ডিফেন্স

লজিস্টিক সাপোর্ট রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়। লাদাখ সীমান্তে বিধ্বংসী ট্যাঙ্ক মোতায়েন করে রেখেছে সেনাবাহিনী

নিউজ ডেস্কঃ চীন-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা চরমে, বেশ কয়েকবার মিটিং হওয়া সত্ত্বেও কোনোরকম সমাধান সুত্র মেলেনি। আর দুই পক্ষই এখন মুখোমুখি অবস্থান করছে লাদাখে। একাধিক স্ট্রাটেজি নিয়েই সেখানে রয়েছে ভারতীয় সেনা। লজিস্টিক সাপোর্ট ও রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়।

লাদাখ-তিব্বত LAC তে ভারত ও চীনা আর্মির ব্যাটেল ট্যাঙ্ক সামনা-সামনি অবস্থায় মোতায়েন রয়েছে। ভারত থেকে মোতায়েন করা হয়েছে T-90 এবং T-72 এর মতো মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্ক (MBT) ,চীন মোতায়েন করেছে Type-15 লাইট ট্যাঙ্ক।

তবে যুদ্ধের ট্যাঙ্ক এমন একটা জিনিস,যে এখানে অতিরিক্ত কিছু করার চেষ্টা করা হলেই তা আর ট্যাঙ্ক থাকে না। অর্থাৎ খুব বেশী পরিবর্তন করার জায়গা নেই। লাদাখের মতো এত উচু জায়গা ট্যাঙ্ক ব্যাটেলের জন্য আদর্শ জায়গা নয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাই এখানে ভালো ট্যাঙ্ক নিয়ে যুদ্ধ করার থেকে,যুদ্ধের স্ট্রাটিজি বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পরে।

চীনের Type-15 লাইট ট্যাঙ্কের ওজন প্রায় ৩৩ টন। অর্থাৎ এটি এয়ার লিফ্ট করে প্যারাসুটের মাধ্যমে ল্যান্ডিং না করা গেলেও,এটি তুলনামূলক হালকা ওজনের ট্যাঙ্ক। এতে ১০৫ মি.মি এর একটি ক্যানন রয়েছে,যা অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল ফায়ার করতে সক্ষম। হালকা হ‌ওয়ায় অত উচ্চতাতেও, এটি ভালো ম্যানুভার করতে সক্ষম।সাথে ইঞ্জিনের ওপর অতিরিক্ত চাপ ও পরে না। কিন্তু একে হালকা করতে গিয়ে, এর আর্মর প্রোটেকশন কমে গেছে।

ভারত অত উচুতে ক্ষমতাসম্পন্ন মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্ক T-90 ও T-72 মোতায়েন করেছে,যাদের একটির ওজন প্রায় পয়তাল্লিশ টন ও অপরটির ওজন প্রায় বিয়াল্লিশ টন। এত ওজনের জন্য এটি ভারতীয় আর্মির জন্য লাদাখের মতো জায়গায় লজিস্টিক অসুবিধা তৈরী করতে পারে বলে মত সামরিক বিশেষজ্ঞদের। তাছাড়া লাদাখ সেক্টর এ ভারতের রাস্তা ঘাট ততটা ভালো নয়। ফলে এগুলিকে ঐ স্থানে নিয়ে যাওয়াটাও একটা যুদ্ধ। তার ওপরে হেভী ট্যাঙ্কের শক্তিশালী ইঞ্জিন গুলির পূর্ণ পারফরম্যান্স পেতে যে অক্সিজেন দরকার তা অত উচুতে নেই। এর ফলে ট্যাঙ্কের ম্যানুভার করার সক্ষমতাও কমে যায়। যদিও ট্যাঙ্ক গুলির ফায়ার পাওয়ার অসাধারণ, উভয়ের কাছেই ১২৫ মি.মি এর স্মুথবোর মেইন গান রয়েছে,যেগুলো দিয়ে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল ও ফায়ার করা যায়। ট্যাঙ্ক গুলিতে মিসাইল বিরোধী আর্মর প্রোটেকশন রয়েছে।

পরিস্থিতি একদম পরিস্কার, তুলনামূলক কম ফায়ার পাওয়ার ও প্রোটেকশন নিয়েও,এখন চীনা Type-15 ও একটা বিরাট হুমকি। ভারতীয় আর্মি অতীতে ঐ সমস্ত অঞ্চলে যে ট্যাঙ্ক অপারেট করেছে,সেগুলো ওজনে অনেক হালকা ছিল। তাই এখনকার চ্যালেঞ্জটা সম্পূর্ণ অন্যরকম। এক্ষেত্রে আর্মির দূর্দান্ত কিছু স্ট্রাটিজি থাকা প্রয়োজন। আর ভারতীয় আর্মির ট্যাঙ্কের ব্যাটেলে বিরাট সফলতার ইতিহাস রয়েছে।

যেহেতু আর্মির কাছে এখন কোন অপশন নেই সেক্ষেত্রে ঐ অঞ্চলে আর্মির অতিরিক্ত কয়েক স্কোয়াড্রন BMP-2 মোতায়েন করা উচিত বলতে মত একাধিক সামরিক বিশেষজ্ঞের,যেগুলিতে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক মিসাইল থাকবে। তাহলে এরা আর্মির বাকি ব্যাটেল ট্যাঙ্ক ফ্লীট গুলিকে ব্যাপক সহায়তা দিতে পারবে। আর তাছাড়া আর্মির ঐ সব অঞ্চলে আর্মর ভেহিকেল ক্যারিয়ার ব্রিজ মোতায়েন করা উচিত, যাতে ভালো রাস্তা না থাকলেও,আর্মির ট্যাঙ্ক আটকে না থাকে।

হিমালয়ান হাইট ট্যাঙ্ক যুদ্ধের জন্য অথবা এরিয়াল ফাইটের জন্য অনুকূল পরিবেশ না।এখানে যুদ্ধে পার্থক্য গড়বে অধিক বিশেষজ্ঞ আর্মি ট্রুপস। যাদের কাছে পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধের সব ধরনের কৌশল জানা থাকবে,তারাই এগিয়ে থাকবে। অতীতে চীনের বিরুদ্ধে আমাদের পাহাড়ি যুদ্ধের দক্ষ সেনা থাকলেও, সংখ্যার কারনে আমাদের পিছিয়ে আসতে হয়। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা, এখন সংখ্যাতে ভারতবর্ষ চীনাদের সমান সমান, কিন্তু দক্ষতায় তাদের থেকে বেশ কয়েককদম এগিয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *