অফবিট

পৃথিবীর কোনও দেশের রাজধানী নির্বাচন কিভাবে হয় জানেন?

নিউজ ডেস্ক – ভূগোল প্রেমীরা সমস্ত ভৌগোলিক স্থান পর্যবেক্ষণ করে দেখেন কোথাও কোন আধিপত্য বিস্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করাও তাদের কাজের একটি অংশ। ভূগোলে ছোটবেলা থেকেই সকলে পড়ে জানেন কোনটা দেশ কোনটা রাজ্য কোনটা রাজধানী ইত্যাদি। তবে কেউ কি এটা একবারও জেনেছেন যে রাজধানী কিভাবে নির্ণয় করা হয়। কেন প্রত্যেকটি দেশের একটি করে রাজধানী রয়েছে! সিংহভাগ মানুষের আয় এই বিষয়ে অবগত নন। তাহলে আসুন রাজধানী কেন নির্ণয় করা হয় তার একটি ছোটখাটো গল্প বলা যাক।

রাজধানীকে মূলত ইংরেজি ভাষায় ক্যাপিটাল বলা হয়। ক্যাপিটাল শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ক্যাপিতালাইজ থেকে। যার অর্থ মুখ্য বা শীর্ষ। অর্থাৎ যে শহর গুলি শীর্ষ বা ভৌগোলিক স্থান অনুযায়ী শীর্ষ সেই শহরগুলিকে  রাজধানী হিসেবে ঘোষণা করেছেন সরকার। তবে শুধু একটি কারণ নয় এর পেছনে বহু কারণ রয়েছে তার মধ্যে আর কয়েক গুলি কারণ হলো  কেন্দ্রীয় সরকারের বেশিরভাগ শীর্ষ দফতর অফিস-কাছারি এই সবই মূলত অবস্থিত হয় এই রাজধানীতেই। পাশাপাশি এই রাজাধানী অঞ্চলগুলি কিন্তু ঐতিহাসিক দিক থেকেও অনেক গুরুত্ব লাভ করে থাকে। অন্যদিকে আবার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন যুক্ত শহরকেও রাজধানীতে পরিণত করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় সীমান্তবর্তী অঞ্চল গুলিকে প্রশাসনিক দিক থেকে মজবুত করতে এসে এই সমস্ত জায়গা কেউ রাজধানী করা হয়। 

অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরা নির্বাচিত হয়েছিল রাজনৈতিক আপসের মধ্যে দিয়েই। অস্ট্রেলায়ার দুই শহর মেলবোর্নের সঙ্গে সিডনির মধ্যে বিরোধের কারণেই ক্যানবেরাকে বেছে নেওয়া হয়, যদিও অনেকের দাবি এই রাজধানী নির্বাচনের নেপথ্যে অন্য অনেক কারণও রয়েছে। পাশপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার পরও রাজধানী নির্বাচন নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। আলেক্সান্ডার হ্যামিলটন রাজধানীকে উত্তরের দিকে করতে চাইলে, অপরদিকে টমাস জেফারসন এবং জেমস ম্যাডিসন এই চেয়েছিলেন রাজধানী হোক দক্ষিণে। এরপর জর্জ ওয়াশিংটন নদীর কাছে রাজধানীর স্থান নির্বাচন করেন। এরপর তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই রাজধানির নামকরণ হয় ওয়শিংটন ডিসি। 

অন্য একটি দেশ স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের কথায় আসা যাক। ষোড়শ শতকে মাদ্রিদ কিন্তু শহর হিসাবে আলাদা কোনও গুরুত্ব ছিল না। সেখানকার জনসংখ্যাও খুব কম ছিল। সেইসময়ে রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ একটি খালি প্রাসাদে থাকতে শুরু করেন, যার ফলস্বরূপ স্পেনের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্যকলাপও মাদ্রিদ থেকে পরিচজালিত হতে থাকে। এর প্রায় ৪০০ বছর পর মাদ্রিদ রাজধানীর স্বীকৃতি পায়।১৯৯৭ সালে কাজাকস্তানের রাজধানী হিসাবে নির্বাচন করা হয় আস্তানা-কে। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নুরসুলতান নাজারবায়েভের ইচ্ছেতেই একে রাজধানী হিসাবে নির্বাচন করা হয়। তবে এই শহরের আগের নাম ছিল আকমলা, যার আক্ষরিক অর্থ হল সাদা কবর, আর সেই কারণেই এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আস্তানা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *