ঈর্ষা এবং নিন্দা জাতীয় মনোভাব দূরে রাখতে যা করবেন
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: চলমান এই জীবনে দিনের বেশিরভাগ সময়ই কাটে নিজ নিজ কর্মস্থলে।তাই আপনার দিনটি কেমন যাবে তার বেশির ভাগ টাই নির্ভর করে সেই স্থানের চারপাশের পরিবেশের উপর।সুতরাং সহকর্মীদেরর সঙ্গে সদভাব রাখা টা ভীষণ জরুরী। এর পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে নিজের সৃজনশীলতা এবং আস্থা গড়ে তোলার জন্য সহকর্মীর সহযোগিতা খুব ই মূল্যবান। সুতরাং কর্মক্ষেত্রে নিজের অবস্থান মজবুত রাখতে সহকর্মীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা আবশ্যক।শুধু তাই নয় কর্মক্ষেত্রে এই সুসম্পর্ক যেমন এনে দেবে মানসিক শান্তি তেমন কাজের প্রতি ও জোগাবে উৎসাহ এবং উদ্দীপনা। যা বাড়িয়ে দেবে আপনার মানশিক শক্তি কেও।
তাই কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সঙ্গে সু সম্পর্ক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আপনাকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।
সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব থাকা আবশ্যক
আপনি যদি সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চান তবে আপনাকে অবশ্যই সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব রাখতে হবে।কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর বিপদে কিংবা সমস্যায় পড়লে অবশ্যই এগিয়ে আসুন এবং তা থেকে উদ্ধার হতে তাকে সহযোগিতা করুন।আপনার করা আজকের এই ছোট্ট সহযোগিতাই হয়তো ভবিষ্যতে আপনার কোনো বড়ো বিপদের দিনে সমাধান এর চাবিকাঠি এনে দেবে। কারণ পারস্পারিক সহযোগিতাই গড়ে তোলে সুসম্পর্ক।
প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব এড়িয়ে চলুন সর্বদা
সহকর্মীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখার অন্যতম চাবিকাঠি হলো প্রতিযোগিতা মূলক মনোভাব সর্বদা এড়িয়ে চলা। আপনার সহকর্মীর আপনার চেয়ে এগিয়ে যাওয়া টাকে মোটেও বাঁকা চোখে দেখবেন না,এটা কখনোই ভালো মানসিকতার পরিচয় নয়।আপনিও নিজের মত করে নিজের উন্নতির চেষ্টা অবশ্যই করবেন কিন্তু তা যেনো কখনোই প্রতিযোগিতার জন্য না হয়। প্রতিযোগিতা সর্বদা সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় এবং পাশাপাশি একটা শত্রুতার মনোভাবের জন্ম দেয়।সুতরাং নিজের দায়িত্ব নিজের মতো করে পালন করুন কোনো প্রতিযোগিতা ছাড়াই।দেখবেন আপনার উন্নতির পাশাপাশি সম্পর্কও মজবুত থাকবে,সহকর্মী ও খুশি থাকবেন।
ঈর্ষা এবং নিন্দা জাতীয় মনোভাব দূরে রাখুন
সহকর্মীর সাফল্য তে আপনিও খুশি হতে শিখুন এবং তাকে আরো উৎসাহিত করুন। পাশাপাশি তিনি যে বিষয়ে পারদর্শী সেটা তার কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করুন দেখবেন তার সাথে আন্তরিকতা বেড়েছে বই কমেনি।
এর পাশাপাশি আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো তার কোনো বিষয় খারাপ লাগলে আপনি পেছনে তার নিন্দা না করে সরাসরি তাকে জানান।এতে সম্পর্কে বিশ্বাস বাড়ে।
তোষামোদ ছাড়ুন প্রশংসা করুন
সহকর্মীর গুন গুলোর প্রশংসা করুন কিন্তু কখনোই তোষামোদ করবেন না।ভালো কাজের প্রশংসা করুন,তার থেকে সেটা শেখার চেষ্টা করুন।তোষামোদ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।অন্যের কাজ কে ছোট করা কিংবা নিজের বলে চালানোয় সম্পর্ক নষ্টের পাশাপাশি আপনার নিন্ম মানসিকতার পরিচয় দেয়। তাই প্রশংসা করুন কিন্তু কখনোই তোষামোদ করে ছোটো মনের পরিচয় দেবেন না।
অফিস রাজনীতি বা অফিস পলিটিক্স সহকর্মীর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ায়। সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চাইলে তা বজায় রাখুন।এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন,অন্যকে ছোট করে নিজে কখনো বড়ো হওয়া যায় না।অন্যের ক্ষতি ভবিষ্যতে উল্টো তির হয়ে আপনাকে এসেই বিঁধতে পারে। সুতরাং অফিস রাজনীতি বর্জন করে আন্তরিকতার সম্পর্ক গড়ুন।
বিশেষ দিনগুলো ভুলবেন না
সহকর্মীদের বিশেষ বিশেষ দিন গুলো ভুলবেন না। যেমন জন্মদিনে কিংবা অ্যানিভার্সারি তে উইশ করুন, সঙ্গে ছোট্ট একটা উপহার,কার্ড বা ফুল দিন। দেখবেন সহকর্মী সত্যিই খুশি হবেন।এবং তার সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক হয় কেউ আটকে রাখতে পারবে না।
ইতিবাচক আড্ডা হোক
একটানা কাজের ফাঁকে মন এবং শরীর দুটোই যখন একটু বিরাম চায়, সেই ফাঁকে আপনি আপনার সহকর্মীকে নিয়ে এক কাপ চা বা কফি খেতে যেতেই পারেন।যা মানসিক শান্তির পাশাপাশি কিছুটা এনার্জি ও এনে দেবে। সহকর্মীর সঙ্গে ইতিবাচক আড্ডা বা কুশল বিনিময় সম্পর্কের প্রফুল্লতা ও বাড়ায়।এর পাশাপাশি কাজের স্পৃহা ও বাড়িয়ে তোলে।সব মিলিয়ে ইতিবাচক আড্ডা সম্পর্ক কে যেমন সহজ করে তেমন সম্পর্কও ভালো রাখে।
ব্যক্তিগত বিষয়গুলির আলোচনা থেকে বিরত থাকুন
কর্মস্থলে নিজের পাশাপাশি অন্যের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো আলোচনা থেকে বিরত থাকুন।কাজের জায়গায় কাজ নিয়ে থাকুন,সেখানে ব্যক্তিগত বিষয় যত এড়িয়ে চলবেন ততই মঙ্গল। সম্পর্কের গভীরতা অনুযায়ী ব্যক্তিগত জীবনের খোঁজ খবর রাখতেই পারেন।তবে অযথা অন্যের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় গুলি নিয়ে অযথা আগ্রহ না দেখানোই ভালো।
