ধর্মটি সম্প্রসারণের পাশাপাশি নিজেও বৌদ্ধ ধর্মে ধর্মীতো হয়  কনিষ্ক। সেই সময়ে মুদ্রাতেও বৌদ্ধ মূর্তি ছাপানোর  প্রচলন ছিল। আস্তে আস্তে বৌদ্ধধর্ম বিশ্বের একাধিক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় এই ধর্মকে হিন্দু ধর্মের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়।

তবে বৌদ্ধ ধর্মের সম্প্রচার সেই যুগে সীমাবদ্ধ ছিল না সেটি পরবর্তীতে যিশুখ্রিস্টের সময়কালেও আংশিক হস্তক্ষেপ দেখা গিয়েছে। জানা যায় সেই সময় লম্বা কোঁকড়ানো চুল ও দাড়ি সহ যীশু খ্রীষ্টকে রোমান দেবতা হিসেবে অনুকরণ করতেন বহু রোমানরা। যার কারণে প্রথম রোমান  মোজাইক স্টাইলে জিশুর প্রতিকৃতি পাওয়া যায় ইংল্যান্ডের ডরসেটের একটা বাড়ি থেকে। সেই মোজাইক স্টাইলের পেছনে লেখা ছিল এক্স ও পি। যা বোঝাচ্ছে ক্রিস্ট শব্দটি। মাথার পিছনে চিরো শব্দটি বোঝায় রোমের উপর তাঁর আধিপত্য। অন্য একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে তিনি একটা ক্রস ধরে আছেন, ঠিক যেমন ভাবে রোমান সম্রাট তলোয়ার ও গ্লোব ধরে থাকেন। কার্যত এই সকল নিদর্শন থেকেই বোঝা যায় রুম নগরীতেও যিশুখ্রিস্টের যথেষ্ট আধিপত্য রয়েছে এবং রোমের দেবতার সঙ্গে যীশু খ্রীষ্টকে অনুসরণ করে চলেন রোমানিয়ারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *