অতিরিক্ত গরমে ভালোভাবে ঘুমাতে যে নিয়ম গুলি মেনে চলা উচিৎ
নিজস্ব সংবাদদাতা: অতিরিক্ত গরমে ঘুমানো একটা দুঃসাধ্য বিষয়।অতিরিক্ত গরমে কারোরই ঘুম আসতে চায় না। এই সময় ঘুমানো খুবই অস্বস্তিকর একটা ব্যাপার। বিশেষ করে রাতের সময় ঘুমানো খুবই কষ্টকর। সারাদিনের গরমে মস্তিষ্ক এমনিই উত্তপ্ত হয়ে থাকে এবং এর পাশাপাশি গরম আবহাওয়ার প্রভাব গিয়ে পড়ে ঘুমের উপরে।
এইসময় একটু আরাম পেতে অনেকেই মেঝেতে চাদর বা মাদুর পেতে শুয়ে থাকেন। কিন্তু মাঝে মাঝে তাতেও কাজ হয় না কোনো। সাধারণত ঘুমানোর জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হল ১৬ থেকে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই এর বেশি তাপমাত্রা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।আমাদের স্বাস্থের জন্য নিশ্চিন্তের ঘুম ভীষণ প্রয়োজনীয়।বিশেষ করে রাতের ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।শারীরিক এবং মানসিক উভয় এর সুস্থতার পিছনেই ঘুমের ভূমিকা অপরিসীম। এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের ঘুম ঠিকমতো না হলে মস্তিষ্কের চাপ বেড়ে যায়। যার প্রভাবে মানসিক এবং শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।সুতরাং শরীর এবং মন কে সুস্থ রাখতে ঘুমের খেয়াল রাখা জরুরী।
অতিরিক্ত গরমে আরামে ঘুমানোর ২০টি উপায় রইলো
* আপনার বিছানার বেডিং কয়েক মিনিটের জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ফ্রিজে বেডিং রাখতে না চাইলে শুধুমাত্র বালিশগুলোও ফ্রিজে রাখতে পারেন।
*ওয়াটার ব্যাগ বা হটপট ব্যাগে ঠাণ্ডা জল ভর্তি করে আপনার শরীরের শীতলকরণ অংশ যেমন: হাঁটু, গোড়ালি, কবজি, ঘাড়, কুঁচকি এবং কনুইয়ে লাগান।এটি আপনাকে স্বল্পসময়ের জন্য হলেও আরাম দেবে। আপনি ঠান্ডা জল ভর্তি হট ব্যাগ বিছানায় সঙ্গে করে নিয়েও ঘুমাতে পারেন।
* ফ্রিজে রাখা অ্যালোভেরা সমৃদ্ধ ক্রিম ঘুমানোর আগে শরীরে লাগাতে পারেন। এতে অতিরিক্ত গরমে আপনার শরীর ঠান্ডা থাকবে।
* খালি হয়ে যাওয়া পারফিউমের বোতলে ফ্রিজের ঠান্ডা জল ভরে রাখুন এবং আপনার বিছানায় সেটা রেখে দিন। মাঝে মধ্যে আপনি সেই বোতল থেকে আপনার চেহারায়, ঘাড়ে এবং হাঁটুর পেছনের ভাঁজে জল স্প্রে করুন। আরাম পাবেন।
* সুতি কাপড়ের পাতলা পোষাক পড়ুন ঘুমানোর সময়। আপনার বিছানার চাদর, বেডিং, বালিশের কভার গুলিও সুতি কাপরের তৈরি হলে ভালো হয়।
* গরমের দিনে প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি না খাওয়াই ভালো। কেননা প্রোটিন হজম হতে গেলে শরীরে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় যার ফলে গরম লাগাটাই স্বাভাবিক।
* মশলাযুক্ত খাবার খেলে তা ঘুমানোর কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা আগে খাবেন।তাহলে প্রচুর ঘাম বের হয়ে শরীর ঠান্ডা হয়ে যাবে। ফলে আপনি শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন।
* গরমের দিনে শরীরচর্চা সকালে করুন, বিকালে বা সন্ধ্যায় নয়।কারণ বিকালে বা সন্ধ্যায় শরীরচর্চার ফলে শরীর খুব উত্তপ্ত হয়।
* শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সন্ধ্যায় আরেকবার স্নান করুন।তবে বরফশীতল জলে ভুল করেও স্নান করবেন না। কেননা হুট করে অতিরিক্ত ঠান্ডা জল থেকে আপনার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
* দিনের বেলায় ঘরের সব জানালা বন্ধ রাখুন। এতে ঘর ঠান্ডা থাকবে। জানালায় পর্দা থাকলে তা নামিয়ে রাখুন।
* শোয়ার ঘরে থাকা সকল বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা উত্তাপ তৈরি করে তা বন্ধ রাখুন।
* আপনার পায়ের তলা ঠান্ডা রাখুন দেখবেন গরম কম লাগছে। খালি পায়ে থাকার চেষ্টা করুন অথবা পায়ের তলায় বরফ লাগান।
* বড় একটা পাত্রে বরফ রেখে তা ফ্যানের সামনে রেখে দিন। এতে ফ্যানের হাওয়া ঠান্ডা হবে।
* গরমের সময় দিনে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন। তবে রাতে বেশি জল খাবেন না। রাতে ঘুমানোর আগে আধ গ্লাস জল আপনার সারারাতের জলের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। রাতে জল বেশি পান করলে তা প্রস্রাবের চাপ সৃষ্টি করবে এবং ঘুম নষ্ট করবে।
* একা একটি বিছানায় ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এক বিছানায় দুইজন বা তার বেশি থাকলে বেশি তাপ উৎপন্ন হয়,ফলে বেশি গরম লাগে।
* বেশি গরম লাগলে মেঝেতে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
* জলে ভেজানো মোজা বা ডাম্প টি-শার্ট পরে ঘুমানো বিষয়টি বেশ আরামদায়ক হতে পারে।
* ঘুমানোর আগে আপনার হাত এবং পায়ের তালু ঠাণ্ডা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।এতে আরাম পাবেন।
* রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায় তাহলে মেনথলের কোনো ক্রিম বা লোশন আপনার কপালে ঘষে নিন। এতে আপনি ঠান্ডা অনুভব করবেন।
* মাঝারি সাইজের এক টুকরা ভেজা ফ্লানেল কাপড় অন্তত এক ঘণ্টার জন্য ফ্রিজে রেখে দিন। ঘুমানোর সময় তা আপনার কপালে জড়িয়ে ঘুমান ।এটি আপনাকে দিতে পারে কিছুটা শান্তি।