Uncategorised

প্ল্যাস্টিকের কারনেই কমে যাচ্ছে তিমি। পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হতে চলেছে নীল তিমি। গড়ে এরা কয়শো বছর বাঁচতে পারে জানেন?

নিউজ ডেস্কঃপৃথিবীর সবচেয়ে বড় অংশই সমুদ্র। মহাসাগর পৃথিবীর মোট আয়তনের প্রায় ৭০ শতাংশ দখল করে আছে। এই মহাসাগরে রয়েছে জানা-অজানা হাজার হাজার প্রাণী।

যার মধ্যে তিমি অন্যতম। তিমির ৭৫টি প্রজাতির মধ্যে নীল তিমিই সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাণী হচ্ছে নীল তিমি বা ব্লু হোয়েল। এর দৈর্ঘ্য গড়ে প্রায় ১০০ ফুট বা ৩০ মিটার হয়ে থাকে। একটি বাস্কেট বলেরকোর্টের দৈর্ঘ্যের চেয়েও যা বেশি।একটা নীল তিমির ওজন প্রায় ১৮১ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে।

নীল তিমির প্রিয় খাদ্য হচ্ছে ছোট চিংড়ির মতো এক প্রকারের মাছ। এই মাছটির নাম ‘ক্রিল’। নীল তিমি প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন মেট্রিক টনের চেয়েও বেশি খাবার খায়।

নীল তিমি হলো উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী। তারা বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়। তিমি তাদের শ্বাস ২০মিনিট পর্যন্ত ধরে রাখতে পারে।

নীল তিমি বাঁচে প্রায় ২০০ বছর। এই তিমি মাছকে বলা হয় পৃথিবীর সব থেকে দীর্ঘজীবী স্তন্যপায়ী প্রাণী। গড়ে এর প্রায় ২১১বছর বাঁচে। স্বভাবের দিক থেকে তিমি মাছ প্রচুর আবেগপ্রবণ হয়।

সাগরে তিমির পরিমাণ কমে যাওয়া বর্তমানে বিজ্ঞানীদের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। ‌

১৯৯৬ সালে আন্তর্জাতিক সংস্থা বিষয়টি আইন করে বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছে। ২০০২ সালের একটা হিসাব মতে পৃথিবীতে এখন ৬ হাজার থেকে ১২ হাজারে কাছাকাছি নীল তিমি আছে। তাই মানুষেরা যদি এখনো সচেতন না হয় তবে এই বিশাল প্রজাতির তিমিরা একদিন পুরোপুরি হারিয়ে যাবে পৃথিবী থেকে।

প্লাস্টিক ব্যাগ গিলে ফেলায় মারা যায় বহু তিমি।

ফিলিপিন্সসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশ থেকেই সমুদ্রে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্য নিক্ষেপ করা হয়। বিশ্ব জুড়েই সমুদ্রে প্লাস্টিকের আবর্জনা বাড়ছে। ২০১৫ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী বছরে সমুদ্রে গিয়ে পড়ছে প্রায় আশি লাখ মেট্রিক টন প্লাস্টিক।

ঐ বছরই যুক্তরাজ্য সরকারের এক গবেষণায় উঠে আসে যে আগামী দশকের মধ্যে সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ তিনগুণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও শহরের ভারী ধাতু, অ্যাটমিক বর্জ্য, শিল্প বর্জ্য সাগরের পানিকে করে তুলে বিষাক্ত। এই বর্জ্যগুলোর কারণে তিমিদের মধ্যে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।যা তিমিগুলোর মৃত্যুর কারণও হতে পারে।তিমির মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া মানব সভ্যতাকে বড় ধরনের সংকেত দিচ্ছে। অচিরেই কোনো পদক্ষেপ নেয়া না হলে শুধু তিমি নয়, অন্যান্য প্রাণীদেরও টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

তিমি মাছেরা এক সঙ্গে চলাফেরা করতে পছন্দ করে। অনেক সময় তিমি মাছগুলো স্রোতের কারণে আটকা পড়ে যায়। তখন তাদের বাঁচানোর জন্য ছুটে আসে তার সঙ্গীরা এবং আটকা পড়ে যায় তারাও। এ কারণে তাদের প্রাণ দিতে হয়। বলে ধারণা করা হয়। ডিহাইড্রেশনের কারণেও তিমিদের প্রাণ যাওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে বলে জানা যায়।

অন্যান্য তিমি মাছ বাচ্চা জন্ম দেয়ার জন্য গভীর স্থান বেছে নেয়। কিন্তু নীল তিমি বেশির ভাগ সময় জলের উপরেই থাকে। এ কারণেই এরা খুব সহজেই তিমি শিকারিদের কাছে নিহত হয়।

সাগরে তিমির পরিমাণ এখন এতই কমে গেছে যে বিজ্ঞানীরা অনেক চিন্তায় পরে গেছেন। এখন তারা চেষ্টা করছেন কীভাবে তিমিকে বাঁচানো যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *