ডিফেন্স

রাশিয়ার ঘটা বিস্ফোরণ হিরোশিমা ও নাগাসাকি বিস্ফোরণ এর থেকেও হাজারগুণ বেশি শক্তিশালী ছিল। কবে হয়েছিল এমন জানেন?

আমাদের এই বৃহৎ পৃথিবীর বিভিন্ন রহস্য মোরা ।প্রাচীনকাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন কোনায় এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটে এসেছে যা বেশ রহস্যজনক ।এই অবাক করে দেওয়া ঘটনাবলীর মধ্যে কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে তবে আজও এমন বেশ কিছু রহস্যময় ঘটনার রয়ে গেছে যার পাওয়া যায়নি কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা ।আর এই রহস্যময় ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি হলো পৃথিবীপৃষ্ঠের উপরিভাগে বা বায়ুমণ্ডলে ঘটা ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ।প্রাচীনকাল থেকেই বেশ কয়েকবার মানুষ এই ধরনের বিস্ফোরণের সাক্ষী থেকেছে ।এই বিস্ফোরণ-গুলি নিয়ে রয়েছে নানা রহস্য তাই আজ আমরা পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রহস্যময় বিষ্ফোরণ হিসেবে পরিচিত টাঙ্গুসকার বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানব।

১৯০৯ সালে  রাশিয়াতে টাঙ্গুসকার নদীর নিকটবর্তী বনাঞ্চলের ঠিক উপরের বায়ুমন্ডলে ঘটে এই বিস্ফোরণ ।কোন সাধারন বিস্ফোরণ ছিল না এটি। বায়ুমন্ডলে ঘটা এই বিস্ফোরণের মাত্রা এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে তা হিরোশিমা ও নাগাসাকি বিস্ফোরণ এর থেকেও হাজারগুণ বেশি শক্তিশালী ছিল ।আর বিস্ফোরণের আওয়াজ এতটাই বীভৎস ছিল যে শুধু বনাঞ্চলে নয় আশেপাশের বেশ কয়েকটি শহর থেকেও শুনতে পাওয়া গেছিল তা।বিস্ফোরণের তীব্রতায় পায়ের নিচের মাটি যে কেবল কেঁপে উঠেছিল তাই নয় এই বিশাল বনাঞ্চলের সমস্তটাই বিস্ফোরণের আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছিলো । এমনকি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের গোলা ওই বনাঞ্চলে এসে পড়ায় বর্তমানে ও ওই বনাঞ্চলের মধ্যস্থলে অনেকটা জায়গা গাছ বিহীন অবস্থায় রয়েছে ।

হঠাৎ কিভাবে শুরু হলো এ বিস্ফোরণ তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন ।বিস্ফোরণের সঠিক কারণ জানতে না পারা গেলেও অনেকের কাছ থেকেই বিস্ফোরণের ঠিক পূর্বাবস্থার কথা জানতে পারা যায় ।প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে হঠাৎই আকাশের বুক চিরে এক উল্কাপিণ্ড কে দ্রুতগতিতে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায় আর তার পরেই প্রচণ্ড এক শব্দ হয়।

টাঙ্গুসকার এই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণের কারণ এখনো খুঁজে পাওয়া না গেলেও বৈজ্ঞানিক মতে এই ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব নয় ।মনে করা হয় মহাকাশ থেকে কোনভাবে ছিটকে আসা উল্কাপিণ্ড এর জন্য দায়ী ।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় 10 কিমি ওপরে বায়ুমণ্ডলের সাথে উল্কাপিন্ডের এই সংঘর্ষ এর ফলে সৃষ্টি হয় বিস্ফোরণের তবে পৃথিবীপৃষ্ঠের ওপর এর প্রভাব নেহাত কম ছিল না ।এই বিস্ফোরণের ফলে আশেপাশের প্রায় 2150 বর্গ কিলোমিটার এলাকা পুরোপুরিভাবে পুড়ে গেছিল ।এতে ওই বনাঞ্চলের প্রায় 8 কোটি গাছ জ্বলে পুড়ে যায় ।এখানেই শেষ নয় এই বিস্ফোরণের ফলে যে ভূকম্পন দেখা দিয়েছিল রিকটার স্কেলে তার মাত্রা প্রায় 5.0 ।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মাঝেমাঝে উল্কাপাতের ঘটনার কথা শোনা যায় ঠিকই তবে এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এর সঠিক কোন কারন বলতে পারেনি ।আশা রাখা যায় অদূর ভবিষ্যতে হয়তো বিজ্ঞানীরা এই রহস্যের সমাধান করতে সক্ষম হবেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *