ডিফেন্স

৫ দশক আগে পাকিস্তানের স্পেশাল ফোর্সকে পিটিয়ে মেরেছিল ভারতবর্ষের সাধারন মানুষ। কোথায় হয়েছিল এই ঘটনা?

নিউজ ডেস্কঃ স্পেশাল কম্যান্ডো তকমা দিলেই যে তারা স্পেশাল কম্যান্ডো হয়ে যায়না তা একাধিকবার প্রমান পেয়েছে পাকিস্তান। কারন ভারত যে সারজিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল তা কিছু মাস আগে সবাই প্রমান পেয়েছে, এবং তা যথেষ্ট সফল এবং বিচক্ষণতার সাথেই পরিচালনা করা হয়েছিল। তবে পাকিস্তান ৫ দশক আগে এরকম এক প্রয়াস চালিয়েছিল। এবং তাদের পরিস্থিতি কতোটা খারাপ হয়েছিল।

১৯৬৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের অভ্যন্তরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালায় পাকিস্তান। এই ঘটনা ঘটিয়ে ছিল পাকিস্তানের তথাকথিত স্পেশাল ফোর্স SSG ,তারা দেখিয়েছিল কোন একটা দেশে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে গিয়ে অসফল হলে কি পরিস্থিতি হতে পারে। ১৯৬৫ এর ভারত-পাক যুদ্ধের আবহে ,পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তে আসে যে ভারতীয় বিমান বাহিনীকে পঙ্গু করে দিতে ,তারা SSG দিয়ে এমন একটা অপারেশন চালাবে ,যেটা ভারতের পশ্চিম সীমান্তের কিছু এয়ারবেসের ওপর হবে এবং এতে ভারতীয় বায়ুসেনার একটা বিরাট মাপের ক্ষতি হবে।

১৯৬৫ এর ৬ সেপ্টেম্বরের গভীর রাতে পাকিস্তানের C-130 পরিবহন বিমান দিয়ে প্রায় ২০০ SSG কমান্ডোকে ভারতের পাঠানকোট ,আদমপুর এবং হালোয়ারা এয়ার বেসের নিকট এয়ারড্রপ করানো হয়। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল একটাই ,যত দ্রুত সম্ভব এই তিন এয়ারবেসের প্লেন গুলিকে নস্ট করে দেওয়া। এরপর তাদের প্ল্যান ছিল,পাঞ্জাবের বিভিন্ন নদী এবং তাদের বিভিন্ন শাখা প্রসাখার পথ ধরে পাকিস্তানে ফিরে যাওয়া ,উল্লেখযোগ্য এই যে ,এই তিনটি বেস‌ই বর্ডারের খুব কাছে ছিল।

পরিকল্পনা অনুসারে তারা এয়ারড্রপ করে। তারা পাঠানকোটে এয়ারড্রপ করে, খুব গভীর অন্ধকারে তারা এমন একটি জায়গায় নিজেদের ল্যান্ড করে যে যায়গাটি ছিল একটি জলাধার এবং তার সংযোগি বিভিন্ন খাল বিলের মধ্যবর্তী জায়গা। সেখানে তারা ল্যান্ড করার পরেই বুঝতে পারে তারা ফেসে গেছে। এরপর আগামী দুই দিনের মধ্যে মেজর খালিদ বাট সহ তাদের প্রায় সবাইকে জীবন্ত ধরতে সক্ষম হয় পুলিশ ও আর্মি ,কিছু SSG আর্মির গুলিতে মারাও যায়।

আদমপুরে যে SSG রা ল্যান্ড করেছিল তাদের অবস্থা পাঠানকোটের SSG দের মতোই হয়। আদমপুরে SSG কমান্ডোরা ভয়ে শেষ পর্যন্ত ভুট্টা ক্ষেতে লুকায়।তবে সেখানে তাদের খুজে বের করে স্থানীয় কৃষকরা ,তারা SSG দের খোজে ,SSG ক্যাপ্টেন দুরানিকেও এরেস্ট করা হয়, স্থানীয় পুলিশ তাদের সবাইকে এরেস্ট করে, তবে কিছু SSG কমান্ডো কৃষকদের গনপিটুনিতেই মারা যায়। তবে হালোয়ারাতে কিছু SSG কমান্ডো এয়ারবেসের কাছাকাছি ল্যান্ড করে, কিন্তু তারা আর্মির মুখোমুখি হয়। সেখানে অধিকাংশ SSG পালাতে গিয়ে ধরা পরে নয় মারা যায়। এক্ষেত্রে মেজর হজুর হাসানাইনের ভাগ্য কিছুটা ভাল ছিল, সে আর কিছু SSG কমান্ডো পালানোর সময় একটি জীপ পেয়ে যায়। তারা মাত্র ১০ মাইল দুরে বর্ডার পেরিয়ে নিজেরদের প্রান বাচাতে সক্ষম হয়।

মোট ১৮০ এর ওপর SSG কমান্ডোড্রপ হয়েছিল। ১৪০ জনের ওপর ধরা পরে, ২২ থেকে ৩০ SSG কে আর্মি, পুলিশ এবং গ্রাম বাসীরা মেরে ফেলে ১৫ জনের কাছাকাছি জীবন বাচাতে সক্ষম হয়।  গায়ে স্পেসাল ফোর্সের ব্যাচ পরলেই SF হ‌ওয়া যায় না। সবাই ভারতীয় PARA SF হয় না ,যারা বহুবার পূর্ব এবং পশ্চিম পাকিস্তানে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *